চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
মুহাম্মদ শাহিদুল ইসলাম
॥ এক ॥
দ্বিধা ও সংকোচহীনভাবে একথা বলা যায় যে, বর্তমানে মুসলিম বিশ্বে সবচেয়ে ব্যাপক, দুনিয়ায় ও আখেরাতের শক্তিশালী কল্যাণকর হচ্ছে তাবলীগ তথা ইসলামী দা’ওয়াত প্রচার। তাবলীগী আন্দোলনের কর্মপরিধি এবং প্রভাব শুধু পাক ভারত উপমহাদেশে অথবা এশিয়াতেই বিস্তৃত নয় বরং মুসলিম এবং অমুসলিম দেশসমূহেও সম্প্রসারিত। উল্লেখ্য যে, বিশ্বে বিভিন্ন ইসলামী দা’ওয়াতী সংগঠন ও জামা’আত রয়েছে। তন্মধ্যে তাবলীগী ভাইদের দা’ওয়াতী কার্যক্রমের মাধ্যমে বিভিন্ন স্তরে জনগণের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করছে ইতোমধ্যে। যেমন :
সাধারণ জনগণের মধ্যে প্রভাব : তাবলীগ জামা’আতের প্রচেষ্টায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জেগেছে। যার ফলশ্রুতিতে বিশ্বইজতেমায় বিশাল নজির স্থাপন করেছে। কেননা সাধারণ মানুষের মেহেনতের মাধ্যমেই অধিকাংশ সাধারণ মানুষই ইজতেমার মাঠে একত্রিত হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সময়কালে তার মেহেনতের দ্বারা বেশিরভাগে সাধারণ মানুষই ইসলামের দিকে দীক্ষিত হয়েছে।
শিক্ষিতগণের মধ্যে প্রভাব : সাধারণ জনগণ যখন দ্বীনের কাজে অগ্রগামী হতে লাগলো। তখন শিক্ষিত লোকরা এ মেহেনত দেখে তাদের মধ্যে এক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হলো। আম বা সাধারণ মানুষ যদি দ্বীনের কাজ করতে পারে আমরা শিক্ষিত হয়ে কেন দ্বীনের কাজ করতে পারবো না। এর ফলে শিক্ষিত জনগণও এই দ্বীনের কাজে আস্তে আস্তে অংশগ্রহণ করতে লাগলো। অল্প পরিসরে শিক্ষিত জনগণের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগলো।
রাজনৈতিক সংগঠন ও নেতৃবৃন্দের মধ্যে প্রভাব : তাবলীগ জামা’আত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কোনো রাজনৈতিক দলকে সাপোর্ট করে না। তাবলীগ জামা’আতের মেহেনতের কারণে বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন ও রাজনৈতিক দলের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জেগেছে। ঈমান ও আমলের মেহেনতের দ্বারা রাজনৈতিক দলের মানুষের মধ্যে ধর্মীয় মনোভাব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। দ্বীনের মেহেনতের কারণে সমাজের মানুষের মধ্যে ইসলামী আদর্শ সুদৃঢ় হচ্ছে। তাবলীগ জামা’আতের ঈমান ও আমলের মেহেনতের দ্বারা রাজনৈতিকভাবে জনগণ উপকৃত হচ্ছে। কেননা ঈমান ও আমলের মেহেনতের দ্বারা ঘরে ঘরে ইসলাম প্রতিষ্ঠা এবং ইসলামী আদর্শভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই এ রাজনীতির মূল লক্ষ্য। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তাবলীগ জামা’আতের প্রভাব : ইজতেমায় এসে মুসল্লিগণ এক ঢিলে দুই পাখি মারে। বিশ্বইজাতমাকে উসিলা করে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়ীরা অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য লাভ করে। যেমন : চাউল ব্যবসায়ী, বই পুস্তক ব্যবসায়ী, দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় জিনিস পত্রাদি, মাংস, মাছ, ডাউল ইত্যাদি, ঔষধ ব্যবসায়ী, হোটেল ব্যবসায়ী, ময়দানের চার পার্শ্বে পানি ব্যবসায়ী, ময়দানের জন্য বিছানো চাটাই বা হুগলা ব্যবসায়ী। প্রায় এক বছরের মুনাফা অর্জন করে, ফলফলাদি ব্যবসায়ী, পোশাক বস্ত্রাদি ব্যবসায়ী, রিকশা ব্যবসায়ী, ইলেকট্রিসিটি এতে ডেসা কোম্পানি প্রচুর অর্থনৈতিকভাবে মুনাফা অর্জন করে থাকেন, মসজিদের কালেকশানের মাধ্যমে প্রচুর লাভবান হয়।
আল্লাহর সাথে মানুষের সম্পর্ক সুদৃঢ়করণ ও আত্মশুদ্ধি লাভ : তাবলীগ জামায়াতের সর্বপ্রধান গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো তা মানুষকে আল্লাহর সথে সম্পর্ক দৃঢ়করণে কাজ করে যাচ্ছে। আল্লাহর সাথে মানুষের সম্পর্ক করার দায়িত্ব আম্বিয়ায়েকিরামের উপর ন্যস্ত ছিল। আল্লাহ তায়ালা ঐ সকল নবী (আ.)কে নির্বাচিত করে মানুষের কল্যাণের জন্য দুনিয়াতে পাঠাতেন। যেহেতু নবীদের ধারাবাহিকতা আমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবীর মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটেছে। সেহেতু নবীদের মত আল্লাহর দিকে মানুষকে আহবান করা ও আল্লাহর সাথে মানুষের সম্পর্ক স্থায়ীকরণ কিয়ামতের পূর্ব পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। তাই উক্ত দায়িত্বের ধারাবাহিকতাকে টিকিয়ে রাখার জন্য বাংলাদেশ তাবলীগ জামা’আত এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।