মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
যুক্তরাষ্ট্র কথা রাখে না। কারণ তারা কথা দেয় স্বার্থ উদ্ধারের জন্য, রাখার জন্য নয়। ফিলিস্তিনি নেতা ইয়াসির আরাফাত থেকে ভেনিজুয়েলার হুগো শ্যাভেজ সবাই এ কথা জানতেন। মার্কিন আশ্বাসের যে কানাকড়িও দাম নেই- মাতৃভূমি হারানোর মূল্য দিয়ে তা বুঝেছে ফিলিস্তিনিরা। বিশ্বের আর কোনো জাতি এত ঠকেনি, এতটা ধোঁকা খায়নি। একদিন দু’দিন নয়। বছরের পর বছর ঠকে আসছে ফিলিস্তিনিরা। গত ৭০ বছর ধরেই ধোঁকা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। ১৫ মে, ১৯৪৮ সাল। একদিনে ২০ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনির ঘর ভেঙে ইহুদিদের জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয় আজকের ইসরাইল। সীমাহীন অত্যাচার-নিপীড়ন করে নিজ ভূমি থেকে উৎখাত করা হয় এসব মানুষকে। পরিস্থিতি শান্ত করতে যুক্তরাষ্ট্র আশ্বাস দেয়, ওয়াশিংটন তাদের অধিকারের বিষয়টি দেখবে। ঘটা করে আরও উন্নত ভূমি, আরও উন্নত জীবনের প্রতিশ্রæতি দেয়। কিন্তু ফিলিস্তিনিদের প্রতি নিজেদের সেই পুনর্বাসন প্রতিশ্রুতি ভুলে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। আজ ৭০ বছর পরে এসে লোকলজ্জা ভুলে প্রকাশ্যে ইসরাইলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে দেশটি। বর্তমানে ফিলিস্তিনের অধিকাংশ এলাকাই দখল করে নিয়েছে ইসরাইল। উৎখাত হতে হতে ফিলিস্তিন বলতে আজ বোঝায় গাজা ও পশ্চিম তীরের এক টুকরো জমিন। ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মানচিত্র দেখলেই সেটা বোঝা যায়। ইসরাইল এসব জায়গায় স্থাপন করেছে অবৈধ বসতি এবং এখনও তা অব্যাহত রেখেছে। উদ্বাস্তু ২০ লাখ ফিলিস্তিনির প্রায় ৭০ শতাংশই আজ শরণার্থী হিসেবে নিবন্ধিত। যে ভূমি থেকে তাদেরকে জোরপূর্বক উৎখাত করা হয়েছে, সেটাই আজকের ইসরাইল। ইসরাইলের বিরুদ্ধে গাজার চলতি সপ্তাহের বিক্ষোভগুলো ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে ভয়াবহ। নিজেদের বাপ-দাদার ভূমি জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস সরানোর পদক্ষেপ মানতে পারেনি তারা। তাই এর বিরুদ্ধে ইসরাইলের তারকাঁটা দিয়ে ঘেরা সীমানা প্রাচীরের বাইরে বিক্ষোভ সমাবেশে হাজির হয় লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি। প্রতি বছরের মতো চলতি বছরের ৩০ মার্চ নিজেদের ভূমিতে ফেরার ‘মহান প্রত্যাবর্তন মিছিল’ নামে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হয়। এর মধ্যে চলতি মাসের ১৫ মে ‘নকবা’ বা বিপর্যয় দিবস পালন করেছে ফিলিস্তিনিরা। এদিনকে ‘বিপর্যয় দিবস’ বলার কারণ, ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য ব্রিটেন শাসিত ফিলিস্তিন থেকে এদিনই অধিকাংশ স্থানীয় অধিবাসীকে উৎখাত করা হয়। ১৯৪৮ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরাইল প্রতিষ্ঠা হলেও এর চিন্তা-ভাবনা শুরু হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের টালমাটাল সময়ে ১৯১৭ সালে ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস বেলফোর ইহুদিবাদীদেরকে লেখা এক পত্রে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে একটি ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি ঘোষণা দেন। ব্রিটেন কখনও চায়নি ইহুদিদের ইউরোপে জায়গা দিয়ে নতুন কোনো ঝামেলা সৃষ্টি করতে। কারণ তারা ভালো করেই জানত, ইহুদিরা ঐতিহ্যগতভাবেই ধূর্ত ও নিপীড়ক। তাই ইহুদিদের জন্য আলাদা একটি রাষ্ট্রের চিন্তা শুরু করল তারা। কিন্তু পৃথিবীর কোনো দেশ তাদের ভূখণ্ডে ইহুদিদের বসাতে রাজি হয়নি। শেষ পর্যন্ত বেলফোর ঘোষণা অনুযায়ী ফিলিস্তিন এলাকায় ইহুদিদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় ব্রিটেন। ধীরে ধীরে ইসরাইল ইহুদিদের জন্য নিরাপদ ও স্বাধীন এলাকা হিসেবে গড়ে ওঠার ফলে সেখানে ইহুদির সংখ্যা দ্রুতই বৃদ্ধি পেতে থাকে। মিডল ইস্ট মনিটর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।