বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) উপজেলা সংবাদদাতা: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নে নতুন বিদ্যুৎ লাইন স্থাপনের নামে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এলাকাবাসীর কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আদায় করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ২০১৫ সাল থেকে শুরু করে দফায় দফায় এই টাকা আদায় করা হলেও এখনো অনেক স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়নি। একটি গ্রামের গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রথম দফায় টাকা আদায়ের পর মিটারের সংযোগের নামে দ্বিতীয় দফায় মিটার প্রতি অতিরিক্ত দুই হাজার টাকা নেয়ারও অভিযোগও রয়েছে। তবে অভিযুক্তরা অর্থ আদায়ের বিষয়টি এড়িয়ে যান।
বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়ার জন্য টাকা প্রদানকারী মসুদ মিয়া বাদি হয়ে ২৭ লাখ টাকা চাঁদা আদায়ে কমলগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। বড়চেগ গ্রামের মসুদ আলী, মাসুক মিয়া, মো. আসাদ, আমির হোসেন ও জোবায়ের আহমদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগপত্রে জানান, বিদ্যুতায়নের দ্বিতীয় দফায় বড়চেগ এলাকার মানুষের কাছ থেকে স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহমুদ আলী ও তার সহযোগী সুলেমান মিয়া বড়চেগ গ্রামের গ্রাহকদের কাছ থেকে ২৭ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেন। পাঁচ হাজার থেকে শুরু করে পঞ্চাশ হাজার ও এক প্রবাসী পরিবারের কাছ থেকে ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়। অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, টাকা দিতে পারেনি গ্রামের এমন ৮০টি পরিবারকে বিদ্যুৎ সংযোগের বাইরে রাখা হয়েছে। সম্প্রতি এই ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে স্থানীয় দুই সংবাদ কর্মীকে জনপ্রতিনিধি মাহমুদ আলী ও তার লোকজন হুমকি দিয়ে কয়েক ঘন্টা আটকে রাখেন। ঐ ঘটনায় কমলগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন গণমাধ্যম কর্মী।
সরেজমিনে গ্রাহকরা জানান, প্রধানমন্ত্রীর শতভাগ বিদ্যুতায়ন সিদ্ধান্তের আওতায় রহিমপুর ইউনিয়নের বড়চেগ গ্রামে গত বছরের শেষ দিকে প্রথম দফায় ৫ কি.মি. ও দ্বিতীয় দফায় সাড়ে ৪ কি.মি. বিদ্যুতায়নের কাজ শুরু হয়। মোট ৫৬৬ জন গ্রাহকের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন পরিমাণে লক্ষ লক্ষ টাকা আদায় করা হয়। এলাকাবাসী জানান, উপজেলা আ’লীগ নেতা ও রহিমপুর ইউপি চেয়ারম্যানের নাম করে ইউপি সদস্য মাহমুদ আলী, সুলেমান মিয়া, জয়নাল মিয়া, মিন্নত আলী অর্থ আদায় করছেন। এক প্রবাসী পরিবার পল্লী বিদ্যুতের পরিচালক মো. আব্দুল আহাদ এই প্রক্রিয়ায় জড়িত থাকার অভিযোগ করেন।
বড়চেগ গ্রামের আমির হোসেন বলেন, দুইটি মিটারের বিপরীতে ১৪ হাজার টাকা দেওয়া হলে তাদের চাহিদা মতো আরও ৬ হাজার টাকা দিতে না পারায় বিদ্যুৎ সুবিধা পাওয়া যায়নি। মসুদ মিয়া বলেন, আমার বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে মাহমুদ মেম্বার ও সোলেমান মিয়া ৪০ হাজার টাকা দাবি করেন। তাদের চাহিদাকৃত টাকা দিতে না পারায় আমার বাড়ি সহ গ্রামের প্রায় ৮০টি পরিবারকে বিদ্যুৎ সুবিধা প্রদান করা হয়নি। গ্রামের মো. খিজির মিয়া বলেন, ’আমার কাছ থেকে ৪ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা নিয়েছে। এটা সরকারি বিদ্যুৎ কি-না তা বুঝতে পারিনি, তাই টাকাগুলো দিয়েছি।’
আর পুরো প্রক্রিয়ার তত্বাবধানে ছিলেন রহিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ বদরুল। ২০১৬ সালের প্রথম দিকে লাইন মির্ণানের কাজ শেষ হবার পর মিটার সংযোগের নামে গ্রাহকদের কাছ থেকে ২ হাজার পাঁচশত টাকা করে আদায় করা হয়।
বিদ্যুৎ কার্যালয় জানায়, মিটার সিকিউরিটির সরকারি মূল্য ৬শত টাকা এবং পঞ্চাশ টাকা সদস্য ফি। কিন্তু এতো টাকা পয়সা দেবার পরও বিদ্যুৎ সংযোগ পাননি গ্রাহকরা। এবিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল মজিদ খান মোবাইলে বলেন, ’এই টাকাতো চেয়ারম্যান সাবের মাধ্যমে তোলা (আদায়) হয়েছে। আমি উনার কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, ’ঠিকাদাররা কোন প্রকার আর্থিক লেনদেন করতে পারেন না। কারো বিরুদ্ধে এরকম অভিযোগ উঠলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আর রামচন্দ্রপুর গ্রামের বিদ্যুতায়ন বিলম্ব হয়ে গেছে দ্রæত আবার চালুর ব্যবস্থা করবো।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী শিবু লাল বসু বলেন, এসব বিষয়ে আমার কাছে কোন অভিযোগ আসেনি। বিষয়গুলো দেখার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।