Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিরোপা ফিরল আবাহনীতে

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

মিরপুরে শেখ জামাল ধানমন্ডি হেরে যাওয়ায় বিকেএসপিতে হারলেও চ্যাম্পিয়ন হতো আবাহনী লিমিটেড। তবে বাকিরা কি করল না করল সে কথা আর ভাবার দরকার হয়নি। লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে বড় ব্যবধানে হারিয়েই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আবাহনী। এক মৌসুম পর আবারও ঢাকার ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্বের মকুট পুনরুদ্ধার করেছে ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটি। ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশণ ক্রিকেট লিগে এটি তাদের ৬ষ্ঠ শিরোপা।
গতকাল বিকেএসপিতে আগে ব্যাট করে নাজমুল হোসেন শান্ত ও নাসির হোসেনের ঝড়ো সেঞ্চুরিতে ৩৭৪ রানের পাহাড় গড়ে আবাহনী। রান তাড়ায় একটা সময় পর্যন্ত ম্যাচে থেকেও পরে ধসে পড়ে রূপগঞ্জের ইনিংস। ০ রানে শেষ চার উইকেট হারিয়ে তারা অলআউট হয় ২৮০ রানে।আবাহনীর জয় ৯৪ রানের।
সকালে টস জিতে আবাহনীকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল রূপগঞ্জ। বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠের রান প্রসবা পিচে উড়ন্ত শুরু পায় আবাহনী। ১২ ওভারেই দুই ওপেনার ৯২ রান তুলে বিচ্ছিন্ন হন। ৫১ বলে ৫৭ করে পারভেজ রসুলের বলে ক্যাচ দেন এনামুল হক বিজয়। আরেক ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত এদিনও ছিলেন আগ্রাসী। লিগে তার চতুর্থ সেঞ্চুরি পূরণ করার পাশাপাশি সর্বোচ্চ রানও করে ফেলেন। ১০৭ বলে ১১ চার আর ২ ছক্কায় শান্তর ইনিংস শেষ হয় মোহাম্মদ শহীদের বলে। এর আগেই অবশ্য ফিরে যান হনুমা ভিহারি ও মোহাম্মদ মিঠুন।
পাঁচে নামা অধিনায়ক নাসির হোসেন বাকিটা পথ ছিলেন দুর্বার। ৯১ বলে ১৫ চার আর ৪ ছক্কায় ১২৯ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলেন তিনি। শান্ত-নাসিরের ১৮৭ রানের জুটিতে বিশাল সংগ্রহের ভিত পায় আবাহনী। শেষ দিকে তান্ডব চালিয়েছেন মাশরাফি মর্তুজা। মাত্র ৮ বল খেলে ৪ ছক্কায় ২৮ করে অপরাজিত ছিলেন তিনি। তার ওই ক্যামিওতে দলের রান চলে যায় ৩৭৪ রানে।
৩৭৫ রানের বিশাল লক্ষ্যে ভালো শুরু পেয়েছিল রূপগঞ্জও। আব্দুল মজিদ আর অভিষেক মিত্র ফিরলেও মোহাম্মদ নাইম ছিলেন আগ্রাসী। ৫৪ বলে ৭০ রানের এক বিস্ফোরক ইনিংস খেলে আবাহনীর ভয় বাড়িয়েছিলেন তিনি। মুশফিকুর রহিম আর নাঈম ইসলামও পেয়েছিলেন দ্রæত ফিফটি। তবে এই তিনজনের আউটের পর ঘুরে যায় ম্যাচের ছবি। ততক্ষণে অবশ্য মিরপুর থেকে স্বস্তির খবর পেতে শুরু করে আবাহনী।
খেলাঘর শেখ জামালকে হারিয়ে দেওয়ায় রূপগঞ্জ জিতলেও ক্ষতি হতো না মাশরাফিদের। চাপমুক্ত হয়ে রূপগঞ্জের লেজটা মুড়ে দিতে বেশি সময় নেননি আবাহনীর বোলাররা। কোন রান যোগ না করেই পড়েছে রূপগঞ্জের শেষ চার উইকেট।
এদিকে, লিগ শিরোপা জিততে খেলাঘরকে হারাতেই হতো শেখ জামালের। সেই সঙ্গে আরেক ম্যাচে আবাহনী হেরে গেলে তারাই হয়ে যেত চ্যাম্পিয়ন। তবে ব্যাটিং ব্যর্থতায় সব সমীকরণের বাইরে চলে যায় নুরুল হাসান সোহানের দল। মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শেখ জামাল ধানমন্ডিকে মাত্র ১৬০ রানে গুটিয়ে দেয় খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতি। পরে ৭৯ বল হাতে রেখেই ৪ উইকেট জিতে লিগ শেষ করে খেলাঘর।
একই দিন ফতুল্লায় নিয়ম রক্ষার ম্যাচে গাজী গ্রæপকে মাত্র ৯৫ রানে অলআউট করে দেয় প্রাইম দোলেশ্বর। এবারের লিগে এটাই দলীয় সর্বনিম্ন সংগ্রহ। ৯৬ রান তাড়া করতে নেমেও কম হ্যাপা পোহাতে হয়নি দোলেশ্বরকে। ৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে শঙ্কায় পড়া দলের তরী ভেড়ে ফজলে মাহমুদ, আবু সায়েম ও শরিফুল্লাহর ব্যাটে। এই হারে গতবারের চ্যাম্পিয়ন গাজী গ্রæপ পয়েন্ট টেবিলের ছয় নম্বরে থেকে লিগ শেষ করল।
রোল অব অনার (সর্বশেষ ১৭ মৌসুম)
আসর চ্যাম্পিয়ন রানার্সআপ
২০১৭/১৮ আবাহনী রূপগঞ্জ
২০১৬/১৭ গাজী গ্রুপ প্রাইম দোলেশ্বর
২০১৫/১৬ আবাহনী প্রাইম দোলেশ্বর
২০১৪/১৫ প্রাইম ব্যাংক প্রাইম দোলেশ্বর
২০১৩-১৪ গাজী ট্যাঙ্ক শেখ জামাল
২০১২/১৩ আয়োজিত হয়নি
২০১১/১২ ওল্ডডিওএইচএস ভিক্টোরিয়া
২০১০/১১ আবাহনী মোহামেডান
২০০৯/১০ মোহামেডান বাংলাদেশ বিমান
২০০৮/০৯ আবাহনী সূর্যতরুণ
২০০৭/০৮ আবাহনী বাংলাদেশ বিমান
২০০৬/০৭ আবাহনী মোহামেডান
২০০৫/০৬ ওল্ডডিওএইচএস সোনারগাঁ
২০০৪/০৫ ওল্ডডিওএইচএস সিটি ক্লাব
২০০৩/০৪ আয়োজিত হয়নি
২০০২/০৩ ভিক্টোরিয়া মোহামেডান ও সিটি ক্লাব
২০০১/০২ ভিক্টোরিয়া বাংলাদেশ বিমান

সংক্ষিপ্ত স্কোর
আবাহনী-রূপগঞ্জ
আবাহনী : ৫০ ওভারে ৩৭৪/৬ (এনামুল ৫৭, শান্ত ১১৩, নাসির ১২৯, মোসাদ্দেক ১৯*, মাশরাফি ২৮*; শহিদ ২/৮১, রসুল ৩/৪২, আসিফ ১/৯৩, মোশাররফ ০/৫৩, নাঈম ইসলাম ০/৩২)।
রূপগঞ্জ : ৪২.৪ ওভারে ২৮০ (অভিষেক ১৩, মুশফিক ৬৭, নাঈম ইসলাম ৭৬, রসুল ২৯; মিরাজ ২/২৯, মাশরাফি ১/৩০, সানজামুল ২/৬২, স›দ্বীপ ২/৫৩, নাসির ২/৬৭, সাকলাইন ০/৩৭)।
ফল : আবাহনী ৯৪ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : নাসির হোসেন (আবাহনী)।

শেখ জামাল-খেলাঘর
শেখ জামাল : ৪৯ ওভারে ১৬০ (সৈকত ১৩, নুরুল ৪৭, সোহাগ ২৭, আল ইমরান ২৫, রবিউল ১৬; রবি ২/১৯, তানভীর ১/৩১, মেনারিয়া ২/৩৮, হালিম ১/১৭, সাদ্দাম ২/১৮, মাসুম ১/২০)।
খেলাঘর : ৩৬.৫ ওভারে ১৬১/৬ (অমিত ১৪, মেনারিয়া ১১, নাজিম ৬১, রাফসান ৪৬, আনজুম ১১*, মাসুম ৮*; নাজমুল ৫/৩২, সোহাগ ০/৩২, আল ইমরান ১/১৯, সানি ০/৪৫, রবিউল ০/৭)।
ফল : খেলাঘর ৪ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : নাজমুল ইসলাম (শেখ জামাল)।

গাজী গ্রুপ-দোলেশ্বর
গাজী গ্রুপ : ২১.৪ ওভারে ৯৫ (মেহেদী ৩৯, মুমিনুল ১৬, জহুরুল ৮, নাদিফ ১০, নাঈম ৬*; ফরহাদ ১/২৮, সালাউদ্দিন ২/৩১, সানি ৩/২৬, নাসুম ৪/১০)।
দোলেশ্বর : ২৪ ওভারে ৯৯/৫ (লিটন ৫, মাহমুদ ৩১, সায়েম ৩৬, শরিফউল্লাহ ২২*, জাকারিয়া ৪*; রনি ৩/২৭, নাঈম ১/৩৩, ইয়াসিন ১/১৭)।
ফল : দোলেশ্বর ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : নাসুম আহমেদ (দেলেশ্বর)।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আবাহনী

১০ জানুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ