পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কী খাব? নিরাপদ কোনো খাবার আদৌ কী আছে? ঝাল চানাচুরে মবিল, আইসক্রিমে লেদার রং, ঝাল মুড়িতে ইউরিয়া-হাইড্রোজ, পানিতে আর্সেনিক, শসাতে ফরমালিন ও বিষাক্ত কেমিক্যাল, ভেজাল খাবার খেয়ে আমরা জাতিকে ক্রমাগত মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছি, নতুন প্রজন্মকে মেধাহীন পগুত্ব জীবনের মতো এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাচ্ছি।
কুমিল্লা থেকে তিশা পরিবহনের একটি যাত্রীবাহীবাসে ঢাকা ফিরছিলেন দুই বন্ধু। দু’জনেই পাশাপাশি সিটে বসে কথা বলছিলেন। ঢাকার পথে চান্দিনা এসে বাসটি কয়েক মিনিটির জন্য যানজটে আটকা পড়েন। তখনই ৪০/৪৫ প্যাকেট খিরা নিয়ে বাসে উঠলো একজন হকার। তৃৃষ্ণার্ত মুখে আকর্ষণ তৈরির মতো কচি, সবুজ কয়েক প্যাকেট খিরা হাতে তার। হকারের কাছ এক প্যাকেট খিরা চাইতেই এক বন্ধু অপর বন্ধুকে বলছেন আরে এসব খিরা খাইয়ো না, এগুলোতে রং দেওয়া। এক বন্ধু আরেক বন্ধুকে বিশ্বাসই করাতে পারছিল না খিরা’তে যে রং দেয়ার ব্যাপারটি। দুই বন্ধুর কথা শেষ হতে না হতেই হকারও কোনো রাখঢাক না করে বলল, জ্বী স্যার রং দিসি, মিছা কথা কমু না। তখন এক বন্ধু অপর বন্ধুকে বলেছিল তাহলে আমারা খাদ্য খাইনা, বরং বিষ খাচ্ছি।
হকার আল-আমিন। দীর্ঘদিন ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে যাত্রীবাহী বাসে শসাসহ মৌসুমি ফল বিক্রি করেন। বাসের পেছন অংশ থেকে শসা বিক্রি করে আল-আমিন যখন সামনের অংশে আবার আসে তখন তার সাথে কথা বলতে চাইলে হকার আল-আমিন বলেন স্যার কথা বলার সময় নাই। এখনো অনেক মাল পড়ে আছে, বিক্রি দুপুর দুইটার মধ্যে করতে হবে বলতে বলতে তাড়াহুড়া করে বাস থেকে ছুটে নেমে চলে গেল। চারদিকে প্রচন্ড গরম পড়ছে। ভাবছেন এই গরমে তরমুজ খেয়ে প্রাণ জুড়াবেন? বাজারে যে তরমুজ পাওয়া যায় তার বেশিরভাগই ক্ষতিকর। ভোরবেলা তরমুজের ভেতরে সিরিঞ্জে করে ক্ষতিকর এরিথ্রোসিন-বি ও স্যাকারিন পুশ করে লাল ও মিষ্টি বানিয়ে সেই তরমুজ রাস্তাঘাটে বিক্রি করা হয়। এ শুধু তরমুজেই নয়, সড়কের পাশে বা হাতে করে গাড়ীর যাত্রীদের কাছে বিক্রি করা আমড়া, শসা, এমনকি শরবতেও মেশানো হচ্ছে ক্যামিকেল। ফলগুলোকে টাটকা ও তাজা রাখতে ফরমালিন ব্যবহার করা হচ্ছে।
খাদ্যে নানান রকম ভেজালের কথা এতদিন শোনা গেলেও এভাবে তৃণমূল ব্যবসাতে খিরা-শসা-আমড়ায় রং মেশানোর কারণ অনুসন্ধানে চলে আসে অনেক না অজানা কাহিনী। গত কয়েক দিনে ঢাকা থেকে কুমিল্লা মহাসড়কের বিভিন্ন রোডে চলাচলরত যাত্রীবাহী বাসে যে সব খাবার বিক্রি করা হচ্ছে সেসব খাবারে বিষাক্ত রং মিশিয়ে দেদারসে বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানায় হকার আনোয়ার। হকার অনোয়ার জানায়, কুমিল্লার চান্দিনা, গৌরীপুর রাজধানীর যাত্রাবাড়ি, সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রং মাখানো খিরা, শসা, আমড়া বিক্রির বেশ কয়েকটি আড়ত গড়ে উঠেছে। সেসব আড়তে সারা দিনে কয়েক মন শসা, খিরা, আমড়া দিনে কাটা হয়। এরপর বড় কোনো পাত্রে মিষ্টি রং মিশিয়ে রাখা হয়। হকাররা সেসব আড়ত থেকে প্রতি প্যাকেট ৫ টাকা দরে এসব শসা-খিরা-আমড়া কেনেন। তারপর যাত্রীদের কাছ থেকে বিক্রি করেন ১০ টাকা দরে প্রতিটি প্যাকেট। আনোয়ার জানান, ছোট এক বালতিতে আধা বালতি পানিতে এক চিমটি কমলা রং বালতির পানিতে ছাড়ার সাথে সাথে পানির রং গাঢ় সবুজ আকার ধারণ করে। তাতে কাটা কয়েকটি শসা দিয়ে আবার সাথে সাথে তুলে নেত্তয়া হয়। এভাবেই কয়েক সেকেন্ড রং পানিতে চুবিয়ে নিলে ৫/৬ ঘণ্টা এই শসা তাজা সতেজ ও তুলনামূলক একটু শক্ত থাকবে। মাঠের এই অনুসন্ধান ধরে কথা হয় ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে চলাচলকারী কুমিল্লার এক শিক্ষাবিদ প্রিন্সিপাল আতিকুর রহমানের সাথে। তিনি দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত সড়কে চলাচলকরার সময় যেসব খাবার হকারদের কাছ থেকে খাবার গ্রহণ করি তার মধ্যে রয়েছে ভেজাল। খাদ্যে ভেজাল মেশানোর প্রক্রিয়াও এখন ব্যতিক্রমধর্মী। ভোক্তা সাধারণের চোখে ফাঁকি দিয়ে কীভাবে ভোজাল মেশানো যায় সেদিকে বেশি নজর রাখছেন এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীরা। যে খাদ্যে যে ধরণের ভেজাল মেশালে সহজে চোখে ধরা পড়ার কোনো সুযোগ নেই সেদিকেই নজর রাখা হচ্ছে চক্রান্তকারীরা। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের চোখে ফাঁকি দিয়েই চলছে এসব কাজ। অন্যন্য খাদ্যদ্রব্যে দেয়া হচ্ছে বিষাক্ত কেমিক্যাল। মানুষের শরীরে এইসব রং কি ধরনের ক্ষতি করতে পারে জানতে চাইলে শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার জসীম উদ্দিন দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, এ ধরনের রং থেকে, কিডনির সমস্যাসহ লিভারের জটিল রোগ শরীরের নানান রকম মৃত্যুঘাতী রোগ হতে পারে। এই রং শরীরে ঢুকে ক্যান্সারের মতো ভয়াবহ রোগের জন্ম দিতে পারে। তাছাড়া টায়ফয়েড, জন্ডিসের মতো রোগ হওয়া খুবই স্বাভাবিক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।