মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ফিলিস্তিনি কিশোর বাসেল আল হোলো। ব্যথা জর্জরিত শরীর নিয়ে কাতরাচ্ছে। নড়তে চড়তেও পারছে না।
তবু সাহস হারায়নি এ কিশোর। বলছে, সুস্থ হয়েই প্রতিবাদে অংশ নেব। দখলদার ইসরাইলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে যাব।
শুক্রবার হারানো ঘরবাড়িতে ফেরার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হলে তাতে অংশ নিয়েছিল কিশোর বাসেল।
ওই সময় ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে আহত হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালে শুয়েই ইসরাইলবিরোধী লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় সে।
এবারই প্রথম নিজের অসম সাহসের কথা বলছে না কিশোর বাসেল। আরও একবার ইসরাইলি সেনারা তাকে গুলি করেছিলেন। সেই ক্ষত সারতে বছরখানেক সময় লেগেছে।
তবে ইসরাইলি ওই ক্ষত বাসেলের সাহসে এতটুকু চিড় ধরাতে পারেননি। শুক্রবার হামাসসহ ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংস্থাগুলোর বিক্ষোভের ডাক শুনে সে ঠিকই চলে গাজা-ইসরাইল সীমান্তে।
আর বিক্ষোভ করতে গিয়ে ইসরাইলি সেনাদের গুলিতে আবারও রক্তাক্ত হয়েছে এ ফিলিস্তিনি কিশোর। ছেলের পাশে বসে তার মা দুই হাতে মুখ গুজে। বসে আছেন। তাকে খুবই বিমর্ষ দেখাচ্ছে।
কিন্তু বাসেলের মধ্যে চোখেমুখে এতটুকু উদ্বেগ নেই। তার কথা, গুলিবিদ্ধ হওয়া নিয়ে আমার কোনো আফসোস নেই। সুস্থ হলেই আবার বিক্ষোভে শামিল হব।
গাজা শহরের শিফা হাসপাতালটি আহত কিশোর ও তরুণে ভরে গেছে। শুক্রবার ঘরে ফেরার পদযাত্রায় অংশ নিয়ে দখলদার ইসরাইলি সেনাদের গুলিতে আটশ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনিরা বলছেন, তাদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। তারা কারও জীবনের হুমকি হয়ে দাঁড়াননি। কেবল পূর্বপুরুষদের ভিটেমাটিতে ফিরে যেতে চাচ্ছেন।
বিক্ষোভকারীদের ওপর ইসরাইলের তাজা গুলি ব্যবহার নিয়ে বিভিন্ন মানবাধিকার গোষ্ঠীও প্রশ্ন তুলেছেন।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, যারা পাথর ছুড়েছে, টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ করেছে, তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়েছে।
আহত কয়েকজন কিশোর জানায়, তাদের হারানোর কিছু নেই। কারণ তাদের ভয়ঙ্কর দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করতে হয়। কাজেই সুস্থ হয়ে আবার তারা বিক্ষোভে ফিরে যাবে।
গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিবরণ দিয়ে বাসেল বলছিল, সীমান্ত থেকে আমি কিছুটা দূরে ছিলাম। তখনই এলোপাতাড়ি গুলি করতে শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। গুলি খেয়ে আমার বন্ধুসহ বহু লোককে আমি পড়ে যেতে দেখেছি।
তার ডান পায়ে গুলি লেগেছে। শরীরের ভেতরে গুলির একটি অংশ রয়ে গেছে।
বাসেল জানায়, আমি বিক্ষোভ দেখতে ও সংহতি জানাতে গিয়েছিলাম। তবে আমি কোনো পাথর ছুড়িনি।
ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো গণহত্যা নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন একটি স্বাধীন স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানালেও ইসরাইল তা প্রত্যাখ্যান করেছে।
হাসপাতালের আরেকটি বেডে ১৫ বছর বয়সী আলি জিয়ার ঘুমিয়ে আছে।তার শরীরের সঙ্গে যুক্ত একটি নল দিয়ে ফোঁটায় ফোঁটায় রক্ত ঝরছে। জিয়ারের বুকে গুলি লেগেছে।
তার মা বলছিলেন, তার ৯ সন্তানের সবাই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে। আলী ইসরাইলি সীমান্তের কাছে চলে গিয়েছিল।
তিনি বলেন, এটি ছিল একেবারে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ। তার ছেলে কোনো পাথর ছোড়েনি।
শাদি নামে এক ব্যক্তি তার চাচাতো ভাইয়ের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি বলেন, তার চাচাতো ভাই ইসরাইলি সেনাদের থেকে ৭০ মিটার দূরে দাঁড়িয়ে ফিলিস্তিনি পতাকা নাড়ছিলেন, তখন তাকে গুলি করা হয়েছে।
গত এক দশক ধরে ইসরাইল গাজা শহরটিকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। এতে শহরটি একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
শহরটির ২০ লাখ অধিবাসীকে শাস্তি দিতেই তাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। মিসরও গাজা সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। অধিকৃত পশ্চিমতীরভিত্তিক ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষও গাজাবাসীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে।
সম্প্রতি জাতিসংঘের দূত হুশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, উপত্যকাটি পতনের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। গাজাবাসী যে কোনো সময় আবার ফুঁসে উঠতে পারেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।