Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

প্রোস্টেট গ্রন্থির বৃদ্ধি

| প্রকাশের সময় : ৪ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম


সব পুরুষেরই প্রোস্টেট থাকে। এটি মূত্রথলির ঠিক নিচে অবস্থিত। প্রোস্টেট প্রস্রাবের পথ বা মূত্রনালিকে ঘিরে রাখে। মেয়েদের প্রোস্টেট থাকেনা। মধ্যবয়সের পর এই গ্রন্থি বড় হতে শুরু করে। বয়স যত বাড়তে থাকে প্রোস্টেট তত বড় হতে থাকে। অনেকে ভাবেন প্রোস্টেট গ্রন্থি বড় হওয়া মানেই ক্যান্সার। কিন্তু এই ধারণা একেবারেই ভুল। প্রোস্টেট বড় হওয়া মানেই প্রোস্টেট ক্যান্সার নয়।
প্রোস্টেট গ্রন্থি বড় হওয়াকে বলে হাইপারট্রফিক প্রোস্টেট। হাইপারট্রফি মানে কোষের আকারে বৃদ্ধি পাওয়া। প্রোস্টেট গ্রন্থি এভাবে বড় হয়ে গেলে বলে বিনাইন প্রোস্টেটিক হাইপারট্রফি। বিনাইন মানে নিরাপদ বা যা ক্যান্সারের মত বড় ক্ষতি করেনা। যদিও প্রোস্টেট বড় হয়ে গেলে নানারকম সমস্যার সৃষ্টি করে।
প্রোস্টেট বড় হয়ে গেলে বিভিন্ন উপসর্গ থাকে। সবার ক্ষেত্রে কিন্তু একইরকম উপসর্গ থাকেনা। একেকজনের একেক উপসর্গ বেশি থাকে। তবে যেসব উপসর্গ সচরাচর দেখা যায় তার মধ্যে আছেঃ
১। প্রস্রাব করার সময় কষ্ট হওয়া
২। প্রস্রাব শুরু করতে সমস্যা হওয়া
৩। প্রস্রাব করার পর আবার প্রস্রাব হবে এমন অনুভূতি হওয়া
৪। প্রস্রাবের ধারা দুর্বল হওয়া
৫। বারবার প্রস্রাব হওয়া
৬। বারবার প্রস্রাবের পথে ইনফেকশন হওয়া
৭। রাতে বারবার ওঠা
প্রোস্টেট গ্রন্থি বড় হয়েছে কিনা ডায়াগনোসিস করা বেশ সহজ। চিকিৎসক মলদ্বারে আঙুল ঢুকিয়ে পরীক্ষা করেই বুঝতে পারেন। এতে প্রোস্টেট গ্রন্থির আকার এবং কোনো অস্বাভাবিকতা আছে কিনা তা বোঝা যায়। প্রোস্টেটের আল্ট্রাসাউন্ড পরীক্ষা প্রোস্টেট গ্রন্থির বৃদ্ধি ডায়াগনোসিসের জন্যে খুব সহায়ক। প্রোস্টেট গ্রন্থির সঠিক মাপ জানতে এবং কোনো ক্যান্সার আছে কিনা জানার জন্যে আল্ট্রাসাউন্ড অপরিহার্য । এছাড়া প্রস্রাবের পরীক্ষা ও পিএসএ নামে আরেকটি পরীক্ষা অনেকসময় চিকিৎসক দিয়ে থাকেন। প্রস্রাব করার পর মূত্রথলিতে প্রস্রাব রয়েছে কিনা তা নির্ণয় করতে পিভিআর করা হয়। এটি করা হয় সাধারণত আল্ট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে। বেশিরভাগ পরীক্ষা আমাদের দেশে প্রায় সব জায়গাতেই হয়।
প্রোস্টেট বড় হয়ে গেলে বিভিন্ন চিকিৎসা আছে। সাইজের ও সমস্যার উপর ভিত্তি করে চিকিৎসা করা হয়। কার জন্যে কি চিকিৎসা লাগবে তা একজন ইউরোলোজিসট ঠিক করবেন। কারও কারও ওষুধেই কাজ হয়। আবার অনেকের অপারেশন লাগে। বর্তমানে অনেক আধুনিক পদ্ধতিতে অপারেশন করা হয়। সুতরাং ভয়ের কিছুই নেই। এখন যেসব অপারেশন হয় সেখানে মূত্রপথ দিয়ে একটা যন্ত্র ঢুকিয়ে প্রোস্টেট পর্যন্ত যেয়ে যেখানে প্রস্রাবের গতি বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে সেখানকার অতিরিক্ত টিস্যু কেটে ফেলা হয়। শরীরের বাইরে কোনো কাটাছেঁড়া করা হয় না। হাসপাতালে সাধারণত কয়েকদিন থাকার প্রয়োজন হয়। বর্তমানে লেজার সার্জারিও হচ্ছে। তাই প্রোস্টেট বড় হলে ভয়ের কিছু নেই।

ষ ডাঃ মোঃ ফজলুল কবির পাভেল

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন