পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আইয়ুব আলী : চট্টগ্রামে জমে উঠছে ঈদের বাজার। নগরীর অভিজাত বিপণি কেন্দ্র থেকে শুরু করে মার্কেট, শপিং মলগুলো সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। সন্ধ্যার পর আলোর বন্যা নেমে আসছে মার্কেটে মার্কেটে। দেশি-বিদেশি হরেক পোশাকে ঠাসা প্রতিটি দোকান। শাড়ী লেহেঙ্গা থ্রি-পিসসহ ভারতীয় পোশাকের আধিক্য সর্বত্রই। ক্রেতা আকর্ষণে নেয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। এরমধ্যে নিজের ও প্রিয়জনের জন্য পছন্দের পোশাক কিনতে নগরীর শপিং মলগুলোতে বাড়ছে ক্রেতাদের ভিড়। দুপুরের পর মার্কেটে নারী-পুরুষ-শিশুসহ সব বয়সী ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্যণীয়। ব্যবসায়ীরা জানান, ক্রেতা সমাগম বাড়ছে, তবে পুরোদমে বেচাবিক্রি শুরু হবে পনের রোজার পর থেকে। তখন আরও জমজমাট হয়ে উঠবে কেনাবেচা। মার্কেটে দেশিয় পোশাকের চেয়ে বিদেশি পোশাকের কদর বেশি লক্ষ্য করা গেছে। সরেজমিন দেখা যায়, বন্দরনগরীর নিউমার্কেট, রেয়াজুদ্দিন বাজার, টেরিবাজার, তামাকুমÐি, গুলজার টাওয়ার, মতি টাওয়ার, সানমার ওশ্যান সিটি, সেন্ট্রাল প্লাজা, ইউনুস কো, আফমি প্লাজা, চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্স, আমিন সেন্টার, আখতারুজ্জামান সেন্টার, সিঙ্গাপুর মার্কেটে ক্রেতার ভিড় ক্রমেই বাড়ছে। এছাড়া চকবাজারের কেয়ারী ইলিশিয়াম, চকভিউ মার্কেট, সুবসতি সৈয়দ সেন্টার, মতি কমপ্লেক্স, চক সুপার মার্কেট, ফিনলে স্কোয়ার, কাজির দেউড়ি-ভিআইপি টাওয়ার, হকার মার্কেট, স্টীল মিল-মহাজান গোল্ডেন টাওয়ার, বন্দরটিলা আলী শাহ প্লাজা, ইপিজেড ঝনক প্লাজা, বে-ভিউ শপিং সেন্টার, আগ্রাবাদ-লাকী প্লাজা, সাউথল্যান্ড সেন্টার, আগ্রাবাদ-ব্যাংকক সিঙ্গাপুর মার্কেট, চৌমুহনী দুবাই মার্কেট, কর্ণফুলী মার্কেট, পাঠানটুলী কক্সি মার্কেটেও ঈদের কেনাকাটা চলছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদ বাজারে শাড়ী, থ্রি-পিস, লেহেঙ্গা থেকে শুরু করে সবক্ষেত্রে ভারতীয় পোশাকের আধিক্য রয়েছে। বৈধ-অবৈধ পথে আসা এসব পোশাকে ছেয়ে গেছে মার্কেট ও বিপণি কেন্দ্রগুলো। সম্প্রতি নগরীর অর্ণব শাড়ীর দোকানে অভিযান চালিয়ে দেড় কোটি টাকার শাড়ীসহ ভারতীয় পোশাক জব্দ করে নিয়ে যায় শুল্ক গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ। তবে এখনও প্রায় সব মার্কেটে চোরাই পথে আসা ভারতীয় পোশাকের বিপুল চালান রয়েছে। এ ভ্যাপসা গরমেও ঈদ মার্কেটে ছুটছে ক্রেতারা। নগরীর গুলজার টাওয়ারের নিচতলায় হোয়াইট টেকের প্রোপ্রাইটর মোহাম্মদ শামীম জানান, আমাদের দোকানে লেডিস এন্ড কিডসের সব আইটেম পাওয়া যাচ্ছে। এসব আইটেমের সবই ভারতীয়। ক্রেতার পছন্দের আইটেম হচ্ছে গ্রাউন এবং লেহেঙ্গা। গ্রাউন দেড় হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। লেহেঙ্গা দেড় হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এ টাওয়ারের লাট সাহেব শপের প্রোপ্রাইটর মোঃ মনজুরুল হক চৌধুরী বলেন, এখানে ক্রেতারা ইন্ডিয়ান পাঞ্জাবী বেশি পছন্দ করছেন। ইন্ডিয়ান কোশাল পাঞ্জাবির দাম দেড় হাজার থেকে দুই হাজার টাকা এবং বাঙালি পাঞ্জাবি ৯শ’ থেকে ১২শ’ টাকা পর্যন্ত।
নগরীর অভিজাত মার্কেট মিমি সুপারের মনি শাড়ীজের মালিক সাইফুল ইসলাম কুতুবী বলেন, দাম আগের বছরের তুলনায় এখনও কম রয়েছে। তবে রোজার শেষের দিকে ক্রেতাদের চাহিদার ভিত্তিতে দাম বাড়তে পারে। এখানে জামদানি শাড়ী ৭শ’ থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। ইন্ডিয়ান কঞ্চী বরণ ১০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত। ক্যালেকো সেলিম কাতান ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া রয়েছে মসলিন, টিস্যু শাড়ী। অভিজাত মার্কেট আফমি প্লাজার শৈল্পিক শো-রুমের ব্যবস্থাপক মোঃ আরিফুল হক বলেন, নিজস্ব ডিজাইন প্রদর্শন করে ইতোমধ্যে শৈল্পিক ক্রেতাদের মন জয় করে নিয়েছে। প্রতিবছরের মত এবারও আমরা সব ধরনের পণ্য এনেছি। আরও কিছু আসার পথে রয়েছে। আমাদের পণ্যের দাম গত বছরের মত রয়েছে। শো-রুমে গত বছর যে পাঞ্জাবি ১৮শ’ টাকা ছিল সেটা এবার একইদামে বিক্রি করছি। ক্রেতা সন্তুষ্টিই আমাদের লক্ষ্য। সানমার ওশ্যান সিটির বৈশাখী সপে থ্রি-পিছ বিক্রি হচ্ছে ১৫শ’ থেকে ২২শ’ টাকা। গ্রাউন আড়াই হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। দোকানের প্রোপ্রাইটর হাবিবুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বিক্রি ভাল হচ্ছে। তবে কয়েকদিন পর আরও বেশি বিক্রি হবে বলে আশা করছি। আমিন সেন্টারের সুচি শাড়ীজের মালিক শোভন চৌধুরী বলেন, ঈদ উপলক্ষে এ মার্কেটে বিক্রি ভাল হচ্ছে। তবে ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে বিক্রি বাড়ছে। এ দোকানে ইন্ডিয়ান সুরাট সাড়ে ৩ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা, বেনারসি ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা, চেন্নাই সিল্ক ৮ থেকে ১৫ হাজার টাকা। তবে এবার ঈদের ক্রেতাদের নতুন আকর্ষণ চায়না সিল্ক। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিদেশি শাড়ীর পাশাপাশি বয়স্করা দেশিয় শাড়ী বেশি পছন্দ করছে। এরমধ্যে রয়েছে টাঙ্গাইল ৫শ’ থেকে ২ হাজার টাকা, টাঙ্গাইল-তাঁত ৫শ’ থেকে ২ হাজার টাকা, জামদানি তাঁত ১ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা, টাঙ্গাইল হাফ সিল্ক ৫শ’ থেকে ২ হাজার টাকা। রেয়াজুদ্দিন বাজারের ব্যবসায়ী তনু শাড়ীজের মালিক মোঃ ইউসুফ বলেন, এখানে দেশি ও বিদেশি শাড়ীর সমান কদর রয়েছে। টাঙ্গাইল ৫শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা, টাকাইয়া জামদানি ৩ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা, মসলিন জামদানি ১ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা। এছাড়া কাতান, মিরপুরী কাতান, বেনারসি কাতান, কঞ্চী বরণও পাওয়া যাচ্ছে। টেরিবাজার সানা ফ্যাশন হাউসের স্বত্বাধিকারী নাসির উদ্দিন বলেন, এখনও পর্যন্ত আমাদের প্রত্যাশা মতো বিক্রি করতে পারিনি। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ক্রেতাদের ভিড় বাড়বে। ঈদ উপলক্ষে আমরা এবার ভাল কালেকশান করেছি। এখানে ভারতীয় শাড়ী পাওয়া যাচ্ছে ৩ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা। দেশি শাড়ী ৫শ’ থেেেক ৫ হাজার টাকায়। এছাড়া দেশিয় থ্রি-পিস পাওয়া যাচ্ছে ৫শ’ থেকে ১০ হাজার টাকায়। ব্যবসায়ীরা জানান, দুপুরের পর থেকে ইফতারের আগপর্যন্ত আবার ইফতারের পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মার্কেটে ক্রেতা সমাগম বাড়ছে। সামনের দিনগুলোতে সব মার্কেট সেহেরী পর্যন্ত খোলা থাকবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।