পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ফরেন পলিসি : ২০১৭ সালের ৬ জুনের সকালে একগুচ্ছ টুইটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সন্ত্রাসবাদে অর্থায়নের জন্য কাতার সরকারকে অভিযুক্ত করেন। নাশকতা, আল জাজিরা সম্প্রচারকারীদের নোংরামো এবং এ অঞ্চলে সন্ত্রাসী গ্রæপগুলোকে কথিত সাহায্যের অভিযোগে কয়েক বছর ধরে ভর্ৎসনা করার পর এটা ছিল সউদী আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিসরের জন্য একটা অভ্যুত্থান যারা আগের দিন কাতারিদের বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপ করেছিল।
কয়েকমাস ধরে অচলাবস্থা চলার পর এ ব্যাপারে কিছু করা দরকার বলে মনে করেন ট্রাম্প। নিশ্চিত যে সে সময় ট্রাম্প ও উপসাগরীয় নেতাদের মধ্যে কয়েকবার ফোনে কথা হয়। সে সময় ট্রাম্প কাতারের সাথে তাদের সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করার আহবান জানান, তবে এ বিষয়টি হোয়াইট হাউসের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল না।
এখন ট্রাম্প আবার হস্তক্ষেপের জন্য ফিরেছেন, তবে তা শুধুমাত্র ইউ টার্ন বলে মনে হচ্ছে। কাতারিদের ভর্ৎসনার পরিবর্তে, যা তিনি করেছিলেন গত জুনে, প্রেসিডেন্ট তার নয়া নিযুক্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পিওকে মধ্যপ্রাচ্যে পাঠান। পম্পিও সউদী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল জুবেইরকে কাতারিদের সাথে সমস্যা মিটিয়ে ফেলতে বলেন। বলেন, যথেষ্ট হয়েছে।
কী পরিবর্তিত হল? ট্রাম্প প্রশাসন উপলব্ধি করেছে যে ইরানের সাথে তাদের সম্পর্ক শেষ হতে চলেছে। এখন তারা উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদকে (জিসিসি) তাদের পাশে চায়। কাতারের ব্যাপােের ট্রাম্পের পরিবর্তিত সুর নিশ্চিত ভাবে বোঝায় যে অগামী সপ্তাহগুলোতে তিনি ইরানের সাথে পারমাণবিক চুক্তি ছিন্ন করতে মনস্থির করেছেন।
পরিহাস যে সউদী-আমিরাতি-মিসরীয়-বাহরাইনি অবরোধ, যা অন্তর্বর্তী পর্যায়ে একটি আঞ্চলিক বাস্তবতা, কাতারের উল্লেখযোগ্য আর্থিক সম্পদ পানি বাণিজ্যে ব্যবহার করছে। কাতার তার নিজস্ব ডেইরি ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেছে, কাতার এয়ার ওয়েজের ফ্লাইট প্যাটার্ন পুনর্বিন্যস্ত করেছে, তুরস্কের সাথে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করেছে এবং বিশেষ করে অবরোধের প্রথম দিনগুলোসহ ইরান থেকে প্রেরিত খাদ্য গ্রহণ করেছে। চার দেশের এ অবরোধের সাথে এ অঞ্চলের সবাই নেই, এ ক‚টনৈতিক সুযোগটি কাতারের আমির কাজে লাগিয়েছেন।
অবরোধকারী দেশগুলো, যারা এক সময় মনে করেছিল যে কাতারিরা এ অবরোধের ধকল সইতে পারবে না ও অবরোধ অবসানে তাদের আরোপ করা ১৩ দফা শর্ত মেনে নেবে, তারা দোহাকে দীর্ঘমেয়াদীভাবে বিচ্ছিন্ন করার লক্ষ্যে কাজ শুরু করে। এভাবে এ বিরোধ এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যে উভয় পক্ষ পরস্পরকে ভ‚য়া খবর, কৌশলগত তথ্য ফাঁসসহ বিভিন্ন পন্থায় হয়রানি করে চলেছে।
বিরোধ উপসাগর ছাড়িয়ে বাইরেও ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা আছে। তুরস্কসহ সকল গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ই লোহিত সাগর ও আফ্রিকার শৃঙ্গে সক্রিয়। কাতার ও তুরস্ক সম্প্রতি সুদানের সাথে তাদের সামরিক সম্পর্ক উন্নত করেছে যা অস্বস্তিতে ফেলেছে মিসরকে। এ বিষয়টি নীল নদের পানি বন্টন ও অন্যান্য আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে মিসর, সুদান ও ইথিওপিয়ার মধ্যে চলমান বিরোধের ঝুঁকি বৃদ্ধি করতে পারে। লিবিয়া ও তিউনসিয়াতেও তা প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ, অবরোধকারী দেশগুলো ও কাতার পরস্পরের বিরোধী পক্ষকে সমর্থন করে।
মার্কিন প্রশাসনের অভ্যন্তরেও এ বিরোধের প্রভাব পড়েছে। কাতারি ও সউদীরা মার্কিন নীতি প্রণেতা, কংগ্রেস সদস্য ও থিংক ট্যাংকদের প্রভাবিত করতে অকাতরে অর্থ ব্যয় করছে। তবে লবিইস্ট ও পরামর্শকদের এই বাহিনী তাদের মক্কেলদের জন্য তেমন কিছু করে উঠতে পারেনি। ওয়াশিংটনে এ বিষয়ে সাধারণ ঐক্যমত ১১ মাস আগের মতইঃ ‘এ মিত্রদের কেউই যথার্থ নয় এবং কাতারিরাও নিশ্চিত ভাবে ফেরেশতা নয়। তবে তাদের সাথে কিছু অন্য সম্পর্ক আছে যা প্রয়োজনীয়। আর হ্যাঁ, আল উদেইদ বিমান ঘাঁটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
কাতার অবরোধকারী ৪টি দেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিসেবে পম্পিওর নিয়োগে এখন পর্যন্ত খুশি। রিয়াদ ও আবুধাবিতে কর্মকর্তারা পম্পিওর পূর্বসূরী রেক্স টিলারসনকে এ সমস্যার অংশ বলে মনে করেন। তারা মনে করেন যে কাতারের আমির তামিম বিন হামাদের উপর স্ক্রু ঘোরানোর পরিবর্তে টিলারসন প্রেসিডেন্টের রোষ থেকে কাতারিদের রক্ষা করেন যিনি সন্ত্রাসী, তাদের অর্থ দাতা ও ইরানিদের বিরুদ্ধে কঠোর হবেন বলে ঘোষণা করেছিলেন। এটা নিশ্চিত যে কাতারিরা ফেব্রæয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে এক গুচ্ছ সন্ত্রাস দমন ও নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষর করে। এপ্রিলে কাতারের আমির যখন হোয়াইট হাউস সফর করেন তখন তার সাথে ট্রাম্পের সাক্ষাত ইতিবাচক ছিল। কিন্তু পম্পিওর আগমনে কাতারিদের জন্য পরিস্থিতি কঠিন হতে চলেছে।
পম্পিওর দাবি হচ্ছে, ১২ মের আগে উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যকার বিরোধ নিরসন হওয়া প্রয়োজন। তারিখটি গুরুত্বপূর্ণ। এদিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ইরানের বিরুদ্ধে আরোপিত অবরোধ প্রত্যাহার বা পুনঃ আরোপ করতে পারেন।
অবরোধের ব্যাপারে ওয়াশিংটনের বড় উদ্বেগ হচ্ছে যে তা কিভাবে এ অঞ্চলের মধ্যকার বিরোধ ইরানকে মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সক্ষমতাকে প্রভাবিত করবে। এটা এ কারণে নয় যে ক্ষুদ্র কাতার এ বিরোধের মূল খেলোয়াড়। কাতার সব সময়ই ইরানের ব্যাপারে সূ² দৃষ্টি অবলম্বন করেছে। কারণ, উপসাগরের পশ্চিম উপক‚লে অস্থিতিশীলতা আরব উপদ্বীপে অপকর্ম সাধনে তেহরানের জন্য সুযোগ এনে দেবে ।
এ হুমকি তাত্তি¡ক বিষয়ে পরিণত হতে পারে। কাতার বিরোধ ইরানকে শক্তিশালী করেনি। তবে এ অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে যদি ওয়াশিংটন পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে আসে ও তেহরানের বিরুদ্ধে পুনঃ অবরোধ আরোপ করে। এ প্রেক্ষিতে সম্ভাব্য অস্থিতিশীল পরিস্থিতির ক্ষেত্রে মার্কিন প্রশাসন সুস্পষ্টভাবে ঐক্যবদ্ধ উপসাগর চায়। এ রকম হওয়ার কথা নয় যে সউদী আরবের পূর্ব উপক‚লে ইরানি সৈন্যরা অবতরণের জন্য চেষ্টা করবে। তবে ইরানি নাশকতার এবং উপসাগরীয় দেশগুলোকে বিভ্রান্ত ও ভীত করার উদ্দেশ্যে তথ্য যুদ্ধের উল্লেখযোগ্য আশংকা আছে (খোবার টাওয়ারের কথা স্মরণ করুন)। এটা ভালো হবে যে যদি এ সব দেশ পরস্পরের বিরুদ্ধে একই ধরনের কাজে লিপ্ত না হয়। কারণ তা তেহরান ও তার চরদের জন্য পুনরায় আরো সুযোগ সৃষ্টি করবে।
ইরান চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার অঙ্গীকারে ট্রাম্প অনড় থাকার ফলে কাতারিরা পেনাল্টি বক্সের বাইরে। এটা কারো কারো জন্য স্বস্তির হতে পারে, কিন্তু ভবিষ্যতে যা হতে পারে তার জন্য আমির দু:খ করতে পারেন।
*নিবন্ধকার স্টিভেন এ.কুক পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক পরিষদে মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা স্টাডিজের এনি এনরিকো ম্যাট্টেই সিনিয়র ফেলো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।