পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : ব্যাংকে স্কুলের শিক্ষার্থীদের জমানো টাকার পরিমাণ বাড়ছে। তারা বিভিন্ন ব্যাংকে এক হাজার ৪৪১ কোটি টাকা জমিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এ বছরের মার্চ পর্যন্ত সময়ের তথ্য নিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, এখন ব্যাংকে লেনদেন করছে ১৪ লাখ ৬১ হাজার ৮৬০ জন শিক্ষার্থী। তবে শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলের ব্যাংকে শিক্ষার্থীদের হিসাব ও টাকা জমার পরিমাণ অনেক কম। ছেলেদের তুলনায় মেয়েরাও রয়েছে পিছিয়ে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান ২০১০ সালে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তুলতে ‘স্কুল ব্যাংকিং’ কার্যক্রমের উদ্যোগ নেন। অবশ্য স্কুলের শিক্ষার্থীরা টাকা জমা রাখার সুযোগ পায় ২০১১ সাল থেকে। প্রথম বছরে স্কুল ব্যাংকিং হিসাব খোলা হয় ২৯ হাজার ৮০টি। ওই বছর বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা দেশের ব্যাংকগুলোতে ৩০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা আমানত রাখে। শুরুতে ১০ টাকা দিয়ে হিসাব খোলা হলেও পরে হিসাব খুলতে ১০০ টাকা জমা রাখতে বলা হয়। এসব হিসাব সাধারণ চলতি হিসাবে রূপান্তরের সুযোগও আছে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, ছোটবেলা থেকেই স্কুলের শিশুরা যাতে সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তোলে সেজন্য ২০১০ সালে আমরা স্কুল ব্যাংকিং প্রকল্প হাতে নিয়েছিলাম। এখন ব্যাংকের প্রতি স্কুলের শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়ছে। এর ফলে ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন হচ্ছে।’ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সঞ্চয়ী মনোভাব দেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১০ সালের ২ নভেম্বর স্কুল ব্যাংকিং বিষয়ে একটি পরিপত্র জারি করে। এরপর থেকেই স্কুল পড়ুয়াদের সঞ্চয়ে উদ্বুদ্ধ করতে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো আকর্ষণীয় মুনাফার নানা স্কিম চালু করে।
১১ থেকে ১৮ বছর বয়সী অর্থাৎ, ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির আগ্রহী ছাত্রছাত্রীরা তাদের বাবা-মা অথবা বৈধ অভিভাবকের সঙ্গে যৌথ নামে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে। মাত্র ১০০ টাকা প্রাথমিক জমা দিয়ে বাংলাদেশের বেশিরভাগ ব্যাংকের শাখায় এ হিসাব খোলা যায়। এই হিসাবে কোনও ফি বা চার্জ আরোপ করা হয় না। এমনকি ন্যূনতম স্থিতি রাখার বাধ্যবাধকতাও নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ বছরের মার্চ শেষে ১৪ লাখ ৬১ হাজার ৮৬০ জন স্কুলের ছেলেমেয়ে ব্যাংকে জমিয়েছে এক হাজার ৪৪১ কোটি টাকা। ২০১৭ সালের ৩০ জুন ৫৬টি ব্যাংকে খোলা হিসাব ছিল প্রায় ১৩ লাখ ৩৪ হাজারটি। অর্থাৎ, নয় মাসের ব্যবধানে ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা বেড়েছে এক লাখ ২৭ হাজার ৫২২টি।
এদিকে, স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংককে সঙ্গে নিয়ে দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে স্কুল ব্যাংকিং কনফারেন্স সম্পন্ন করেছে। স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের আগ্রহের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর অংশগ্রহণও। এতে ব্যাংকগুলোতে এই কার্যক্রমের আওতায় খোলা হিসাবের পাশাপাশি আমানতের পরিমাণও অব্যাহতভাবে বাড়ছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গ্রামাঞ্চলের ব্যাংক শাখার মাধ্যমে খোলা স্কুল ব্যাংকিং হিসাবের তুলনায় শহরাঞ্চলে স্কুল ব্যাকিং হিসাবের সংখ্যা প্রায় ৫৮ দশমিক ৫৯ শতাংশ বেশি। গ্রামাঞ্চলের তুলনায় শহরাঞ্চলের ব্যাংকে জমার পরিমাণও প্রায় ২২০ শতাংশ বেশি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছরের মার্চ পর্যন্ত আট লাখ ৪৭ হাজার ৭৯০ জন স্কুলছাত্র তাদের ব্যাংক হিসাবে ৭৮৯ কোটি ১৬ লাখ টাকা জমিয়েছে। আর ৬ লাখ ১৪ হাজার ৭০ জন স্কুলছাত্রী জমিয়েছে ৬৫২ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। মার্চ পর্যন্ত গ্রামের পাঁচ লাখ ৬৫ হাজার ৩১১ জন শিক্ষার্থী বিভিন্ন ব্যাংকে ৩৪৩ কোটি টাকা জমা রেখেছে। শহরের ৮ লাখ ৯৬ হাজার ৫৪৯ জন শিক্ষার্থী জমা করেছে এক হাজার ৯৮ কোটি টাকা।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে ৯ লাখ ৯৩৬ জন স্কুলশিক্ষার্থী জমা করেছে এক হাজার ২২৯ কোটি টাকা। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি দুই লাখ ৩৯ হাজার ৮৪১টি হিসাব খোলা হয়েছে ইসলামী ব্যাংকে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে চার লাখ ২৮ হাজার শিক্ষার্থী জমিয়েছে ১৬৫ কোটি টাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।