Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ঋণ দেবে কোরিয়া : ডিজিটাল হচ্ছে ভূমি ব্যবস্থাপনা

| প্রকাশের সময় : ৪ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : দেশের ভূমি ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটাল করা হচ্ছে। এজন্য কোরিয়ার আর্থিক সহায়তায় একটি প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছে ভূমি মন্ত্রণালয়। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৩৫১ কোটি ৮৬ লাখ ২২ হাজার টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৭০ কোটি ৮২ লাখ ৯৬ হাজার টাকা এবং কোরিয়ার সহযোগিতা সংস্থা ইডিসিএফ ও কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংকের ঋণ থেকে ২৮১ কোটি তিন লাখ ২৬ হাজার টাকা ব্যয় করা হবে। ‘এস্টাবিøশমেন্ট অব ডিজিটাল ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ডিএলএমএস) থুরু ডিজিটাল সার্ভে অ্যান্ড সেটেলমেন্ট অপারেশন অব থ্রি সিটি করপোরেশন, ওয়ান পৌরসভা অ্যান্ড টু রুরাল উপজেলা অব বাংলাদেশ’ নামের প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ডিজিটাল ভূমি জরিপ, ম্যাপ ও খতিয়ান ডিজিটাইজেশনের মাধ্যমে ভূমি মালিকদের মালিকানার অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রকল্পটির অনুমোদন প্রক্রিয়াকরণের দায়িত্বে থাকা পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য এ এন সামসুদ্দিন আজাদ চৌধুরী বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশের ভূমি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও গতিশীলতা বাড়ানো সম্ভব হবে। ফলে জনসাধারণকে ভূমি ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত আরো উন্নত সেবা দেওয়া যাবে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ২০১৬ সালের ২২ জুন ইআরডি ও এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব কোরিয়ার মধ্যে ঋণ চুক্তি সই হয়েছে। কিন্ত প্রকল্পটি নিতে দেরি হওয়ায় ঋণ চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে ইআরডিতে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
ভূমি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বর্তমানে ভূমি ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সম্পর্কিত ভূমি জরিপ, ভূমি রেকর্ড ও মালিকানা পরিবর্তনের কারণে ভূমির বারবার বিভক্তির মতো বিষয়গুলোর জটিলতা আরো বেড়েছে। জিও রেফারেন্সসহ ক্যাডাস্ট্রাল ডাটাবেজ-নির্ভর ডিজিট্যাল ম্যাপ এসব সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, যেখানে সনাতন পদ্ধতিতে ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে ও এর হালনাগাদ যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ। ফলে ভূমির দাগ, খতিয়ান, মালিকানা ইত্যাদিও পরিবর্তন তাৎক্ষণিকভাবে বেজ ম্যাপে হালনাগাদ করা যায় না।
ভূমি মন্ত্রণালয় বলছে, অন্যদিকে প্রথমবার জিও রেফারেন্সসহ ক্যাডাস্ট্রাল ডাটাবেজ তৈরি করা গেলে পরে যেকোনো পরিবর্তনের জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা বেজ ম্যাপে হালনাগাদ হয়ে যাবে। ফলে বারবার ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভের প্রয়োজন হবে না। তাৎক্ষণিকভাবে ভূমির দাগ, খতিয়ান, মালিকানা, শ্রেণি ইত্যাদি পরিবর্তনগুলোও হালনাগাদ হয়ে যাবে। এতে ভূমি ব্যবস্থাপনা আরো স্বচ্ছ ও গতিশীল হবে এবং জনগণ সহজে ভূমি সংক্রান্ত সেবা নিতে পারবে।
পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাবিত এ প্রকল্পটি প্রাথমিকভাবে বাস্তবায়িত হবে নারায়ণগঞ্জ, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে। এ ছাড়া মানিকগঞ্জ পৌরসভা ও ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলা এবং কুষ্টিয়া জেলার সদর উপজেলাতেও বাস্তবায়িত হবে এই প্রকল্প।
প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রমগুলোর মধ্যে রয়েছে— প্রকল্প এলাকায় ডিজিটাল ক্যাডাস্ট্রাল ফিল্ড সার্ভে পরিচালনা, সার্ভে পরিচালনার জন্য ১৬০টি ইটিএস, ১৬০টি টোটাল সার্ভে সিস্টেম ও ১৬০টি পেন কম্পিউটার কেনা; ৩৯টি পারমানেন্ট সার্ভে মার্ক, ৪৩১টি ট্রি জংশন পয়েন্ট ও ৫০৫টি ট্রেভারস কন্ট্রোল পয়েন্ট স্থাপন; ক্যাডাস্ট্রাল ডাটাবেজ তৈরি; ডিজিটাল ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম স্থাপন; ডিজিটাল ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম স্থাপনের জন্য ২৩টি সার্ভার কম্পিউটার, ২১৫ সেট ল্যাপটপ, ২২ সেট ডেস্কটপ ও ২০ সেট স্মার্ট ট্যাব কেনা; প্রয়োজনীয় নেটওয়ার্কিং যন্ত্রাংশ ও সফটওয়্যার কেনা।
সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) সূত্র জানায়, প্রকল্পটির অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হলো-তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ভূমি প্রশাসনের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও গতিশীলতা বাড়ানোর মাধ্যমে জনগণকে ভূমি সম্পর্কিত উন্নতর সেবা দেওয়া। তাই এটি সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আইসিটি উন্নয়নের কৌশলের আওতায় ভূমি বাজারের দক্ষতা বাড়ানোর কৌশলের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। এ ছাড়া প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রকল্প এলাকায় আধুনিক ভূমি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি চালু হবে, যা উন্নত ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা তৈরিতে পরিকল্পনাবিদদের জন্য সহায়ক হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঋণ

৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২৫ জানুয়ারি, ২০২৩
২৯ ডিসেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ