Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বগুড়ার নিভৃত পল্লীতে ৪ জনের গলা কাটা লাশ উদ্ধার

মহসিন রাজু, বগুড়া থেকে | প্রকাশের সময় : ৮ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার আটমুল ইউপির নিভৃত পল্লী ডাবইর ও বাদলাদিঘীর মধ্যবর্তি বিশাল পাথারের ধান ক্ষেতে ৪টি গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ লাশগুলো উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। নিহত ৪ জনের মধ্যে ২জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এরা হলো, আটমুল ইউনিয়নের কাঠগাড়া গ্রামের আছিরুদ্দিনের ছেলে মুদি দোকানদার শাহাবুল ইসলাম সাবরু (৩৩) ও একই গ্রামের জহুরুলের ছেলে রংমিস্ত্রি জাকারিয়া (৩০)। বাকি দু’জনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। তাৎক্ষনিকভাবে পুলিশ হত্যাকান্ডের কারন সম্পর্কে কিছু বলেনি। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের বিবরণ অনুযায়ি গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় লোকজন ধানের ক্ষেতে লাশগুলো দেখতে পেয়ে হৈ চৈ করে মানুষ জড়ো করে।
পরে মোবাইল ফোনে এই খবর পুলিশকে জানানো হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। বেলা ১২টার মধ্যে শিবগঞ্জের এই নিভৃত পল্লী জনপদ ইলেক্ট্রনিক, প্রিন্ট ও অনলাইন পত্রিকার সাংবাদিক, পুলিশ, র‌্যাব ও গোয়েন্দা এজেন্সির লোকজনে ভরে যায়। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার খবর জানাজানি হবার পরে সেখানে নামে মানুষের ঢল। দুপুরে বগুড়ার পুলিশ সুপার আশরাফ আলী ভুঁঞা ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, কি কারণে এই নৃশংসতম হত্যাকান্ড এবং কারা এর পেছনে রয়েছে তার অনুসন্ধান চলছে। অনুসন্ধানের পর বিস্তারিত জানানো হবে।
নিহত ৪জনের মধ্যে শাহাবুল ও জাকারিয়ার পরিচয় জানার পর থেকে তাদের দু’জনের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। বিশেষ করে শাহাবুলের মা জাহানারা বেগমের কান্না থামছেইনা। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শাহাবুলের ছোট ভাই জান্নাতুল ফেরদৌস কাঁদতে কাঁদতে জানায়, ‘ তার ভাই রোববার সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাত ৯টার দিকে বাসায় ফোন করে বলে, একটা কাজে বাইরে গেছিলাম কাজ শেষ হইছে কিছুক্ষণের মধ্যেই বাড়ি ফিরবো। কিন্তু ভাইতো আর ফিরলোনা, তার বদলে পেলাম তার লাশ।
কেন এই নৃশংস হত্যাকান্ড? ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও শিবগঞ্জের ওসির কাছে জানতে চাইলে সবাই নিরব থেকেছেন সাংবাদিকদের কাছে।
তবে স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে ধারণা পাওয়া গেছে, আওয়ামীলীগ সমর্থিত স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও তার দলেরই বিরোধি গ্রæপের মধ্যে আধিপত্য এবং মাদক বেচাকেনার অর্থ ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে। স্থানীয় একটি সুত্র আরো জানিয়েছে, নিহত শাহাবুল পেশায় মুদি দোকানি এবং জাকারিয়া পেশায় রং মিস্ত্রি হলেও তারা দু’জনেই ছিল ভবঘুরে প্রকৃতির, প্রায়ই তারা ২/৪ দিনের জন্য বাড়ির বাইরে অজ্ঞাত স্থানে যেত। স্থানীয় ‘ভাইয়ের পুকুর’ নামক বিখ্যাত হাটটি কিছুদিন ধরেই মাদক ও চোরাই গরু বিক্রির নিরাপদ ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছিল। একই স্থানে ৪০ ঘর কসাই (গোশত বিক্রেতা) এর বসতি রয়েছে। এই কসাইদের অনেকেই প্রভাবশালী অপরাধী চক্রের ঠেঙ্গারী বাহিনী হিসেবেও কাজ করে থাকে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ভাড়াটে খুনি হিসেবে কাজ করে বলে জনশ্রæতি রয়েছে। কারো কারো সন্দেহ ইয়াবার বড় কোন চালানের ভাগ বাটোয়ারার বিরোধকে ঘিরেই নিহতদের নৃশংসভাবে জবাই করেছে প্রতিপক্ষ।

 



 

Show all comments
  • খুরশিদ আলম ৮ মে, ২০১৮, ৩:২৪ এএম says : 0
    আর লাশ দেখতে পারছি না
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বগুড়া

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ