Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যাংকিং সেবায় অসন্তুষ্টি বাড়ছে

১৬ লাখ হিসাব বন্ধ করে দিয়েছে গ্রাহক

| প্রকাশের সময় : ১ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : বাংলাদেশ ইনিস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংকিং সেবায় অসন্তুষ্ট গ্রাহক সংখ্যা বাড়ছে। ২০১৪ সালে মোট গ্রাহকের আট দশমিক ৬০ শতাংশ অসন্তুষ্ট হয়ে ব্যাংক হিসাব বন্ধ করে দেয়। ২০১৫ সালে এ ধরণের গ্রাহক সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় নয় দশমিক ৪২ শতাংশ। ২০১৬ সালে এ সংখ্যা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ১১ দশমিক ৬৪ শতাংশ। সর্বশেষ ২০১৭ সালে ১৬ লাখ ৫২ হাজার ৮৮১ টি ব্যাংক হিসাব বন্ধ হয়ে অসন্তুষ্টি জনিত কারণে। যা দেশের মোট ব্যাংক হিসাবের সাড়ে ১২ শতাংশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে‘ সাসটেইনেবিলিটি ইন সার্ভিস কোয়ালিটি অ্যান্ড কাস্টমার্স কনফর্মিটি : ড্রাইভার্স অব কাস্টমার্স লয়েলিটি টু ব্যাংকস’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উপস্থাপন করা হয়। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। গবেষণা দলে আরও ছিলেন- বিআইবিএমের সহকারি অধ্যাপক রেক্সোনা ইয়াসমিন, বিআইবিএমের প্রভাষক লামিয়া রহমান, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং অ্যাক্টিং হেড অব রিটেইল এম খোরশেদ আনোয়ার এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি এবং কাস্টমার সার্ভিস ডিপার্টমেন্টের উপ-মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ জহির হোসেন।
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ, বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক প্রফেসর ড. বরকত-এ-খোদা, ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক মঈনুদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের প্রফেসর ড. মো. মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি প্রফেসর ইয়াছিন আলি প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরী। তিনি গ্রাহকদের ব্যাংকিং সেবার মান আরও বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইবিএমের প্রফেসর এবং পরিচালক (গবেষণা, উন্নয়ন এবং পরামর্শ) ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জ্জী। তিনি সেমিনারের বিষয়টির ওপর সূচনা বক্তব্য দেন।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়েছে, প্রতিবছর গ্রাহকরা ব্যাংক হিসাব বন্ধ করলেও ৫৬ শতাংশ ব্যাংকে এ বিষয়ে গ্রাহকদের কোন সাক্ষাৎকার নেয়ার ব্যবস্থা নেই। এমনকি বন্ধ হয়ে যাওয়া এসব ব্যাংক হিসাবধারীর কোন রেকর্ডও সংরক্ষণ করা হয় না। এ অবস্থা থেকে উত্তোরণের জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলেকে ব্যাংকিং সেবায় গ্রাহকদের আরও ভালো সেবা দিতে হবে। একই সঙ্গে কেন ব্যাংক হিসাব বন্ধ হচ্ছে তা জেনে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।
ড. বরকত-এ-খোদা বলেন, অর্থনীতিতে গ্রাহক সন্তুষ্টি সাফল্য অর্জনের অন্যতম নিয়ামক। ব্যাংকিং খাতেও ভালো পণ্যের সঙ্গে ভালো সেবা প্রদান করতে হবে।
খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, ফাউন্ডেশন প্রশিক্ষণেই ব্যাংকিং খাতে কর্মীদের কিছু সৌজন্যতা শিখিয়ে দিতে হবে । সম্প্রতি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কর্মকর্তাদের একটি বড় অংশ গ্রাহকদের সঙ্গে সৌজন্যমূলক ব্যবহার করে না। ব্যাংকারদের গ্রাহকদের আস্থা অর্জন করতে হবে। একজন ভালো ব্যাংকার হবেন একজন ভালো জনসংযোগ কর্মকর্তা।
মোঃ আলী হোসেন প্রধানিয়া বলেন, ব্যাংকিং খাতের গ্রাহকদের চাহিদার পরিবর্তন হয়েছে। সুতরাং বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ব্যাংকের কৌশল প্রণয়ন করতে হবে। গ্রাহকদের মধ্যে ক্যাটাগরি করে পরিকল্পনা করলে সেটি ইতিবাচক ফল নিয়ে আসবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে কোন অভিযোগ আসলে তা গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়।
ফারুক মঈনুদ্দিন আহমেদ বলেন, গ্রাহকদের সন্তুষ্টি এবং দ্রæত সেবা দেয়ার জন্য ব্যাংকের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
ড. মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, যে ব্যাংকের কৌশল যত উন্নত তারা বেশি মুনাফা করে। গ্রাহককে উত্তম সেবা দিয়েই কৌশল বাস্তবায়ন করতে হবে। ব্যাংকিং খাতে অসুস্থ্য প্রতিযোগিতা চলছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্যাংক

৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ