স্বতন্ত্র উৎসব ঈদ
এল ঈদুল ফিতর, এল ঈদ ঈদ ঈদসারা বছর যে ঈদের আশায় ছিল নাক’ নিদ। হ্যাঁ, সুদীর্ঘ
আমি আজ যেখানে বসে আছি, সেখান থেকে হিমালয়কে খুব স্পষ্ট করে দেখা যায়।
আমরা হিলটাউন পুখরার অভিজাত হোটেল ‘ক্রিস্টাল’ এ এসে উঠেছি আজ কদিন হলো। আমরা অর্থাৎ আমি এবং আমার স্বামী মারুফ। বাংলাদেশের বিখ্যাত সাইক্রিয়াটিস্ট এবং আমার স্বামীর মতে, আমি অসুস্থ। তাই হাওয়া বদলাতে দেশের বাইরে এই পাহাড়ের দেশে আসা।
এখন জোছনা রাত। প্রশস্ত লনের চমৎকার ইজি চেয়ারে বসে আমি মুগ্ধ। বিমোহিত। জীবন আমার ধন্য।
আমার দু-চোখজুড়ে এখন শুধু তুষারধবল হিমালয়। জোছনা প্লাবিত হিমালয়। মেঘমালার মতো হিমালয়।
ওই যে সব চেয়ে উঁচু যে শৃঙ্গটা দেখা যাচ্ছে, ওটাই কি তবে কাঞ্চনজংঘা? বইয়ে পড়েছি। ছবিতে দেখেছি। কিন্তু ভাবতে অবাক লাগে যে, অসুস্থতা আজ আমায় একেবারে হিমালয়ের পাদদেশে এনে পৌঁছে দিয়েছে।
চারদিকের গাছপালার ছায়াময় অবস্থান, শিরশিরে বাতাস, থমথমে অভিমানের মতো, ঢলঢলে চাঁদের গতিহীন উপস্থিতি বুকের ভেতরটায় কেমন যেন ব্যথা অনুভব করিয়ে দেয়।
মনে পড়ল একসময় ভালো আবৃত্তি করতাম।
গজল কিংবা ঠুংরি শুনতে শুনতে বিভোর হয়ে যেতাম। চালাঘরের টিনশেড়ে অথবা গাছের পাতায় বৃষ্টির নুপুর আমায় ঘুম পাড়িয়ে দিত। বুকের ভেতরটায় কেমন কাঁপন লাগত ফাল্গুনী হাওয়ায় ইষৎ ঝটকায়। আমি ভেবে পাই না কেন এমন হয়? সবারই কি এমন হয়?
একটু আগেই একটা জরুরি টেলিফোন করতে লন থেকে উঠে হোটেলের ভেতরে গেছে মারুফ।
এতক্ষণ আমার পাশেই বসেছিল।
এই জোছনা প্লাবিত নিস্তব্ধতায় আমার পান্ডুর হাতটি হাতের মুঠোয় ধরে বসেছিল হিমালয়কে সামনে রেখে।
আমি কোনো কথা বলতে পারছিলাম না। আমার সমস্ত ইন্দ্রিয় ছাপিয়ে একটা প্রচন্ড কিছু যেন ছুটে আসছিল।
বহু কষ্টে প্রাণপণ শক্তিতে সেই ছুটে আসা স্রোতকে সামলাতে চেষ্টা করছিলাম।
দাঁত দিয়ে বাঁ-হাতের আঙুলটা কামড়ে ধরেছিলাম অজান্তে। আমার অপর হাতটি মারুফের হাতের মুঠোয়।
কিছু নয়, মাত্র আর কিছুদিন আগেও যদি এই হাতের স্পর্শ পেতাম এমনি করে, যদি এমনি করে পাশে এসে একটু বসত ও...
তাহলে হয়তো কোনোদিনই আমাকে অন্তত হাওয়ার বদলের জন্য দেশের বাইরে আসতে হতো না। কাঠমান্ডু থেকে পুখরা চড়াই-উৎরাই করে প্রায় সাত ঘণ্টার পথ। এই সাত ঘণ্টায় আমার দুটো চোখ যা দেখেছে- যতটুকুন চোখ আর মনের সংরক্ষণশালায় ধরে রাখার চেষ্টা করেছি- তা যেন কোনো মহাকাব্য হয়ে যাওয়ার স্পর্ধা রাখে। বারবার ভেবেছি, এই পথ যেন কোনোদিন শেষ না হয়। স্বামীর পাশে বসে আমি যেন এক অনন্ত যাত্রার সঙ্গিনী...।
পাহাড়ের পর পাহাড়... মেঘের পার মেঘ... আর আকাশের পর আকাশ। পাথরের নুড়ি ভেঙে ভেঙে বয়ে যাওয়া খরস্রোতা নদী আর জলপ্রপাত। এ যেন এই পৃথিবীর কোনো লোকালয় নয়। যেন জীবন থেকে নিয়ে পরম নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাওয়ার কোনো পথ।
সেই পথ অতিক্রম করে পুখরার মতো স্বপ্নলোকে এলাম আমি। এলাম একেবারে হিমালয়ের কাছাকাছি।
একটু পরেই টেলিফোনে কথা সেরে আবার লনে এসে বসল মারুফ। একসময় বলল।
ঘুম পাচ্ছে? ভেতরে যাবে?
একটা দীর্ঘশ্বাস চাপতে চাপতে বললাম-
আর একটু বসি? বড় ভালো লাগছে এইখানটায়।
মারুফ বলল, বেশ। আবার হাতটা তুলে নিলো নিজের হাতের মুঠোয়। আমি মুখ ঘুরিয়ে কান্না লুকানোর চেষ্টা করলাম।
সকল ব্যস্ততা উপেক্ষা করে আমার স্বামী আজ আমার এত কাছে বসে আছে। আর প্রতি মুহূর্তে আমার মনে হচ্ছে, আমি অসুস্থ। স্বাভাবিক জীবনের বাইরে এসে আমি দাঁড়িয়েছি। আমার স্বামীর প্রাচুর্যের অভাব নেই। ছিলও না কোনোদিন। যে জিনিসটার অভাব ছিল, তা হলো সময়। কেমন করে একটা মেয়ে সংসারে ঢুকে সাত-সাতটা বছর পার করে দিলো একেবারে একা... নিঃসঙ্গভাবে... এটা ভাবার অবকাশ ছিল না ওর। দিনের পর দিন আমিও যেন কেমন বদলে যেতে লাগলাম।
মারুফের ভাই সম্পর্কের কয়েকজন উঠতি তরুণ ব্যবসায়ী ঠাট্টার সম্পর্ক ধরে আমাকে প্রায়ই উত্যক্ত করত।
আমি না বোঝার ভান করে এড়িয়ে যেতাম। ওকে বলার সুযোগ খুঁজতাম। একদিন সাহস করে বলেও ফেললাম, হেসে কথাটা একেবারে উড়িয়ে দিলো মারুফ।
বলল-
: একলা ঘরে মানুষ হয়েছ তো? এ জন্যই বড় পরিবার সম্পর্কে তোমার ধারণাটা এখনো অস্পষ্ট রয়ে গেছে। ঠাট্টার সম্পর্কের আত্মীয়-স্বজন থাকলে এসব সহ্য করতেই হবে। টেক ইট ইজি।
আমি আর কিছু বলার আগেই ও ব্যস্ত হয়ে পাশের ঘরে চলে গেল। আমি যেন হঠাৎ করে আরো নিঃসঙ্গ হয়ে পড়লাম।
শৈশবে মাতৃহীন হয়ে, অধ্যাপক আত্মভোলা বাবার আদর্শে বেড়ে ওঠা আমার জীবন গড়ে উঠেছিল একেবারে অন্যভাবে। সংসারের অনেক বাস্তবতার সাথেই আমার পরিচয় ঘটেনি। আমার বিয়ের কথাবার্তা পাকা হওয়ার পর বাবা কিছু কিছু কথা আমায় বলতেন। বলতেন-
: জন্মের পর মানুষ যে পৃথিবীতে আসে সে পৃথিবীতে তার পথচলার সঙ্গী থাকে মা-বাবা, ভাইবোন ইত্যাদি। পথ কখনো একা চলা যায় না। কারো না কারো সাথে তাকে অতিক্রম করতেই হয়। আর সেই পথ অতিক্রম করার জন্য মানুষের দ্বিতীয় জীবন, অর্থাৎ বিবাহিত জীবনে দরকার হয় একজন খাঁটি বন্ধুর মতো যে আগে কিংবা পেছনে নয়, পাশেপাশে থেকে একজন খাঁটি বন্ধুর মতো যে নাকি হাতে হাত ধরে ভালোবাসার সাঁকোয় চড়ে পুরো জীবন অতিক্রম করতে সাহায্য করে।
বাবার মুখের এসব কথা শুনতে শুনতে ভাবতাম, আমার মা বড় ভাগ্যবতী ছিলেন। তা নইলে এমন ঋষির মতো মানুষের স্ত্রী হতে পারেন! এই ভালোবাসার সুখ কি স্বর্গেও আছে? আর এই ভালোবাসার ঘরেই আমার জন্ম। বড় পরিবারেই না হই, বড় ঘরের মেয়ে তো ছিলাম। কোনোরকম অবাঞ্ছিত কথা বা চটুলতার সাথে পরিচয় হয়নি কখনো। ঠাট্টার সম্পর্ক যে নোঙরামির পর্যায়ে পড়ে সেটাও জানা ছিল না। কপটতা, কলুষতা আর হিংসা বিবাদের বীজ অঙ্কুরিত হয়নি কখনো মনে। সাদাসিধে বাবার স্নেহে ছায়ায় থেকে, ফুল, পাখি-কবিতা আর সুরের লহরি দিয়ে তৈরি করে নিয়েছিলাম গোপন বায়ুমন্ডল। সেখানে অবাঞ্ছিত কিছু আসবার পথই বা কোথায়?
আমার স্বামী আমার বাবার একলা ঘরই দেখেছে। কিন্তু সেই ঘরের অভ্যন্তরে শামুকের সেই মুক্তোটি খুঁজে বের করতে পারেনি। আর তা ছাড়া তার সময়ই বা কোথায়।
কোনো কিছুকে জানার জন্যে, বোঝার জন্য, অনুভব করার জন্য সময়ের দরকার। কর্মচক্ষুর আড়ালে তৃতীয় নয়নের প্রয়োজন। মারুফ দেশের একজন ব্যস্ত এবং নামী-দামি ব্যক্তিত্ব। এসব সস্তা সেন্টিমেন্টের কথা বা খবর তার জানার কথা নয়।
দিন দিন আমার ভয় বেড়ে যেতে লাগল। এরই মধ্যে একদিন রাজীব নামের দেবরটি এলো বাড়িতে। বয়সে আমার স্বামীর দু’দিনের ছোট। নাম ধরেই ডাকত ওরা। সুন্দর সুঠাম স্বাস্থ্য। শুনেছি বিদেশে এক মেম বিয়ে করেছিল। বছর খানেকের মধ্যে আবার ডিভোর্সও হয়ে গেছে।
রাজীবের সামনে আমি এমনিতেই একটু কম যেতাম। কিন্তু মারুফ বলল, রাজীব শুধু আমার কাজীনই নয়, বন্ধুও বটে। এমন কি লন্ডনে আমাদের দু’জনের একটাই গার্লফেন্ড ছিল। বলে হো হো করে হাসল মারুফ। হাসল রাজীবও। আমার বুকের ভেতরটায় কেন যেন ব্যথা অনুভব করলাম। সেই রাজীব একদিন এলো সন্ধ্যায় মারুফ বাড়ি ছিল না।
ড্রইংরুমের দরজা খুলে দিয়ে, বসতে বলে ভেতরে যাচ্ছিলাম। এমনি সময় আমার হাত ধরে ফেলল রাজীব। আমি অপ্রস্তুত হয়ে হাত ছাড়িয়ে নিতে গেলাম। বললাম-
: একি করছো ?
রাজীব আমার চোখে চোখ রেখে বলল-
: আই লাভ ইউ। আই লাভ ইউ নিমা। তোমাকে ভালো না বেসে থাকা যায় না।
: রাজীব, হাত ছাড়ো, প্লিজ! এসব ঠাট্টা আমার ভালো লাগে না। রাজীব এক ঝটকায় আমাকে ওর পাশে বসিয়ে দিলো।
বলল-
: ঠাট্টা নয়। বিশ্বাস করো। তোমাকে দেখলে আমি পাগল হয়ে যাই মারুফকে হিংসে হয়।
: রাজীব-
ও আমাকে কাছে আকর্ষণ করল। বলল-
: এত কৃপণ কেন তুমি?
আমার ভেতরটা তখন ফুঁসছে। জোর করে উঠে দাঁড়িয়ে দরজার দিকে এগিয়ে গেলাম।
দৃঢ় কণ্ঠে বললাম-
: চলে যাও এখান থেকে, প্লিজ।
রাজীব উঠে এসে দাঁড়াল আমার মুখোমুখি। বলল-
: তাড়িয়ে দিচ্ছ?
চাপা কণ্ঠে বললাম-
: হ্যাঁ।
: আমি তোমার একজন আত্মীয়। সুপুরুষ-ব্যাচেলর। মারুফের সাথে আমার সম্পর্কের কথা তুমি জানো। আমার চাওয়াটা কি খুব অন্যায় হয়েছে? রাজীবের জঘন্য কথার আমি আর কোনো উত্তর দিতে পারলাম না।
আপনা থেকেই আমার ডান হাতে রাজীবের গালে এক চড় বসিয়ে দিলাম।
এমনি সময় ঘরে ঢুকল মারুফ। ঘটনার মুখোমুখি হয়ে ও একেবারে হতভম্ব হয়ে গেল। তারপর ক্রুব্ধ কণ্ঠে বলল-
: এসব কি হচ্ছে? রাগে-দুঃখে আর অপমানে আমি মুখ ঘুরিয়ে নিলাম। কোনো কথা বলতে পারলাম না। রাজীব চট করে কৃত্রিম হেসে বলল-
: এসেছিলাম তোমাকে ওই টেন্ডারের খবরটা দিতে। কথায় কথায় নিমাকে একটু ঠাট্টা করেছিলাম। আর তাই- রাজীবের কথা শেষ হওয়ার আগেই আমার মুখোমুখি হলো মারুফ। আমি চোখ তুলে তাকালাম ওর দিকে।
দাঁতে দাঁত চাপল মারুফ। আর দু-চোখে ক্রোধের আগুন ঝরিয়ে সজোরে চড় মারল আমার গালে। আমি স্থির-অবিচল হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম ঘরের মাঝখানটায়। কোনো প্রতিবাদ করতে পারলাম না। কখন ওরা দু’জন ঘর ছেড়ে চলে গেছে টেরই পাইনি। রাজীব যেন মারুফকে তিরস্কার করে কি একটা বলেছিল। ঠিক শুনতে পাইনি আমি। একসময় আমি আমার ঘরে এসে দাঁড়ালাম।
এরপর থেকে আমি আমার বায়ুমন্ডলের পরিধি গুটিয়ে আনলাম। নিজের অস্তিত্বের খুব কাছাকাছি। বাবার কথাটা বারবার মনে পড়তে লাগল। জীবন সঙ্গীকে তিনি একজন খাঁটি বন্ধু বলে আমাকে বুঝিয়েছিলেন, কিন্তু কোথায় আমার সেই বন্ধু। যারে নিয়ে এই জীবনসাগর পাড়ি দেবো। আমার চারদিকের সবকিছু কেমন যেন শূন্য মনে হতে লাগল। ক্রমে ক্রমে আমার পৃথিবীর সীমারেখা দিগন্তের সমুদ্রে হারিয়ে যেতে লাগল।
আমার বই পড়া বন্ধ হয়ে গেল।
আবৃত্তি করাও।
রেডিও টিভির প্রেমের গান আমার অসহ্য মনে হতো।
আমার শুধু একলা থাকতে ভালো লাগত।
শুধুই একলা।
এমনি করে মাস ছয় কেটে গেছে। মারুফ এখন আমার দূরের মানুষ, কাছে থেকেও প্রয়োজন ছাড়া কথা হয় না দু-একটার বেশি।
ভালোবাসার ঘরে জন্ম আমার। তাই বোধ হয় বিদ্রোহ করতে পারিনি। প্রেম করে বিয়ে হয়নি। বিয়ের পরেই নিঃস্বার্থভাবে ভালোবেসেছিলাম মারুফকে।
ভালোবাসা চেয়েছিলাম। চেয়েছিলাম শান্তি। আর সে জন্যই প্রতিবাদ করতে পারিনি এত বড় অন্যায়ের।
এরই মধ্যে একদিন বারান্দায় বসেছিলাম একা।
রাজীব এলো ধীরপায়ে। এসে দাঁড়াল আমার মুখোমুখি। আমি ভয় কিংবা লজ্জা কোনোটাই পেলাম না। চোখ রাখলাম ওর চোখে। রাজীব বলল-
: স্যরি। আই অ্যাম রিয়েলি এক্সট্রিমলি স্যরি।
আমি ওর কথায় কোনো জবাব দিতে পারলাম না। দু-চোখ আমার জলে ভেসে গেল। রাজীব স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে রইল আমার মুখের দিকে। নিজেকে সামলানোর জন্য আমি চোখ বুজে নিয়েছিলাম।
এরপর আমি বোধ হয় আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম মনের দিক থেকে। বেশ ক’দিন পরপর ডাক্তার আসতে লাগল বাড়িতে। মারুফকেও মনে হলো একটু চিন্তিত। একদিন রাতে আমাকে বলল-
: আমাকে মাফ করে দিও। তোমার সাথে আমি অনেক অবিচার করেছি। রাজীব আমাকে সব বলেছে। মারুফের কথায় আমার কি কোনো ভাবান্তর হয়েছিল। চোখ দুটো কি আমার ভিজে উঠেছিল মুহূর্তের মধ্যে চিন চিন করে উঠেছিল কি বুকের ভেতরটায়...?
শুনেছিলাম ডাক্তার বলেছিল, ফিলিংসের টিস্যুগুলো নাকি আমার উইক হয়ে গেছে। এরপর থেকেই আমুল পরিবর্তন এলো মারুফের। আমাকে ভালো করার জন্য, ভালোবাসার জন্য একেবারে মরিয়া হয়ে উঠল।
ডাক্তারের পরামর্শ মতো একেবারে উড়িয়ে নিয়ে এলো পাহাড়ের দেশ নেপালে। সৌন্দর্যের লীলাভ‚মি নেপালের অনেক গল্প শুনেছি।
কাহিনী পড়েছি- ভেবেছি মনে মনে, এখানে আসার সৌভাগ্য কি কখনো হবে। অথচ আশ্চর্য।
সেই নেপালেরই একটি অংশ পুখরার জোছনা প্লাবিত লনে বসে আমি স্মৃতিচারণ করছি- আমার অপমানিত, অবহেলিত আর বিধ্বস্ত জীবনের।
চাঁদটা হেলে পড়েছে গাছপালার আড়ালে। রাত হয়ে উঠেছে আরো রহস্যময়।
আর শৃঙ্গের পর শৃঙ্গ বিস্তার করা রাজাধিরাজ হিমালয় যেন আরো বেশি গভীর আর ভাবময়।
আমি সেই ধ্যানমগ্ন রাজাধিরাজের তুষারধবল ছবি দেখতে দেখতে বোধ হয় লনের চেয়ারে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।
আমার স্বামী মারুফ আমায় ডেকে তোলেনি পরম সহানুভ‚তিতে। এই প্রথম ওর মনে বোধ হয় আমার জন্য একফোটা ভালোবাসায় শিশির জমলো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।