নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক খেলা মাঠে গড়ায়না অনেক বছর ধরেই। ঘরের মাটিতে মুশফিকের জ্বলে ওঠার একমাত্র মঞ্চ ঘরোয়া ক্রিকেট। নিয়মিত ভাবেই এই মাঠে খেলেছন মুশফিক। তবে এবারের বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ একটু বেশিই সুপ্রসন্ন সাবেক এই টেস্ট অধিনায়কের প্রতি। ঘরোয়া লিগের ম্যাচ ঠিকই অনুষ্ঠিত হয় এখানে। বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে (বিসিএলে) নিজের ঘরের মাঠে সেঞ্চুরি করেছেন বগুড়ার ছেলে মুশফিকুর রহিম।
২০১৫ সালের অক্টোবরে জাতীয় লিগে বগুড়ায় সবশেষ খেলেছিলেন মুশফিক। এবার ঘরের মাঠে তার অপরাজিত সেঞ্চুরিতে বিসিএলে ম্যাচ বাঁচানোর লড়াই করছে উত্তরাঞ্চল। বিসিএলের চতুর্থ রাউন্ডে বগুড়ায় তৃতীয় দিন শেষে উত্তরাঞ্চলের রান ৭ উইকেটে ২৮৬। মধ্যাঞ্চল প্রথম ইনিংসে করেছিল ৫২৯ রান। উত্তরাঞ্চলের সামনে তাই ফলো অনের শঙ্কা আছে এখনও। আছে হারের শঙ্কাও।
সাদমান ইসলাম (১০৭) ও মার্শাল আইয়ুবের (১৩২) জোড়া শতক এবং সাইফ হাসান (৯৪) ও মোশাররফ হোসেনের (৮৩*) প্রায় শতকে দ্বিতীয় দিনের শেষ নাগাদ ৫২৯ রান স্কোরবোর্ডে জমা করে সেন্ট্রাল জোন। ১ ওভার ব্যাট করে কোন রান না করে ও কোন উইকেট না হারিয়ে দ্বিতীয় দিন পার করে নর্থ জোন।
তৃতীয় দিনে শুরুতেই জুনায়েদ সিদ্দিকির উইকেট হারায় নর্থ জোন। দ্বিতীয় উইকেটে মিজানুর রহমান ও নাজমুল হোসেন শান্ত পরিস্থিতি সামাল দেবার চেষ্টা করেন। ৪৫ রান করে শান্ত আউট হলে ভাঙে মিজানুর-শান্তর ৭২ রানের জুটি। এরপরই উইকেটে আসেন মুশফিকুর রহিম। এসেই একে একে ফিরে যেতে দেখেন মিজানুর রহমান (৩২), সানজামুল ইসলাম (১৪), ধীমান ঘোষদের (৯)। ১২৪ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল নর্থ জোন। সেখান থেকে আরিফুল হককে (৪২) সঙ্গে নিয়ে ৮৩ রানের জুটি গড়ে প্রথমে ফেরান কক্ষপথে। শুরুর দিকে বেশ সাবধানী সাবেক এই টেস্ট অধিনায়ক রান তুলছিলেন মন্থর গতিতে। যতই সময় গড়াতে থাকে ততই হাত খুলতে থাকে মুশফিকের। অবশেষে আসে সেই কাক্সিক্ষত মূহূর্ত। ঘরের মাটিতে, চেনা মুখগুলোর সামনে ব্যাট উঁচিয়ে জানান দেন নিজের তিন অঙ্কের কীর্তি। ১৯৪ বলে পূর্ণ হয় মুশফিকের সেঞ্চুরি। ১০১ তম প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলতে থাকা মুশফিকের এটি ৯ম সেঞ্চুরি। সঙ্গীর অভাবে কিছুটা বিঘœ ঘটলেও তারপরও অবিচল ছিলেন নিজের দায়িত্বে। এরপর আর বেশিদূর গড়ায়নি দিনের খেলা। তাইজুল ইসলামকে নিয়ে বাকি সময়টুকু বিপদ ছাড়াই কাটিয়ে দেন মুশফিক। ৭টি চার ও এক ছক্কার ১৯৯ বলের ধৈর্য্যশীল ইনিংসটি খেলে অপরাজিত আছেন ১০১ রানে। ২১ রান নিয়ে আজ তাকে সঙ্গ দেবেন তাইজুল। আজ ৭ উইকেটে ২৮৬ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করেবে নর্থ জোন।
এদিকে, সিলেটে আবারও বড় স্কোরের ইঙ্গিত দিচ্ছে তুষার ইমরানের ব্যাট। বিসিএলে চতুর্থ রাউন্ডের ম্যাচে সিলেটে প্রথম ইনিংসে ৩০০ রানে অলআউট হয়েছে পূর্বাঞ্চল। ১০৩ রানের লিড পাওয়া দক্ষিণাঞ্চল গতকাল তৃতীয় দিন শেষ করেছে ৩ উইকেটে ১৪২ রানে। দিন শেষে সেই লিড আরও বেড়েছে ফজলে মাহমুদ রাব্বি আর তুষারের ব্যাটে। আজ শেষ দিনের আগে ৭ উইকেট হাতে নিয়ে দক্ষিণাঞ্চল এগিয়ে ২৪৫ রানে।
১০৩ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই দক্ষিণাঞ্চল হারায় এনামুল হককে। শূন্য রানে তাকে বোল্ড করে দেন আবু হায়দার। তবে দ্রæত রান তোলায় ঠিকই সফল হয় দক্ষিণাঞ্চল। তিনে নেমে ৩৬ বলে ৪২ করেন ফজলে রাব্বি। ওপেনার শাহরিয়ার নাফীস ফেরেন ২৪ রানে। এরপর সৌম্য সরকারকে নিয়ে চতুর্থ উইকেটে ৬৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দিন শেষ করেন তুষার। প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান তুষার এদিন অপরাজিত ৪৬ রানে। ৩ চার ও ১ ছক্কায় ২৯ রানে অপরাজিত সৌম্য।
এর আগে ৩ উইকেটে ৯৫ রান নিয়ে দিনের খেলা শুরু করেছিল পূর্বাঞ্চল। ৬০ রান নিয়ে দিন শুরু করা লিটন দাস ফেরেন ৭৫ রানে। ১২৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে পূর্বাঞ্চল ছিল ফলোঅনের শঙ্কায়। জাকের ও সাইফ উদ্দিনের প্রতিরোধ সেখান থেকেই। সপ্তম উইকেটে ১১৪ রানের জুটি গড়েন দুজন। উইকেট ধরে রাখার পাশাপাশি শটও খেলেছেন দুজন। নিজের পঞ্চম প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলতে নামা জাকেরকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন সেই রাব্বিই। ৬ চার ও ৪ ছক্কায় এই কিপার ব্যাটসম্যান করেন ৭৬ রান। এরপর লোয়ার অর্ডারদের নিয়ে দলকে টানেন সাইফ উদ্দিন। নবম উইকেটে আবু হায়দারকে নিয়ে গড়েন ৪১ রানের জুটি। তাতে আবু হায়দারের অবদান ছিল ১ রান। সাইফকে থামাতে পারেনি দক্ষিণাঞ্চল। তবে আরেকপাশ থেকে শেষ দুটি উইকেট তুলে নেন আব্দুর রাজ্জাক। ৯ চার ও ২ ছক্কায় ৭৫ রানে অপরাজিত থাকেন সাইফ।
সং ক্ষি প্ত স্কো র
মধ্যাঞ্চল-উত্তরাঞ্চল, বগুড়া
মধ্যাঞ্চল ১ম ইনিংস : ৫২৯
উত্তরাঞ্চল ১ম ইনিংস : ৮৬ ওভারে ২৮৬/৭ (মিজানুর ৩২, শান্ত ৪৫, মুশফিক ১০১*, সানজামুল ১৪, আরিফুল ৪২, তাইজুল ২১*; আবু হায়দার ১/৫৭, এবাদত ৩/৫৮, মোশাররফ ২/৫৩, তানবীর ১/৪২, মাহমুউল্লাহ ০/২২)।
দক্ষিণাঞ্চল-পূর্বাঞ্চল, সিলেট
দক্ষিণাঞ্চল ১ম ইনিংস : ৪০৩
পূর্বাঞ্চল ১ম ইনিংস : ৯৫.৫ ওভারে ৩০০ (আগের দিন ৯৫/৩) (লিটন ৭৫, আশরাফুল ১২, অলক ১২, জাকের ৭৬, সাইফ উদ্দিন ৭৫*; কামরুল রাব্বি ৪/৯৩, রাজ্জাক ৩/৬৮, নাঈম ৩/৯৭)।
দক্ষিণাঞ্চল ২য় ইনিংস : ৩২ ওভারে ১৪২/৩ (শাহরিয়ার ২৪, ফজলে রাব্বি ৪২, তুষার ৪৬*, সৌম্য ২৯*; আবু জায়েদ ১/৩৯, আশরাফুল ২/২৩)।
*তৃতীয় দিন শেষে
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।