পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মো. শামসুল আলম খান, ময়মনসিংহ থেকে : ময়মনসিংহ পৌরসভা থেকে সিটি কর্পোরেশনে উন্নীত হবার মধ্যে দিয়ে নতুন স্বপ্ন বুনছেন নগরীর বাসিন্দারা। ময়মনসিংহ পৌরসভার শেষ মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে গত ৯ বছরে নানা অব্যবস্থাপনা, দুর্ভোগ আর সমস্যাকে বিদায় করেছেন তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা মো: ইকরামুল হক টিটু। নিজের ঐকান্তিক কর্মপ্রয়াসের মধ্যে দিয়ে বহু বছরের অবহেলায় মৃতপ্রায় এ নগরীতে প্রাণ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছেন।
শুধু তাই নয়, গত ৯ বছরে নগরবাসীকে প্রায় ৩শ’ কোটি টাকার মতো দুই শতাধিক উন্নয়ন প্রকল্প উপহার দিয়েছেন। দীর্ঘদিনের প্রধান সমস্যা পানিবদ্ধতা দূরীকরণে নিয়েছেন কার্যকরী উদ্যোগ। এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন হওয়ায় সুফল ভোগ করছে নগরীর লাখ লাখ বাসিন্দা। তাঁর নেতৃত্বেই অপরিচ্ছন্ন নগরীর বদনাম থেকে এ নগরকে বের করে এনে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নগরীকে দেশের মডেল নগরে পরিণত করেছেন। নাগরিক সেবাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রায় ৬০ কিলোমিটার নতুন সড়ক নির্মাণ করেছেন। নগরীকে পরিচ্ছন্ন রাখতে রাতের বেলায় আবর্জনা অপসারণের উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। ফলে সাত-সকালে নগরবাসী পাচ্ছেন পরিচ্ছন্ন এক নগরী। ইতিবাচক এ উদ্যোগ প্রশংসা কুড়িয়েছে নগরবাসীর।
মেয়র ইকরামুল হক টিটু কতটা সফল? এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়রের কট্টর সমালোচকরাও প্রশংসাবাক্য শোনান। কর্মগুণে অনন্য, নাগরিক বাসিন্দাদের দুঃখ-দুর্দশার প্রতি সহানুভূতিশীল, প্রজ্ঞাবান ও নেতা হিসেবে যোগ্য ময়মনসিংহ পৌরসভার এ শেষ পৌর পিতাকেই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রথম নগর পিতা হিসেবে দেখতে চান নাগরিকরা। তাদের ভাষ্যে, নাগরিক সমস্যা সমাধানে আন্তরিক, প্রতিশ্রæতিশীল, জনবান্ধব, নিষ্ঠাবান এ জনপ্রতিনিধিকেই নগর পিতার আসনে মানায়। ইনকিলাবের সঙ্গে আলাপকালে এমন অভিমতের কথা জানিয়েছেন ময়মনসিংহের বিশিষ্ট নাগরিকরা।
জানা যায়, প্রাচীন পুরাতন ময়মনসিংহ নগরীতে পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগাতে সক্ষম হয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র মো: ইকরামুল হক টিটু। সততা ও জনকল্যাণকর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে অবিচল থেকেছেন। অনেকেই তার নামের শেষে যোগ করেন, কাজের কাজ করার মতো মানুষ। মেয়র টিটু বলার পাশাপাশি নিজের দেয়া কথা রাখার ব্যপারেও খুব আন্তরিক। সেটা তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন পৌর পিতার চেয়ারে বসার পর থেকেই।
এক সময় বসবাসের অযোগ্য নগরীর তালিকায় তলানীতে থাকা এ নগরীর দায়িত্ব তার কাঁধে, সেই দুর্নাম ঘোচানোর দায় মাথায় নিয়ে তিনি কাজে নেমেছিলেন আঁটঘাট বেঁধে। এ জনপ্রতিনিধির আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তা তাকে ব্যক্তি ও দলের ঊর্ধ্বে দিয়েছে বিশেষ স্থান।
উন্নয়নের মিশন মেয়র টিটু’র
ময়মনসিংহ পৌরসভার দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে, গত ৯ বছরে ময়মনসিংহ নগরবাসীকে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার মতো দুই শতাধিক উন্নয়ন প্রকল্প উপহার দিয়েছেন বর্তমান মেয়র ইকরামুল হক টিটু। তিনি আদল দিয়েছেন ব্রক্ষপুত্র নদছোঁয়া জয়নুল উদ্যানকে। আধুনিকতার মিশেলে বিপিন পার্কও সৌন্দর্য্য বর্ধনের দৃষ্টান্ত হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।
জয়নুল উদ্যানে রয়েছে মিনি চিড়িয়াখানা, শরীরচর্চা ও শিশু বিনোদন কেন্দ্র, দু’টি মঞ্চ, মহিলাদের নামাজের স্থান, পাঠাগার, পাবলিক টয়লেট, ফোয়ারা, বাগান, হাঁটার পথসহ হরেক রকমের গাছগাছালি।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন প্রয়াত অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম। কীর্তিমান এ রাজনীতিকের স্মরণে নগরীর টাউন হল মোড় এলাকায় প্রথম নির্মিত হয় শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্কয়ার। এ স্কয়ার নির্মাণের মধ্যে দিয়ে বিউটিফিকেশনের যুগে প্রবেশ করে ময়মনসিংহ নগরী। মেয়র টিটু তখন ছিলেন ভারপ্রাপ্ত মেয়র।
এরপর নির্বাচনে ব্যালট বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে পৌর পিতার পদে আসীন হয়ে মেয়র টিটু পাটগুদাম র্যালীর মোড়কে নামকরণ করেন ‘বিজয় ৭১’। ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ মুক্ত দিবসে মুক্তিযোদ্ধা জনতার বিজয় র্যালির সূচনা হয়েছিল এ মোড় হয়েই। এখানেই মেয়র টিটু গড়েছেন অনুপম স্থাপত্য ভাস্কর্য।
ময়মনসিংহের প্রথম শহীদ মিনার স্থাপিত হয়েছিল ময়মনসিংহ পৌরসভা মোড়ে। কালের কপোলতলে এ ইতিকথা হারিয়ে যেতে বসেছিল। নান্দনিক রূপ দিয়ে তা ফিরিয়ে এনে নির্মাণ করা হচ্ছে প্রথম শহীদ মিনার স্মারক। এর নামকরণ করা হয়েছে ‘স্মৃতি অ¤øান’।
নগরীর প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত গাঙ্গিনারপাড় মোড়। এ মোড়ের নামকরণ করা হয়েছে ‘শাপলা স্কয়ার।’ গাঙ্গিনারপাড় মোড়ে প্রায় দেড়শ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী পানির ট্যাংকের নিচে নুড়ি পাথরের সামনে বসানো হয়েছে ঝিনুক। দু’পাশে দু’টি সাদা বক। তার সঙ্গেই রয়েছে এনসিসি ব্যাংকের সৌজন্যে এটিএম বুথ। নান্দনিকতার ছোঁয়ায় এ মোড়কেও বদলে দিয়েছেন মেয়র টিটু।
নগরীর নতুন বাজার এখন পায়রা চত্বর। এ মোড়ে বসানো হয়েছে শান্তির প্রতীক পায়রা চত্ত¡র ভাস্কর্য। নান্দনিকতার আদলে গড়া এ পায়রা চত্বরকে মেয়র টিটু উৎসর্গ করেছেন ময়মনসিংহের প্রয়াত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মোতাহার হোসেন বাচ্চুকে।
ঐতিহ্যবাহী ময়মনসিংহ জিলা স্কুল থেকে মাত্র কয়েক গজ দূরে নগরীর পুরাতন ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় শিক্ষার শেকড় এবং চরপাড়া মোড় এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে ‘টাইম স্কয়ার।’ রাতের চরপাড়া মোড় এ টাইমস স্কয়ারের বর্ণিল আলোচ্ছটায় হয়ে উঠছে অপরূপা।
সূত্র জানায়, মেয়র টিটুর সময়ে গত ৯ বছরে ৬ হাজার বেকার পুরুষ ও মহিলাকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যেই এর সুফল লাভ করেছে হাজার হাজার পরিবার। এ সময়টাতেই তিনি সাড়ে ১০ হাজার অসহায় ও দরিদ্র পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন। শুন্য হাতে তার কাছ থেকে ফিরে আসার কোন নজির নেই এ সময়ে।
পরিচ্ছন্ন সবুজ নগরী গড়তে মেয়র গুরুত্বারোপ করেন। অপরিচ্ছন্ন শহরের বদনাম থেকে শহরটিকে বের করে আনার উদ্যোগ ফলপ্রসু হয়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় এ নগরীকে দেশের মডেল নগরে পরিণত করেছেন। তার হাত ধরেই ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নেও মডেল এখন সংস্কৃতির এ নগরী।
নগরীর প্রধান সড়কের দুই পাশের ড্রেনগুলোর উন্নয়নসহ সড়কের নিচে ২৫ টি বৃহৎ পাইপ ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া সড়কের নিচে ৮০ কিলোমিটার পাইপ ড্রেন ও আরসিসি ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে। এর সুফল ভোগ করছেন লাখ লাখ বাসিন্দা।
বিশিষ্ট নাগরিকদের প্রত্যাশা
ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের নগর পিতা’র চেয়ারে কে বসবেন এ নিয়ে চূলচেরা বিশ্লেষণ চলছে নাগরিক মহলে। পৌরসভার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে গত ৯ বছরে ময়মনসিংহ নগরীর খোলনলচে পাল্টে দেয়া ইকরামুল হক টিটুকেই প্রথম সিটি মেয়র হিসেবে প্রত্যাশা এখানকার বিশিষ্ট নাগরিকদের। ইনকিলাবকে এমন কথাই জানিয়েছেন তারা।
ময়মনসিংহ জেলা নাগরিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী নুরুল আমিন কালাম বলেন, গত ৯ বছরে নগরবাসীকে মুঠো মুঠো উন্নয়ন উপহার দিয়েছেন মেয়র টিটু। ময়মনসিংহের সৌন্দর্য, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য তিনি ফিরিয়ে এনেছেন। আলোকিত ও গতিশীল নগরী উপহার দিয়েছেন। বিপর্যস্ত নগরবাসীকে পানিবদ্ধতার শেকলমুক্ত করেছেন। প্রতিশ্রæতির ফুলঝুরি নয়, কথার সঙ্গে কাজের অপূর্ব সমন্বয় ঘটিয়েছেন। এমন জনপ্রতিনিধিকেই আমরা প্রথম সিটি মেয়র হিসেবে চাই।
ময়মনসিংহ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট পিযুষ কান্তি সরকার বলেন, ময়মনসিংহ পৌরসভার ইতিহাসে প্রশাসক বা মেয়র অনেক এসেছেন। কেউ বছরের পর বছর গদিতে বসে ছিলেন। কাজের কাজ কিচ্ছু হয়নি। কিন্তু মেয়র ইকরামুল হক টিটু উন্নয়নের গতিধারায় ময়মনসিংহ নগরীকে বদলে দিয়েছেন। উন্নয়নের এ ধারাবাহিকতা অক্ষুণœ রাখতেই তাকেই মেয়রের সিটে দেখতে চাই।
ময়মনসিংহ স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সাধারণ সম্পাদক এইচ.এ.গোলন্দাজ তারা বলেন, পানিবদ্ধতা সমস্যার সমাধান, বিউটিফিকেশন ও পরিকল্পিত উন্নয়ন উপহার দিয়ে ভোটারদের গুডবুকে রয়েছেন মেয়র টিটু। তিনি নগরবাসীকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন। আবার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নও করেছেন। বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে আধুনিকায়ন করেছেন। নগর পিতার সিটে তাকেই মানায়।
ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজের সহ-সভাপতি শঙ্কর সাহা বলেন, নগরবাসীর দু:খ-দুর্দশা ঘুচাতে, জীবন যাপনে স্বস্তি আনতে ঝামেলা আর জঞ্জালমুক্ত নগর হিসেবে ময়মনসিংহকে গড়ে তুলতে মেয়র টিটু’র নিষ্ঠা ও প্রশ্নাতীত আন্তরিকতা দেখেছি। তাঁর হাত ধরেই অনেক পরিবর্তন এসেছে। ভবিষ্যতেও পরিবর্তনের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে আমাদের প্রত্যাশা ভোটাররা তাকেই ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।