Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যে দল যখন ক্ষমতায় থাকে তারা এই সুবিধা নেবে-শামসুল হুদা

| প্রকাশের সময় : ৬ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ টি এম শামসুল হুদা বলেছেন, সব দলকে অবশ্যই নির্বাচনে আসতে হবে। এটি না হলে বিকৃত একটি নির্বাচন হয়। যেটা কারো কাম্য নয়। এটি কিন্তু নির্ভর কমিশনের উপর। প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন সফরে নির্বাচনি প্রচারণা চালানো ক্ষমতায় থাকার সুবিধা। এতে মন খারাপ করার কিছু নেই। যে দল ক্ষমতায় যাবে, তারা এই সুবিধা নেবে। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট (পিআইবি) আয়োজিত এক প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে আলোচক হিসেবে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এটিএম শামসুল হুদা এসব কথা বলেন। পিআইবি-নির্বাচন কমিশন বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের জন্য তিনদিনব্যাপী নির্বাচন বিষয়ক রিপোর্টিং প্রশিক্ষণ শীর্ষক এ কর্মশালার আয়োজন করে। গত ৩০ জানুয়ারি সিলেটে জনসভা করে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর ৮ ফেব্রæয়ারি বরিশাল, ২২ ফেব্রæয়ারি রাজশাহী ৪ মার্চ খুলনা, ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম, এবং ১ এপ্রিল চাঁদপুরে জনসভা করেন তিনি। শেখ হাসিনা যেমন সরকার প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন, তেমনি তিনি আওয়ামী লীগেরও সভাপতি। আর বিএনপির সমালোচনার জবাবে শেখ হাসিনা বলেছেন, রাজনৈতিক দলের সভাপতি হিসেবে ভোট চাওয়ার অধিকার তার আছে।
বিএনপি সিলেটের জনসভার পর নির্বাচন কমিশনকে প্রধানমন্ত্রীকে ‘থামাতে চিঠিও দিয়েছিল। তবে নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। গণমাধ্যমকে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, ভোটের তফসিল ঘোষণা হওয়ার পর নির্বাচনী আইন লঙ্ঘনের বিষয়টি সামনে আসে। প্রধানমন্ত্রীর জনসভা কি আসলেই নির্বাচনী আইনের লঙ্ঘন?- জানতে চাইলে সাবেক সিইসি শামসুল হুদা বলেন, এইটা তো মুশকিল। জনগণের কাজ আর দলের কাজ বিচ্ছিন্ন করে দেখা মুশকিল। এটা দেখা যায় না। এটা আমি এইভাবে দেখছি যে, এইটা ক্ষমতায় থাকার একটা সুবিধা। যে দল যখন ক্ষমতায় যাবে, তারা এই সুবিধা নেবে। এইটা নিয়ে মন খারাপ করার কিছু নেই। তফসিল ঘোষণার আগে নির্বাচনী আইন লঙ্ঘনের বিষয়টি সামনে আসতে পারে না বলে নির্বাচন কমিশনের কর্মীদের বক্তব্যে সায় দিয়েছেন সাবেক সিইসিও। তিনি বলেন, সব নির্বাচনের ক্ষেত্রে তফসিল ঘোষণার পর থেকেই নির্বাচন কমিশন এসব বিষয়ে তদারকি করতে পারে। তার আগে এসব বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ কমিশনের নেই।
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেমন হবে-এমন প্রশ্নে শামসুল হুদা বলেন, এটি কিন্তু নির্ভর কমিশনের উপর। সব দলকে অবশ্যই নির্বাচনে আসতে হবে। এটি না হলে বিকৃত একটি নির্বাচন হয়। যেটা কারো কাম্য নয়। এখানে প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে সরকারের। সরকারের এমন পরিবেশ সৃষ্টি করা উচিত বা এমন কোনো কাজ করা উচিত হবে না, যা অন্য দলকে প্রভাবিত করে। এছাড়া নির্বাচন বয়কট করাও বন্ধ হওয়া উচিত। অন্য এক প্রশ্নে সাবেক সিইসি বলেন, নির্বাচন কমিশন ঠিক থাকলেই নির্বাচন ঠিক থাকবে এটা ঠিক নয়। এখানে অনেক স্টেকহোল্ডার আছে। তাদেরও দায়িত্ব আছে। এখানে ভোটারদের দায়িত্ব আছে, সরকার আছে, বিচার বিভাগ আছে, মিডিয়া আছে, পর্যবেক্ষকসহ আন্তর্জাতিক মাধ্যম আছে। সবাই ভালোভাবে কাজ করলে সুন্দর নির্বাচন করা সম্ভব। ভালো নির্বাচন হতে হলে জনগণকে ভোট দিতে আসতে হবে। সাবেক সিইসি বলেন, ‘সব নির্বাচনের ক্ষেত্রে তফসিল ঘোষণার পর থেকেই নির্বাচন কমিশন এসব বিষয়ে তদারকি করতে পারে। তার আগে এসব বিষয়ে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ কমিশনের নেই। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেমন হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচন কি হবে, এটি কিন্তু নির্ভর শর্তের ওপর। সব দলকে অবশ্যই নির্বাচনে আসতে হবে। এটি না হলে বিকৃত একটি নির্বাচন হয়। যেটা কারও কাম্য নয়। এখানে প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে সরকারের। তাদের এমন পরিবেশ সৃষ্টি করা উচিত বা এমন কোনও কাজ করা উচিত হবে না যা অন্য দলকে প্রভাবিত করে। এছাড়া নির্বাচন বয়কট করাও বন্ধ হওয়া উচিত।
সরকারি দল অনুমতি পাচ্ছে কিন্তু কোনও কোনও রাজনৈতিক দল সভা-সমাবেশের অনুমতি চেয়ে পাচ্ছে না, বর্তমান এই বাস্তবতায় অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব কিনা না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা খারাপ। লেভেল প্লেইং ফিল্ড হচ্ছে না। কাউকে কাউকে অনুমতি দিলেন আর কাউকে দিলেন না, তাহলে তো লেভেল প্লেইং ফিল্ড থাকলো না। দেশের একজন নাগরিক হিসেবে বলছি, রাস্তার উপরে মিছিল, মিটিং, শোক সভা, আনন্দ মিছিল ইত্যাদি করলে সাধারণ মানুষের কষ্ট হয়। সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন কাজে অনেক অসুবিধা হয়। এখন এটি বন্ধ হয়ে যাওয়া উচিত। দেশের অর্থনীতির চাকাকে বন্ধ করে দিয়ে রাস্তায় এসব না করার বিষয়ে সব রাজনৈতিক দলেরই এখন থেকে ভেবে দেখা দরকার। প্রশিক্ষণের প্রথম দিন সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল মোবারক ও সিনিয়র সাংবাদিক নাজমুল আশরাফ প্রশিক্ষক হিসেবে অংশ নেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পিআইবির মহাপরিচালক মো. শাহ আলমগীর।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নির্বাচন

২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ