Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শ্রীলঙ্কায় মুসলিম-বিদ্বেষী ভিক্ষুর জেল, স্বাধীন বিচারব্যবস্থার বিজয়

| প্রকাশের সময় : ১৯ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : শ্রীলঙ্কার কট্টর জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সংগঠন বুদু বালা সেনা (বিবিএস)’র সাধারণ সম্পাদক গালাগোদা আত্থে গুনাসারা থেরোকে গত ১৪ জুন ছয় মাসের সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ফৌজদারি অপরাধ করা ও আদালত অবমাননার দায়ে তাকে এই দন্ড দেয়া হয়। তার বিরুদ্ধে নিখোঁজ সাংবাদিক প্রাগিথা একনেলিগোদার স্ত্রী সানদিয়া একনেলিগোদাকে ভীতি প্রদর্শন ও আদালত অবমাননার অভিযোগে তাকে ছয় মাস করে কারাদন্ড দেয়া হয়। তবে দুটি সাজাই একসঙ্গে খাটতে হবে তাকে। হোমাগামার মুখ্য মেজিস্ট্রেট উদেশ রানাতুঙ্গা এই রায় দেন।
গুনাসারা থেরোর উষ্কানিমূলক বর্ণবাদি বক্তব্যের কারণে ২০১৪ সালের মাঝামাঝি শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ মুসলিম বিরোধী দাঙ্গা দেখা দেয়া বলে অভিযোগ রয়েছে। কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়নি বলেও অভিযোগ ছিলো। গুনাসারা নিজেকে বৌদ্ধ ধর্মের রক্ষক দাবি করে। তার দৃষ্টিতে শ্রীলঙ্কা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কিছু হচ্ছে এমন ক্ষেত্রে মানবাধিকার লংঘনে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
মাহেন্দা রাজাপাকসার আমলে ২০১০ সালে কার্টুনিস্ট একনেলিগোদা নিখোঁজ হন। এর পেছনে সামরিক গোয়েন্দাদের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। এই ঘটনার পর একনেলিগোদার স্ত্রী’র প্রতি চরম অবমাননাকর ভাষায় মন্তব্য ও হুমকি-ধমকি দিতে থাকেন গুনাসারা।
আদালত তাকে আরো ৫০ হাজার রূপি ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে। তা দিতে ব্যর্থ হলে তাকে আরো ৩ মাস কারাভোগ করতে হবে। মজার ব্যাপার হলো গুনাসারা আদালতে তার কর্মকাÐের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরতে গিয়ে শুধু এলটিটিই’র বিরুদ্ধে সরকার ও সেনাবাহিনীর আত্মত্যাগের কাহিনী তুলে ধরেন। তিনি হয়তো ভেবেছিলেন এ ধরনের আবেগী বক্তব্য হয়তো তার কাজকে যৌক্তিক প্রমাণ করবে। অথচ এর সঙ্গে একনেলিগোদা মামলার কোন সম্পর্ক নেই। শুনানিকালে তিনি প্রকাশ্য আদালতেও একনেলিগোদা’র স্ত্রী ও আইনজীবীদের প্রতি অবমাননাকর ভাষা ব্যবহার করেন। ভিক্ষুর এই দÐকে সাধারণভাবে শ্রীলঙ্কায় গণতন্ত্রের বিকাশ ও বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতা হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে, শুধু কারদন্ড দিয়ে এই ভিক্ষুকে আইন, ন্যায়বিচার ও শালিনতা শেখানো যাবে কিনা তা নিয়ে অনেকের সন্দেহ আছে।
হোমাগামা মেজিস্ট্রেট ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে প্রথম গুনাসারাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন। ৯ ফেব্রæয়ারি তাকে জামিনে মুক্তি দেয়া হয়। এরপর সাংবাদ মাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি দেশের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করার ঘোষণা দেন। সত্য কথা হলে গুনাসারা বৌদ্ধ ধর্মের একেবারে ভিত্তিটিকেই পুরোপুরি নষ্ট করে দিচ্ছেন। তার কিছু অর্জন যদি থেকে থাকে তাহলো শ্রীলঙ্কার বৌদ্ধবাদের ভাবমূর্তি ধ্বংস ও মুসলিম স¤প্রদায়ের সঙ্গে নতুন করে সংঘাত সৃষ্টি।
এই বৌদ্ধভিক্ষুর উষ্কানিমূলক বক্তব্যের কারণে ২০১৪ সালে ক্ষমতাধর প্রতিরক্ষা সচিব গোতাবায়া রাজাপাসা (সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসার ছোটভাই)’র আমলে আলুথগামায় মুসলিম বিরোধী দাঙ্গা দেখা দেখা। সিনহুলি বৌদ্ধ উশৃঙ্খল জনতা মুসলমানদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়, লুটপাট করে। সূত্র : এসএএম।



 

Show all comments
  • ইমরান ১৯ জুন, ২০১৮, ৩:৪১ এএম says : 0
    আদালত কে ধন্যবাদ জানাচ্ছি
    Total Reply(0) Reply
  • ফজলুল হক ১৯ জুন, ২০১৮, ৩:৪২ এএম says : 0
    এই ধরনের বিচার সারাবিশ্বের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে
    Total Reply(0) Reply
  • Shahjalal Khan ১৯ জুন, ২০১৮, ৩:২৫ পিএম says : 0
    thanks justice
    Total Reply(0) Reply
  • Mostafa Kamal ১৯ জুন, ২০১৮, ৩:২৬ পিএম says : 0
    He deserve to rot in jail
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Manik ১৯ জুন, ২০১৮, ৩:২৬ পিএম says : 0
    Alhumdulillah
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শ্রীলঙ্কা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ