Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হিমালয়ের মধ্য দিয়ে ভারত-চীন-নেপাল অর্থনৈতিক করিডোর নির্মাণের প্রস্তাব

| প্রকাশের সময় : ২০ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

টাইমস অব ইন্ডিয়া : চীন বুধবার হিমালয়ের মধ্য দিয়ে বহুমাত্রিক যোগাযোগসহ ভারত-চীন-নেপাল অর্থনৈতিক করিডোর নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছে। নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির নেতৃত্বাধীন সরকারের উপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টার পাশাপাশি এ প্রস্তাব দেয় হল। অলিকে চীনপন্থী বলে গণ্য করা হয়।
নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদীপ কুমার গিয়াওয়ালির বেইজিং সফরের সময় চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রী ওয়াং ই এ প্রস্তাব দেন।
বৈঠকের পর গিয়াওয়ালির সাথে যৌথ সংবাদ ব্রিফিংয়ে ওয়াং বলেন, চীন ও নেপাল হিমালয়ের মধ্য দিয়ে বহুমাত্রিক যোগাযোগ নেটওয়ার্কের এক দীর্ঘমেয়াদী রূপকল্পের ব্যাপারে সম্মত হয়েছে। সাম্প্রতিক নির্বাচনে নেপালে অলি সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর গিয়াওয়ালি প্রথম বারের মত বেইজিং সফরে গেছেন।
ওয়াং বলেন, চীন ও নেপাল ইতোমধ্যেই চীনের শত কোটি ডলারের বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগ (বিআরআই) বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে যার মধ্যে যোগাযোগ সহযোগিতাও রয়েছে। এতে রয়েছে যোগাযোগ নেটওয়ার্ক এবং বন্দর, রেলপথ, বিমান চলাচল, বিদ্যুত ও যোগাযোগ সংযোগের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী রূপকল্প। তিনি বলেন, এ ধরনের সুপরিকল্পিত সংযোগ নেটওয়ার্ক চীন, নেপাল ও ভারতকে যুক্ত করে একটি অর্থনৈতিক করিডোরের পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে।
ওয়াং বলেন, এ ধরনের সহযোগিতা তিনটি দেশের সকলের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি অর্জনে ভূমিকা রাখবে।
গিয়াওয়ালির চীন সফর সম্প্রতি ভারতে প্রধানমন্ত্রী অলির প্রথম সফরের পাল্টা ভারসাম্য রক্ষার উদ্দেশ্যে কিনা প্রশ্ন করা হলে ওয়াং ভারত, চীন ও নেপালে মধ্যে ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতার লক্ষ্যে বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বেইজিং ও নয়াদিল্লীর এ সুবিধা ব্যবহার করা উচিত। ওয়াং বলেন, চীন, ভারত ও নেপাল স্বাভাবিক বন্ধু ও অংশীদার। আমরা নদী ও পাহাড় দ্বারা সংযুক্ত প্রতিবেশি। বিশে^ ও তিন দেশের অভ্যন্তরে যতই পরিবর্তন ঘটুক না কেন, এ বাস্তবতার কোনো পরিবর্তন হবে না।
তিনি বলেন, নেপালের উন্নয়নের প্রতি সমর্থন বিষয়ে চীন ও ভারতের মধ্যে অভিন্ন সমঝোতা থাকা উচিত। দু’টি প্রধান উদীয়মান অর্থনীতি হিসেবে তার সুফল চীন ও ভারত প্রতিবেশি নেপালকে তার উন্নয়নের জন্য প্রদান করবে।
পক্ষান্তরে নেপালকে তার ভূরাজনৈতিক সুবিধা কাজে লাগানো এবং বৃহত্তর উন্নয়নে চীন ও ভারতকে যুক্ত করা উচিত। নেপাল চীন ও ভারতের সহযোগিতার স্বাভাবিক সুবিধাভোগী। আমি মনে করি এ যৌক্তিক প্রত্যাশাটি চীন ও ভারতের সমর্থন করা উচিত।
ব্যাপকভাবে চীনাপন্থী বলে পরিগণিত প্রধানমন্ত্রী অলি তার বিগত মেয়াদে ২০১৬ সালে চীনের সাথে একটি ট্রানজিট চুক্তি স্বাক্ষর করেন যা স্থল বেষ্টিত নেপালের পণ্য ও জ¦ালানির জন্য ভারতের উপর বহু দশকের একচেটিয়া নির্ভরতার অবসান ঘটায়। এরপর চীন নেপালের ব্যাপারে প্রো-অ্যাকটিভ উদ্যোগ গ্রহণ করে। ওয়াং তিব্বতের ভেতর দিয়ে নেপালের সাথে রেল যোগাযোগ প্রতিষ্ঠায় আগ্রহ প্রকাশ করেন। চীন তিব্বতে রেলরাইন নির্মাণ করছে।
তিনি বলেন, গিয়াওয়ালি তাইওয়ান ও তিব্বতকে চীনের অংশ হিসেবে স্বীকার করে নিয়ে এক চীন নীতির প্রতি দৃঢ় সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।
তিব্বতী উদ্বাস্তুদের দালাইলামার সাথে সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে নেপালের ভেতর দিয়ে ধর্মশালায় গমন বন্ধের প্রসঙ্গ টেনে ওয়াং বলেন, নেপাল চীন বিরোধী কর্মকান্ডে তার ভূখন্ড ব্যবহার করতে না দিতে সম্মত হয়েছে।
গিয়াওয়ালি বলেন, নেপাল চীনের সাথে ঝামেলা বিহীন ও ঝামেলা মুক্ত সম্পর্ককে মূল্য দেয়।
ওয়াং-এর সাথে আলোচনায় গিয়াওয়ালি বলেন, উভয়পক্ষই ট্রানজিট পরিবহন চুক্তি, অলির প্রথম সফঢরের সময় স্বাক্ষরিত চীন-নেপাল মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির যৌথ সম্ভাব্যতা জরিপ ব্যাপকভাবে পর্যালোচনা করেছে।
তিনি বলেন, ট্রানজিট বাণিজ্য চুক্তির খসড়া প্রটোকলের ব্যাপারে আমরা মত বিনিময় করেছি এবং তা দ্রæত চূড়ান্ত করতে আগামীতে আলোচনা জোরদার করতে সম্মত হয়েছি।
গিয়াওয়ালি বলেন, আমরা বিআরআই সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা স্মারক বাস্তবায়নে অভিন্ন মত পোষণ করি। অবকাঠামো উন্নয়ন, রেলপথ ও সড়কপথের মাধ্যমে আন্তঃসীমান্ত যোগাযোগ বৃদ্ধি, বাণিজ্য ও পর্যটন উন্নয়ন এবং জনগণ থেকে জনগণ পর্যায়ে যোগাযোগের ক্ষেত্রে এ উদ্যোগ ভূমিকা রাখবে বলে নেপাল আশা করে।



 

Show all comments
  • বিপ্লব ২০ এপ্রিল, ২০১৮, ৪:২০ এএম says : 0
    অত্যান্ত ভলো উদ্যোগ
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ