বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মুরশাদ সুবহানী, পাবনা থেকে : যমুনা নদীতে পানি বাড়ছে। পানিবৃদ্ধির পাশাপাশি প্রবল ভাঙ্গনও শুরু হয়েছে। যমুনা নদীর পাবনা জেলার এই অংশে ভাঙ্গন প্রায় সব সময়ই থাকে। পানি বৃদ্ধি ও কমার সাথে ভাঙ্গনের তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। ভাঙ্গন রোধে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ না নেওয়ায় জমি-জিরাত, হালের বলদ, গাছ-পালা সব নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। কার্যত নদীকূলের মানুষ বন্যা-ভাঙ্গনে সব হারিয়ে পথের ফকির হয়ে গেছেন অনেকেই। অনেকের সন্ধান পাওয়া যায়, যারা এক সময় জমির মালিক ছিলেন, নদীর ভাঙ্গনে সব হারিয়ে এখন তারা রাজধানী ঢাকায় রিকশা চালায়। পাবনার বেড়ার উপজেলাধীন আমিনপুর থানা এলাকায় নগরবাড়ীঘাট, কাজীরহাট রঘুনাথপুর, বেড়া থানাধীন নাকালিয়া ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে এখন সঙ্কুচিত পড়েছে। বেড়ার ভারেঙ্গা মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে বহু বছর আগেই। গত কয়েক বছর ধরে নগরবাড়ী ঘাটসহ আশপাশের এলাকার ব্যাপক ভাঙ্গন চলছে। ভাঙ্গনে নগরবাড়ী ফেরিঘাটসহ রঘুনাথপুর, প্রতাপপুর, মধুপুর, মুন্সিগঞ্জ, যদুপুর, শ্রীনিবাসদিয়া, খানপুরা, ঘোপসিলিন্দা, গনপতদিয়া, নটাখোলাসহ আশপাশের এলাকার প্রায় হাজার হাজার মানুষ গৃহহারা এখন। অপর দিকে, জেলার সুজানগরের ৬টি ইউনিয়ন পদ্মা ও যমুনার সংযোগস্থলে দুই নদী ভাঙ্গনে মানুষজন দিশেহরা হয়ে পড়েছেন। পদ্মা-যমুনার সংযোগস্থল পাবনার সুজানগর উপজেলার সাতবাড়ীয়া, মানিকহাট ও নাজিরগঞ্জ ইউনিয়নের শতশত ঘরবাড়ি, হাট-বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ফসলী জমি ইতোমধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের হরিরামপুর, সিংহনগর, বিলমাদিয়া, মাহমুদপুর, রামকন্তপুর, কেশবপুর, শামিলপুর, ফকিতপুর, ইন্দ্রজিতপুর, সিন্দুরপুর, কন্দর্পপুর, চররাজপুর কাদিরপুর ও গ্রামসহ হাজার হাজার বিঘা ফসলী জমি ও গাছপালাও নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। কোন মতে মানচিত্রে টিকে আছে এই ৩ ইউনিয়ন। বিশেষজ্ঞদের মতে, নদী স্বাভাবিক গতিপথ হারালে আগের চলার পথ খুঁজতে ভাঙ্গছে নদীর পার। এ ছাড়াও নদ-নদীর পানি হ্রাস-বৃদ্ধির ফলে নদী ভাঙ্গন তীব্র হয়ে উঠে। পাবনার বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতি ও অনিয়ম দুর্নীতির কারণে ভাঙ্গনরোধ স্থায়ী করা সম্ভব হয়নি বলে অভিযোগ শোনা যায়। জিও ব্যাগ ফেলাসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বেড়া থানাধীন এলাকার মধ্যে যমুনা নদীর ভাঙ্গন রোধ করতে। কার্যত: জিও পদ্ধতিতে নদী ভাঙ্গন রোধ সাময়িক ব্যবস্থা বলে অনেকে মনে করেন । আমিনপুর থানাধীন যমুনা নদীর অংশে এবং সুজানগরে পদ্মা-যমুনা মিলন এলাকা নিকবর্তী এলাকায় নদী ভাঙ্গন রোধে কোন পদক্ষেপই নেওয়া হয়নি। অভিযোগ জিও ব্যাগ পদ্ধতিতে সাময়িক এই ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে ব্যাপক ফাঁকিবাজি ও চুরি । কত ব্যাগ নদীতে ডাম্পিং করা হয়েছে; বালু ও সিমেন্ট মেশানোর পরিমান কত তা জানা যায় না। সিমেন্টের পরিমান কম এবং বালু বেশী হলে ওই ব্যাগ জমাট বাঁধবে না। উপরন্তু এক সময় ব্যাগ ফেটে বালু নদীতে মিশে যাবে। দেশে পানি উন্নয়ন বোর্ড শ্বেতহস্তি নামে পরিচিত লাভ করেছে বহুকাল আগেই। এই অবস্থার তেমন কোন পরিবর্তন হয়নি বলে জানা গেছে। এই সব অভিযোগ অবশ্য কর্মকর্তারা আমলে নেন না এবং স্বীকার করেন না। অভিজ্ঞজনদের মতে, নদ-নদীর ভাঙ্গনরোধে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিতে হবে। কল্যাণকর আইন প্রণীত হলে জমি হারা মানুষ তাদের মালিকানা ফিরে পেতে পারেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।