Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উলিপুরে শিশুর কোলে শিশু সন্তান

| প্রকাশের সময় : ৯ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

উলিপুর (কুড়িগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা : আফরোজা এবার জেডিসি পরীক্ষা দিত। সবার মত সেও স্কুলে যেত, পড়াশুনা করে নিজের ভবিষ্যৎকে আলোকিত করার অদম্য স্বপ্ন ছিল তার। কিন্ত সব কিছুর বাধ সাধে বাল্য বিয়ে। আফরোজা বলেন, ‘আমাকে জোরপূর্বক বিয়ে দিয়েছে। পড়ালেখাও করতে দেয়নি, একটা বাচ্চা হয়েছে ৫ মাস বয়সী শিশু পুত্র সাজু। স্বামী তারও কোনো খোঁজ খবর নেয় না। বেশ কিছুদিন হলো বিবাহ বিচ্ছেদও হয়েছে। সে উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের হাতিয়ার মেলা গ্রামের সাহের আলী ও ঝরণা বেগম দম্পতির দ্বিতীয় কন্যা।
জানা গেছে, প্রায় দেড় বছর আগে আফরোজার বিয়ে দেয়া হয়। তখন সে হাতিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল। ভুয়া জন্ম নিবন্ধনের কাগজ দিয়ে ওই বিয়ে রেজিস্ট্রি করা হয়। টাকার বিনিময় ভূয়া জন্ম সনদ পাওয়া যায় অভিযোগটি দীর্ঘদিনের। সচেতনতামূলক সভা-সমাবেশ,ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা সহ নানা ধরনের জোরালো পদক্ষেপ নেয়ার পরও বাল্য বিয়ে ঠেকানো সম্ভব হচ্ছে না। এবারে উপজেলার ১৬টি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪৭ জন এবং ৩১টি মাদ্রাসার ১শ ২ জন জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় অনুপস্থিত শিক্ষার্থীর অর্ধেক বাল্য বিয়ের শিকার হয়ে ঝরে পড়েছেন।
আফরোজার পিতা দিনমজুর সাহের আলী বলেন, দারিদ্রতা ও সামাজিক নিরাপত্তার অভাবে বিয়ে দিয়েছি, কিন্ত এতটুকু মেয়ের জীবনে এমন কষ্ট হবে ভাবতে পারিনি। আফরুজার মা বলেন, ভেবেছিলাম বিয়েটা দিলে নানান দিক দিয়ে আমি রেহাই পাবো কিন্তু তা আর পেলাম না। হাতিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা শামীম আরা সুলতানা বলেন, পরীক্ষার সময়ে ৫জন অনুপস্থিত ছিল তার মধ্যে ৪ জনের বাল্য বিয়ে হয়ে গেছে।’
হাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন জানান, বাল্য বিয়ে প্রতিরোধে আমরা কঠোর অবস্থান নিয়েছি। তবুও নানা কৌশলে কিভাবে বাল্য বিয়ে হচ্ছে তা ঠেকানো যাচ্ছে না।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আব্দুর রব বলেন, এবারের জেএসসি এবং জেডিসি পরীক্ষায় অনুপস্থিত সাড়ে ৩শ’ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৪৯ জন বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। বাল্য বিয়ে একটা বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা থেকে বেড়িয়ে আসার জন্য আমরা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রমের মাধ্যমে বাল্য বিয়ে কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শিশু

১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ