Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অস্তিত্ব সঙ্কটে তিস্তানির্ভর পীরগাছার ৫ নদী

| প্রকাশের সময় : ১৩ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

পীরগাছা (রংপুর) থেকে সরকার রবিউল আলম বিপ্লব : দুই পাশে ধানের ক্ষেত আর মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া নালার মতো এই গো চারণভ‚মি দেখে বোঝার উপায় নেই এটিই মাষাণকুড়া নদী। একসময় এই নদী দিয়েই চলতো পাল তোলা নৌকা, জেলেরা সংসার চালতে মাছ ধরে। তবে বেদখল এবং বছরের পর বছর ড্রেজিং না করায় পলি জমে কমবেশি এমনই অবস্থা রংপুরের পীরগাছা উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তা, ঘাঘট নদ, বুড়াইল, আলাই কুমারী ও মাষাণ কুড়ার ।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য অনুযায়ী, পীরগাছা উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ছোট-বড় নদ-নদীর সংখ্যা পাঁচটি। এগুলো হলো তিস্তা, ঘাঘট নদ, আলাই কুমারী, বুড়াইল ও মাষাণ কুড়া নদী। বর্ষা মৌসুমে নদ-নদীগুলোতে পানি থাকলেও বছরের বাকি সময় থাকে শুকনা।
তিস্তা নদী পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ও তাম্বুলপুর ইউনিয়নের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ-ভারত মন্ত্রী পর্যায়ের চুক্তি অনুযায়ী তিস্তার পানির ৩৮ শতাংশ ভারত এবং ৩৬ শতাংশ পাবে বাংলাদেশ। আর নদীর নাব্য ঠিক রাখতে ২৬ শতাংশ পানি রিজার্ভ রাখা হবে। কিন্তু সেটি চুক্তির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে গেছে। উল্টো তিস্তা ব্যারাজের উজানে ভারত গজল ডোবায় বাঁধ দিয়ে একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহার করে নেয়ায় তিস্তায় পানি প্রবাহ প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। ফলে নাব্য হারিয়ে প্রমত্তা তিস্তা এখন সরু খালে পরিণত হয়েছে। তিস্তা ব্যারাজের ভাটিতে নদীর দেড়’শ কিলোমিটার এলাকা এখন মরা গাঙ্গে পরিণত হয়েছে। তিস্তায় পানি প্রবাহ না থাকায় এর প্রভাব পড়েছে অন্যান্য নদ-নদীতে। যৌবন হারা তিস্তার বুকে জেগে উঠেছে বড় বড় চর। যতদূর চোখ যায় শুধু ধু-ধু বালুচর। তিস্তার বুক চিরে এখন নৌকার পরিবর্তে নানান রকমের যানবাহন চলাচল করছে। চরে বিভিন্ন ধরনের ফসলেরও আবাদ হচ্ছে। নাব্য সঙ্কট ও দখলের কারণে আলাই কুমারী ও মাষাণ কুড়া মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। অস্তিত্ব হুমকিতে রয়েছে তিস্তা, বুড়াইল নদী ও ঘাঘট নদ।
ঘাঘট নদ বাংলাদেশের উত্তর অংশে প্রবাহিত একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ২৩৬ কিলোমিটার। এর পানি প্রবাহমাত্রা অবস্থাভেদে ৫০ থেকে আডাই হাজার কিউসেক। পীরগাছা উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ঘাঘট নদ। দখল হয়ে যাওয়ায় ৫০ ফুট প্রশস্ত ঘাঘট নদ এখন ১০ ফুটে এসে ঠেকেছে।
ঘাঘট নদী নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার তিস্তা নদী থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। উত্তর থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে নদীটি সর্পিল গতিতে রংপুর হয়ে পীরগাছা উপজেলার ওপর দিয়ে গাইবান্ধা শহরে প্রবাহিত হয়ে ফুলছড়িঘাট থেকে কয়েক কিলোমিটার উত্তরে ব্রহ্মপুত্র নদের সাথে মিলিত হয়েছে। ঘাঘট আঁকাবাঁকা পথে ১২০ কিলোমিটারজুড়ে শুকিয়ে গেছে। একসময় দূর-দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা আসত ব্যবসা করার জন্য। ঘাঘটের ঘাটে ভিড়ত অসংখ্য বাণিজ্য তরী। নদীপথে বিভিন্ন পণ্য সরবরাহ করত লোকজন। শুকনা মৌসুমে পানি প্রবাহ এখন শূন্যের কোঠায়।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নদী

২৬ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ