Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যমুনায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

হুমকির মুখে বঙ্গবন্ধু সেতুরক্ষা বাঁধ ও ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়ক

ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১ মার্চ, ২০২২, ১২:০৪ এএম

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনার নদীতে জেগে ওঠা আবাদি জমির মালিকদের জিম্মি করে দিনরাত অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের উৎসবে মেতে উঠেছে অসাধু বালু ব্যবসায়ীরা। কতিপয় অসাধু চক্রের মাধ্যমে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হলেও স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিকরা।
বালু উত্তোলনের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে যমুনা ফার্টিলাজার সার পরিবহনের জন্য ভূঞাপুর-তারাকান্দি আঞ্চলিক সড়ক। এছাড়া বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব-ভূঞাপুর সড়কের গোবিন্দাসী কুকাদাইর পযর্ন্ত সেতু রক্ষা বাঁধ, বঙ্গবন্ধু সেনানিবাস ক্যান্টনমেন্টের গাইড বাঁধও। সারা বছরই অবাধে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে উপজেলা আ.লীগের কতিপয় নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় ও প্রশাসনের লোকজনদের ম্যানেজ করেই এমন অবৈধ বালু উত্তোলন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। এ ফসলি জমি থেকে বালু উত্তোলন বন্ধে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি উপজেলার অর্জুনা ইউনিয়নের জগৎপুরা গ্রামের ভুক্তভোগি মো. মানিক হোসেন নামের এক ব্যক্তি অবৈধ বালুর ঘাট বন্ধে উপজেলা প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে বলা হয়, জগৎপুরা এলাকায় রাতের আঁধারে বালু-মাটি কাটা হচ্ছে। এতে হুমকির মুখে রয়েছে ভূঞাপুর-তারাকান্দি আঞ্চলিক সড়ক। এসময় বালু মাটি কাটা বন্ধ করার কথা বলায় প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভূঞাপুর-তারাকান্দি আঞ্চলিক সড়ক সংলগ্ন উপজেলার অর্জুনা ইউনিয়নের কুঠিবয়ড়া হতে নলীন বাজার বাজার পর্যন্ত সম্প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ড কয়েকশ’ কোটি টাকা ব্যয়ে গাইডবাঁধ নির্মাণ করেছে। কিন্তু সেই গাইড বাঁধের কাছ থেকে ভেকু (মাটি কাটার যন্ত্র) দিয়ে বালু কাটা হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই চলছে অবৈধ এসব বালুর ঘাট।
ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ রহিজ উদ্দিন বলেন, যমুনায় বাঁধের কাজ শেষ হয়েছে কয়েক মাস আগে। এরমধ্যে প্রভাবশালীরা বাঁধের কাছ থেকে ভেকু দিয়ে বালু কেটে ট্রাকযোগে বিক্রি করছে। এভাবে বালু মাটি কেটে ফেলা হলে বন্যার সময় বাঁধ ভেঙে যাবে।
ক্ষতিগ্রস্থ অভিযোগকারী মানিক হোসেন খান বলেন, বাপ-দাদার জমিতে চর জেগে উঠেছে। সেই চর জোরপূর্বকভাবে কেটে ফেলা হচ্ছে। বাঁধা দিতে গেলে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়। লিখিতভাবে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. তাহেরুল ইসলাম তোতার সাথে কথা হলে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. ইশরাত জাহান বলেন, বালুর ঘাটে অভিযান পরিচালনা করা হয়। কিন্তু পরবর্তিতে রাতের আঁধারে আবার তারা বালুর ঘাট চালু করে। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় অর্জুনা ও জগৎপুরা এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছে। কিন্তু ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি।
টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম বলেন, যমুনা নদীর বাঁধের পাশে যারা অবৈধভাবে বালু উত্তোলণ করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি বলেন, উপজেলার জগৎপুরা এলাকায় গাইড বাঁধের কাছ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলণ বন্ধে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যমুনায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ