মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
পাকিস্তানের কাছে অত্যাধুনিক অপটিক্যাল মিসাইল ট্রাকিং সিস্টেম বিক্রির কথা স্বীকার করেছেন চীনের কর্মকর্তারা। দেশটি মাল্টি-ওয়ারহেড নিউক্লিয়ার মিসাইল তৈরি করার চেষ্টা চালাচ্ছে এবং এক্ষেত্রে এক ধাপ এগিয়ে গেছে চীনা সাহায়তার কারণে। ক্ষেপনাস্ত্র পরীক্ষার জন্য অপটিক্যাল সিস্টেম খুবই গুরুত্বপূর্ণ, এটা থেকে প্রকৌশলীরা মিসাইলের বিভিন্ন পর্যায়ে অতি জরুরি হাই-রেজুলেশনের ইমেজ পাবেন, যা ডিজাইন উন্নত করার কাজে ব্যবহার করা যাবে।
এই প্রথম চীন এমন স্পর্শকাতর কোন প্রযুক্তি অন্য দেশের কাছে বিক্রি করেছে। জানুয়ারিতে দক্ষিণ এশিয়ার আরেক পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র ভারত দূর-পাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইল অগ্নি-৫-এর সফল উৎক্ষেপনের পর চীনের কাছ থেকে মিসাইল ট্রেকিং সিস্টেম বিক্রির খবর প্রকাশ করা হয়। ৫,০০০ কি.মি. পাল্লার অগ্নি-৫ চীনের যেকোন স্থান এবং ইউরোপ ও আফ্রিকার কিছু অংশে আঘাত হানতে সক্ষম বলে দাবি করা হয়।
ভারত ইতোমধ্যে পাকিস্তানের বিভিন্নস্থানে আঘাত হানার মতো ক্ষেপনাস্ত্র হাসিল করেছে। এ দুই দেশের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা চলছে বহুদিন। ১৯৯৮ সালে ভারত ও পাকিস্তান একদিনের ব্যবধানে পারমাণবিক পরীক্ষা চালায়। তখন থেকে ক্ষেপনাস্ত্র উন্নয়ন পারমাণবিক প্রযুক্তি হাসিলের প্রচেষ্টায় একে অন্যকে ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টায় লিপ্ত।
কিন্তু ভারত সিঙ্গেল নিউক্লিয়ার ওয়াহেড মিসাইল তৈরির চেষ্টা করলেও পাকিস্তান চেষ্টা করছে মাল্টিপল ইন্ডিপেনডেন্টলি টার্গেটেবল রি-এন্টি ভেহিকেল (এমআইআরভি) তৈরি করতে। এই ক্ষেপনাস্ত্র একই সঙ্গে একাধিক ওয়ারহেড বহন ও বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।
ভারতের ক্ষেপনাস্ত্র অনেক বেশি ভার বহন ও অনেক দূরে গিয়ে আঘাত হানতে সক্ষম হলেও পাকিস্তানের এমআইআরভি ভারতের ক্ষেপনাস্ত্র ব্যবস্থার ওপর প্রাধান্য বিস্তার করে সল্প সংখ্যক ক্ষেপনাস্ত্র দিয়ে একই সঙ্গে বহুসংখ্যক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারবে।
ভারত এখনো মাল্টিপল ওয়াহেড ক্ষেপনাস্ত্র তৈরি করতে পারেনি। তাই পাকিস্তানের এমআইআরভি প্রযুক্তি ভারতের সঙ্গে শক্তির ভারসাম্য বদলে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মার্কিন কংগ্রেসে শুনানিকালে যুক্তরাষ্ট্রের ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির পরিচালক রবার্ট অ্যাশলে নিশ্চিত করেন যে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে পাকিস্তান প্রথম পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম আবাবিল ব্যলিস্টিক ক্ষেপনাস্ত্র পরীক্ষা করে। এটা দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম এমআইআরভি পেলোড।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা এমআইআরভি প্রযুক্তি এখনো নিখুঁত হয়নি। কিন্তু চীনের কাছ থেকে সর্বশেষ সহায়তা পাওয়ার ফলে এ ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি হবে।
অপটিক্যাল সিস্টেম হলো হাই-স্পিড ক্যামেরা, ইনফ্রারেড ডিটেকটর, লেজার রেঞ্জার ও একটি ট্রাকিং সিস্টেমসহ বিশেষায়িত টেলিস্কোপ, যা লক্ষ্যবস্তুকে অনুসরণ করতে পারে। এই সিস্টেম ব্যবহার করে ক্ষেপনাস্ত্র প্রকৌশলিরা মিসাইলের প্রতিটি পর্যায়-উৎক্ষেপন, সেপারেশন, রি-এন্ট্রি ও ওয়ারহেড ছোড়ার-র উচ্চ-রেজুলেশনের ছবি দেখতে পারবেন।
পাকিস্তানকে দেয়া চীনের সিস্টেমটি অনন্য-এর চারটি টেলিস্কোপ ইউনিট রয়েছে। এগুলো চারটি ভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন কোণে অত্যন্ত নিখুঁত ও স্পষ্ট ছবি ধারণ করতে পারে। মাল্টিপল ওয়াহেডের ক্ষেত্রে আরেকটি বাড়তি টেলিস্কোপ দিয়ে সবগুলো ওয়ারহেড এক সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা যায়।
বেইজিং ইন্সটিটউট অব টেকনলজির স্কুল অব এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের উপ-পরিচালক রং জিলি বলেন যে এমআইআরভি উন্নয়নের জন্য হাই কোয়লিটি অপটিক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাডার ও অন্যান্য ট্রেকিং সিস্টেম থেকে দূর থেকে নিখুঁত উপাত্ত পাওয়া গেলেও অপটিক্যাল সিস্টেমে সরাসরি ছবি দেখা যায়। তিনি সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে বলেন, নিরেট উপাত্তের চেয়ে আমাদের চোখ আরো অনেক বেশি কিছু দেখে। এতে শুধু সমস্যা বের করতে পারা নয়, এতে আরো উদ্দীপ্ত হওয়া যায়।
অপটিক্যাল সিস্টেম স্থাপন ও পাকিস্তানীদের প্রশিক্ষণ দিতে একটি চীনা প্রতিনিধি দল তিন মাস পাকিস্তানে অবস্থান করে। চীন দীর্ঘ দিন থেকে পাকিস্তানের বন্ধু। স্নায়ুযুদ্ধের সময় তারা গোপানে পাকিস্তানকে পারমাণবিক অস্ত্র উৎপাদনের কাজে সাহায্য করে। স¤প্রতি বেশ কিছু পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণে সহায়তা দিচ্ছে। এছাড়া ফাইটার, সাবমেরিন, স্বল্প পাল্লার ক্ষেপনাস্ত্র ও ড্রোন বিক্রি করছে। সূত্র : সাউথ এশিয়ান মনিটর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।