পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সারাদেশে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে সাভারে গত এক সপ্তাহে ৯০ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে সাভার মডেল থানা পুলিশ ৬২ জনকে ও আশুলিয়া থানা পুলিশ ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। মামলা হয়েছে ৬৫টি।
এরমধ্যে সাভার থানায় ৪৬টি ও আশুলিয়া থানায় ১৯টি। তবে মুল গডফাদাররা এখনও রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাহিরে। পুলিশ দাবি করছে, সাভারে মাদকের কোন গডফাদার নেই। যা আছে সবই ছোটখাট ব্যবসায়ী। তবে সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থা সাভার ও আশুলিয়া থানা এলাকায় ৪০ জন মাদকের গডফাদারের নামের তালিকা তৈরী করেছে। এ তালিকায় সাভারে ১৫ জন ও আশুলিয়ায় ২৫ জনের নাম রয়েছে। এলাকাবাসী জানান, মাদক বিরোধী অভিযান চলা সত্তে¡ও রহস্যজনক কারণে চিহ্নিত মাদক স্পটে অভিযান হয়নি। তারা বহাল তবিয়তে তাদের মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
আশুলিয়া থানার বিপরীতে ২শ গজের মধ্যে আমবাগান বুড়িবাজার এলাকার সাথী, পারভীন ও অঞ্জনার মাদক স্পট। এ মাদক স্পটটি ১০-১২ বছর যাবৎ চলছে। পলাশবাড়ী বালুরমাঠ এলাকায় সন্ধ্যার পর মাদক বিক্রেতা মাদক নিয়ে বটতলা বালুর মাঠে অবস্থান করে বিক্রি করছে। তাঁজপুর এলাকার রিয়াজ এর বাড়িতে নিয়মিত মাদকদ্রব্য ইয়াবা ও হেরোইন বেচা-বিক্রি চলে। ওই এলাকার জয়নাল এর ব্যবসা বহাল তবিয়াতে পরিচালনা করছে। উত্তর তাঁজপুর সীমানাঘেষা গাজীপুর মহানগর সরূপাইতলী নামাপাড়া এলাকার মফির ছেলে সালাউদ্দিনের রয়েছে বিশাল মাদক স্পট। ওই এলাকার সকল খুচরা মাদক ব্যবসায়ীর কাছে সে সকল ধরনের মাদক সাপ্লাই দেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। একই এলাকায় রুবেল, শরীফ, মইনুর এ ব্যবসা পরিচালনা করছে। এছাড়া কবিরপুর, জিরানী, টেংগুড়ি, তালপট্টি, বলিভদ্র, ভাদাইল, বাইপাইল, কাইচাবাড়ি, বসুন্ধরা (চারালপাড়া), আড়িয়াড়ামোড়, জামগড়া, বেরন, গোরাট, ধনাইদ, গুমাইল, বুড়িপাড়া, নিশ্চিন্তপুর, তৈয়বপুর, জিরাবো, পুকুরপাড়, ধলপুর, আশুলিয়া, পানধোয়া, নয়ারহাট ও নলাম, ডেন্ডাবর বাতানটেকের হাসির রয়েছে মাদক ব্যবসা। এ সকল মাদক স্পটের বেশিরভাগই সরকারি দলীয় সমর্থকদের পরিচালনায় চলছে। জাবি সংলগ্ন পানধোয়া এলাকার স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতা মাসুদ ও তার বাহিনীর রয়েছে বিশাল মাদক ভান্ডার। শিমুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবিএম আজহারুল ইসলাম সুরুজ জানান, ভিকিমপুর ও গোহাইলবাড়ির ভুমিহীনের টেক এলাকা মাদকের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। মাদক বন্ধে আমরা নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছিনা। এ বিষয়ে তিনি গণমাধ্যমের সহযোগিতা দাবি করেন। শিমুলিয়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড সদস্য শাহ আলম শালু জানান, সম্প্রতি ভুমিহীনের টেকে এলাকাবাসীর সহায়তায় আটক কামালের দুই ছেলে মাদক ব্যবসায়ী শফিক ও জুয়েল জেল হাজতে থাকলেও শরিফ রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাহিরে। তারা মাটির নীচে চোলাই মদ, ইয়াবা, ফেন্সিডিল রেখে বিক্রি করতো। তবে ভুমিহীন দক্ষিণ পাড়ার অমূল্যের ছেলে নিখিল ইয়াবা সম্রাট। স্থানীয়দের অভিযোগ, শিমুলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের ছত্রছায়ায় থাকার কারণে মাদক সম্রাট নিখিলকে গ্রেপ্তার করছে না পুলিশ। আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদ পারভেজ জানান, সরকার ঘোষিত মাদক বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে এই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। গত ৫ দিনে ২৮ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক ১৯টি মামলা রুজু করা হয়েছে। গত সোমবার থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ অভিযান চালিয়ে আটককৃতদের কাছ থেকে ১৬৩৬ পিস ইয়াবা, ১৪৬৮ পুড়িয়া হেরোইন, চোলাই মদ ১৮ লিটার ও ১ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে। তবে আশুলিয়ার চিহিৃত কোন স্পটে পুলিশ এখনও অভিযান পরিচালনা করতে পারেনি। যাদের আটক করা হয়েছে তারা হচ্ছে- দুলাল খান, মনির হোসেন, শুকুর আলী, ফারুক হোসেন, শহিদুল ইসলাম, হান্নান, আব্দুর রশিদ, নুরুল ইসলাম, আমিনুল হক, আবু তৈয়ব ঢালী, ছানাউল্লাহ, আনোয়ার হোসেন রিংকু, ভূট্টো মিয়া, শাকিল ভূঁইয়া, রিপন, আনোয়ার হোসেন ঠান্ডু, রুবেল হোসেন, ইব্রাহিম, মিথুন ভৌমিক, সুজন মিয়া, জাহাঙ্গীর আলম, হযরত আলী, জালাল, হান্নান, জাকির হোসেন, সোহেল রানা, রঞ্জু মিয়া ও রিপন বিশ্বাস। পর্যায়ক্রমে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি। অনুসন্ধানে জানা গেছে, সাভারের প্রায় শতাধিক মাদকের স্পট রয়েছে। এর মধ্যে ইমান্দিপুর, মজিদপুর, ব্যাংক কলোনী, রাজাশন, বিরুলিয়া, আমিনবাজার, শিমুলিয়া ইউনিয়নের ভুমিহীনের টেক, ভিকমপুর, সাধাপুর, বক্তারপুর, নিরিবিলি, জোরপুল, ভাগলপুর, আনন্দপুর, কর্ণপাড়া, নামাগেন্ডা, ব্যাংক টাউন, নামাবাজার, আকরাইন, চাঁপাইান, কলমা, রাজফুলবাড়িয়া, শ্যামপুর, সামাইর, বেদেপল্লী, বেগুনবাড়ি, ধরেন্ডা, বলিয়ারপুর, কাউন্দিয়া, সাভার কাঁচাবাজারসহ বেশ কয়েকটি মাদকের স্পট উল্লেখযোগ্য। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইয়াবা ট্যাবলেট বিভিন্ন কোড নম্বর দিয়ে তারা বিক্রি করছে। ডাবিøউ আর ৪’শ টাকা, এক্স ওয়াই ৩’শ ৫০ টাকা, চম্পা ৩৫০ টাকা, ডাবিøউ আই ৩৫০ টাকা, আর ৪৫০ টাকা। এ সকল স্পটে আবার হেরোইন, ফেন্সিডিল, ইয়াবা ট্যাবলেটের পাশাপাশি গাঁজা ও বাংলা মদের (চোলাই মদ) চাহিদাও রয়েছে ব্যাপকহারে। সাভারের নিমেরটেক এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী আতাবরের ছেলে শাহীন। গত ২মাস আগে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর দেড় লাখ টাকার বিনিময়ে ছাড়া পায়। হাসেম আলীর ছোট ছেলে রহমান রয়েছে জেল হাজতে। কিন্তু বড় ছেলে মাদকের গড়ফাদার মোতালেব রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাহিরে। মিটন এলাকায় কল্পনা মাদক স¤্রাজ্ঞী। তার রয়েছে বিশাল সিন্ডিকেট। আবার সাভারের অনুমোদনবিহীন বিভিন্ন মাদক নিরাময় কেন্দ্রগুলোতে নিরাপদ ভেবে মাদকের রমরমা ব্যবসা চলছে বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে। সাভার পৌর সভার ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মো: মজিবুর রহমান জানান, সাভারের যে সকল মাদক নিরাময় কেন্দ্র রয়েছে সেটাকে আশ্রয় কেন্দ্র বানিয়ে বড় বড় ব্যবসায়ীরা আত্মগোপনে রয়েছে। তিনি বিষয়টি প্রশাসনের দৃষ্টি আর্কষণ করেন। রাজধানীর মিরপুর ও গাবতলী লাগোয়া কাউন্দিয়া ইউনিয়নে গ্রামের সংখ্যা ২২টি। তুরাগ নদিবেষ্ঠিত এসব গ্রামের লোকজনের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা নৌকা। একারণে মাদক ব্যবসায়ী ও সেবীরা এ এলাকাকে নিরাপদ জায়গা হিসেবে বেছে নিয়েছে। কাউন্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান খান শান্ত বলেন, আমার ইউনিয়নকে মাদকমুক্ত করতে মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরী করে পুলিশকে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ধোবাউর এলাকার শহিদুল্লাহর ছেলে নিজাম, গাংচিল বাহিনীর আনসুর ছেলে সেলিম, পাঁচকানি এলাকার মৃত ইউসুফের ছেলে আরমান ও ইমরান, মানিকের টেকের রবি ড্রাইভারের ছেলে তপু, আমিনবাজারের তৌকির, কাউন্দিয়ার মাহবুব, মীর্জা মনসুর আলীর ছেলে শামীম ও মিজান, পাসর্পোট অনিস, কসাই সেলিম, মাঝিরদা এলাকার মালেকের ছেলে আব্দুল্লাহ। তিনি আরো বলেন, এদের একাধিকবার পুলিশে দিলেও পুনরায় তারা জামিনে এসে বিভিন্ন মাদক ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পরে। সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মহসিনুল কাদির বলেন, কাউন্দিয়ার চেয়ারম্যান আমাদের কাছে মাদক ব্যবসায়ীদের কোন তালিকা দেয়নি। তিনি বলেন, চলমান মাদক বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে সাভারে গত এক সপ্তাহে ৬২ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে ৯৪৩০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ১২৩৫০ পুরিয়া হেরোইন, ১০ বোতল ফেন্সিডিল, ১০ হাজার লিটার চোলাই মদ ও ৭ কেজি গাঁজা। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ৪৬টি। পর্যায়ক্রমে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।