পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজশাহী ব্যুরো : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন বলেছেন, আগামী নির্বাচন হবে গণতন্ত্রের মুক্তি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, স্বৈরশাসন থেকে জনগণের মুক্তির নির্বাচন। আর তা হতে হবে সবার অংশগ্রহন মূলক নিরপেক্ষ সরকার আর সেনাবাহিনী মোতায়েনের মাধ্যমে। ২০ দল জোট এবং জোট ওদেশনেত্রী মাদার অব ডেমোক্রেসী বেগম খালেদা জিয়ার অংশগ্রহনে তা হতে হবে। অন্যথায় জনগণ তা মেনে নেবে না। অন্যকোন ষড়যন্ত্রের নির্বাচন জনগণ কঠিন আন্দোলনের মাধ্যমে রুখে দেবে। সে ব্যাপারে বিএনপির সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে থাকতে হবে। সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে ছাত্ররা একটা নোটিশ দিয়েছে। এবার জনগণ মাঠে নামলে আওয়ামী লীগ পালাবার পথ পাবে না। আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। এ কারনে আওয়ামী লীগ নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। বেগম জিয়া তথা বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখার কুটকৌশলে নেমেছে। এসব করে লাভ হবে না। দেশে আর ৫ জানুয়ারীর মত ভোটারবিহীন, বিএনপি বিহিন নির্বাচন করার সুযোগ দেবেনা জনগণ। জনগণ ক্ষুব্ধ। তিনি গতকাল বিকেলে রাজশাহীর ভুবনমোহন পার্কে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা ও ফরমায়েশী রায় দেবার প্রতিবাদে রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশে এসব কথা বলেন।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মঈন খান , নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইসচেয়ারম্যান বরকতুল্লাহ বুলু, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ব্যারিষ্টার আমিনুল হক, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক মন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, যুগ্ম মহাসচিব হারুনার রশিদ, সাবেক এমপি নাদিম মোস্তফা, চাটমোহরের সাবেক এমপি আনোয়ারুল ইসলামসহ রাজশাহী বিভাগের আটজেলার নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন রাজশাহী মহানগর সেক্রেটারী শফিকুল হক মিলন।
প্রধান অতিথির ভাষনে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকার বলে বিএনপির নাকি জন ভিত্তি নেই, সংগঠন নেই। অথচ তারা বিএনপিকে ভয় পায়। কারন বিএনপি এদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল। সরকার ভয় পায় বলে বিএনপিকে বড় বড় ময়দানে সমাবেশ করতে দেয়না। রাস্তায় নামতে দেয়না। রাজশাহীতে ছোট পরিসরে বড় সমাবেশ করতে হচ্ছে। সমাবেশ করার কথা ছিল মাদরাসা ময়দানে। কিন্তু অনুমতি মিলেনি। ভুবনমোহন পার্কের বাইরের রাস্তায় রাস্তায় জনতার অবস্থান সেটি বলে দিচ্ছে। পদে পদে অনেক বাধা বিপত্তি উপক্ষো করে জনগণ সমাবেশে যোগ দিয়েছে। এ সমাবেশ গনতন্ত্রের মা দেশনেত্রীর মুক্তির জন্য। মিথ্যে সাজানো মামলায় রায় দিয়ে নির্জন পরিত্যাক্ত কারাগারে আটকে রেখেছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর পর বিডিআর বিদ্রোহের নামে দেশের চৌকস সেনা অফিসারদের হত্যা করেছে। দেশে খুন, গুম আর লুটপাটের রাজ্য পরিনত হয়েছে। জনগণ এসবের বিচার চায়। সুযোগ পেলে জনগণ যে রায় দেবে তা আওয়ামীলীগ সহ্য করতে পারবেনা। আজ তারা জনবিচ্ছিন্ন। মির্জা আব্বাস রাজশাহীর ভুবনমোহন পার্কের অতীত তুলে ধরে বলেন এক সময় এ পার্কে বর্তমান কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী শেখ মুজিবের চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বাজানোর ঘোষনা দিয়েছিলেন। সেই মতিয়া এখন শেখ হাসিনার আঁচলের তলায় মন্ত্রী। কদিন আগে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দিয়েছেন। প্রশ্ন করেন তিনি কোথায় মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। আওয়ামীলীগ সর্বত্র লুটপাটে ব্যাস্ত। এখন তারা ট্রেনের টিকিট পর্যন্ত কালোবাজারী করছে।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, চারিদিকে শ্লোগান উঠেছে মাদার অব ড্রেমোক্রেসি খালেদা জিয়া মুক্তি পাক। শেখ হাসিনা নিপাত যাক। পুলিশ বাহিনীর অতিউৎসাহী সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন জনগণের শক্তির কাছে কোন পেটোয়া বাহিনী টিকে থাকতে পারেনি এরাও পারবেনা। অতএব সময় থাকতে সাবধান।
আব্দুল মঈন খান বলেন, আমি পরিকল্পনা মন্ত্রী আর মিনু মেয়র থাকাকালে পিছিয়ে পড়া রাজশাহী উন্নয়নের কাজ শুরু হয়। উন্নয়নের কারনে এ অঞ্চলের মানুষ বার বার বিএনপিকে ভোট দিয়েছে। বিএনপি এমন একটি দল যার প্রতিষ্ঠাতা স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। যিনি বহুদলীয় গনতন্ত্র ও উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক মুক্তি দিয়েছিলেন। তার আদর্শকে এগিয়ে নিতে বেগম খালেদা জিয়া এগিয়ে চলেছেন। আজ সেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দী। তাকে মুক্তির জন্য সবাইকে রাজপথে নামতে হবে। নজরুল ইসলাম খান কথা পরিস্কার বেগম খালেদা জিয়া ছাড়া কোন নির্বাচন হবেনা। প্রত্যেক নির্বাচনে যে নেত্রী বার বার সবকটি আসনে জনগণের বিপুল রায় নিয়ে নির্বাচিত হয়। তাকে কারাগারে বেশীদিন আটকে রাখা যাবেনা।
বরকতুল্লাহ বুলু বলেন, দেশের গণতন্ত্র মানবিধকার লুট হয়ে গেছে। জণগনের আন্দোলনের মাধ্যমে লুট হওয়া গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়া বহুদলীয় গণতন্ত্র আর উন্নয়ন দিয়েছিলেন। সেই জিয়ার যোগ্য সহধর্মীনি বেগম জিয়া আজ আপোষহীন নেত্রী। পাশে রয়েছেন তাদের সুযোগ্য সন্তান বাংলার গর্ব তারেক রহমান। জনগন তাদের সাথে রয়েছে। এদের মামলা আর ফরমায়েসী রায় দিয়ে দমিয়ে রাখা যাবেনা। স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের পতন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
মিজানুর রহমান মিনু বলেন, আজকের এই বিশাল সমাবেশ প্রমান করে দিয়েছে রাজশাহী অঞ্চলের মাটি বিএনপির দূর্জয় ঘাটি। একে কোন দুবৃত্ত লুটে নিতে পারবেনা। সুষ্টু নির্বাচন হলে সবকটি আসন আগের মতই বিএনপির ঘরে যাবে। সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক মন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, দেশে আজ গণতন্ত্র বাক স্বাধীনতা সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বলে কিছু নেই। আইনের শাসনও নেই। বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে হাজার হাজার মামলা দিয়ে হয়রানী আর নির্যাতন করা হচ্ছে। এসব করে সরকার তার শেষ রক্ষা করতে পারবেনা।
সভাপতির ভাষনে সিটি মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, শত বাধা বিঘেœর মধ্যেও আজকের বিশাল সমাবেশ প্রমান করে দিয়েছে বিএনপির আছে আর চিরকাল থাকবে জনগনকে সাথে নিয়ে। সমাবেশ সফল করার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানান। ভুবোনমোহন পার্কের ছোট পরিসরে মঞ্চে নেতৃবৃন্দ। মাঠে মহিলাদলের কর্মী এককোনে মিডিয়া কর্মীদের অবস্থানে মাঠ কানায় কানায় ভরে যায়। আশেপাশ্বের ভবনের ছাদে আর আশেপাশ্বের রাস্ত ছিল কানায় কানায় ভরা। রাজশাহী বিভাগের আট জেলা থেকে সকাল থেকে নেতাকর্মীরা আসতে থাকে নগরীতে। দুপুরের পর পরই আশপাশ ভরে যায়। সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টের রাস্তা ব্যারিকেড দিয়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ অবস্থান নেয়। আশেপাশ্বের পয়েন্ট সমূহে ছিল সর্তক পুলিশী অবস্থান। এর মধ্যেদিয়ে অনুষ্ঠিত হয় বিভাগীয় সমাবেশ। চারিদিকে একই শ্লোগানে মুখরিত আমার নেত্রী আমার মা বন্দী থাকতে দেবনা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।