Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বরগুনায় নদী কিনে ধরতে হচ্ছে মাছ : বিপাকে পড়ছেন সাধারণ জেলেরা

বরগুনা জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৪ মার্চ, ২০২৩, ১২:০১ এএম

বরগুনার পায়রা নদীতে মাছ ধরতে লাখ লাখ টাকায় নদী কিনতে হচ্ছে জেলেদের। নদী কিনতে না পারায় অধিকাংশ জেলেই কর্মহীন জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। জেলেদের অভিযোগ, পায়রা নদীতে মাছ শিকারের জন্য বেসরকারিভাবে সীমানা নির্ধারণ করে দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় গড়ে উঠেছে এমনই সিন্ডিকেট। জেলেদের কাছ থেকে তারা নদী বিক্রির নামে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নদী বিক্রির এই টাকার সিংহভাগই যাচ্ছে কতিপয় প্রভাবশালীর পকেটে। যে কারণে নদী না কিনে মাছ শিকারে গেলে কিংবা প্রতিবাদ করলে জেলেদের হামলা-মামলার শিকার হতে হয়। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ জেলেরা।
স্থানীয় জেলেরা জানান, পায়রা নদীর ৫০০ হাত বিক্রি হচ্ছে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকায়। আর ১ হাজার হাত নদী বিক্রি হচ্ছে ৬ থেকে ৭ লাখ টাকায়।
বরগুনা সদরের বালিয়াতলী ইউনিয়নের জেলে আবদুল মান্নান বলেন, তালতলীর ছোট ভাইজোড়া গ্রামের ইদ্রিসের কাছ থেকে আমি ৬ লাখ টাকায় ১ হাজার ২০০ হাত পায়রা নদী কিনে সেখানে মাছ শিকার করছি। আমার মতো অনেকেই এভাবে নদী কিনে মাছ শিকার করছেন। একই ইউনিয়নের আরেক জেলে জানান, স্থানীয় পনু মল্লিক ও তার সহযোগীরা জেলেদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নিয়ে নদী বিক্রি করেন। নদী না কিনলে মাছ ধরতে দেন না তারা। কেউ প্রতিবাদ করলে তাদেরকে মামলার হুমকি দেন তারা।
জেলে নাসির খান বলেন, আমরা মাছ শিকার করে কয় টাকা পাই? এর মধ্যে আবার লাখো টাকা দিয়ে নদী কিনতে হয়। নদী বিক্রির এই চক্রটি প্রভাবশালী হওয়ায় কেউই তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারেন না। প্রশাসনও নিরব ভ‚মিকায় রয়েছে।
এদিকে নদী বিক্রির সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্তরা। এ নিয়ে অভিযুক্তদের একজন পনু মল্লিক ইতিপূর্বে প্রকাশিত স্থানীয় সাংবাদিকদের সংবাদের প্রতিবাদও দিয়েছেন সংবাদপত্রে। পনু মল্লিক বলেন, নদী বিক্রির কোনো প্রমাণ নেই। এসব কথা বললেও কেউ টাকা নেওয়ার প্রমাণ দেখাতে পারবে না।
বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, বিষয়টি আমাদের জানা নেই। আমরা খোঁজ-খবর নিয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় ব্যবস্থা নেওয়া জন্য উত্থাপন করব।
বরগুনার পুলিশ সুপার আবদুস ছালাম বলেন, এভাবে নদী বিক্রি করা বেআইনি। খোঁজ নিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর জেলেরা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে মাছ ধরতে পারেন সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নদী

২৬ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ