Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গাছের ডাল পুঁতে পাখি দিয়ে পোকা দমন

এলাকায় কমছে কীটনাশক ব্যবহার

আদমদীঘি (বগুড়া) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

আদমদীঘিতে পোকামাকড়রের সন্ধানে ধানের জমিতে পুঁতে রাখা গাছের ডালে বা বাঁশের কঞ্চি ও ধনঞ্চিতে এসে বসেছে পাখি। আদমদীঘির বিভিন্ন এলাকার ধানক্ষেতে এখন গাছের ডাল বা বাঁশের কঞ্চি ও ধনঞ্চি চোখে পরছে। পাখির মাধ্যমে পোকা দমনের এ পদ্ধতির নাম পার্চিং। ধানক্ষেতের মাঝে ১৫ থেকে ২০ হাত দ‚রে দ‚রে গাছের ডাল কুনঞ্চি পুতে রাখা হয়। সেই সব ডালে উড়ন্ত পাখিরা সেখানে কিছুক্ষণ পরপরই এসে বসে ক্ষেতের পোকা ধরে খায় নানা জাতের পাখি। এভাবেই এখন স্থানীয় অনেক কৃষক কীটনাশক ছাড়া সহজেই দমন করছে ধান ক্ষেতের পোকা। পোকা দমনের পরিবেশবান্ধব এই পদ্ধতিতে ব্যাপক সফলতা পেয়েছে স্থনীয় অনেক কৃষক। আর পার্চ থেকেই পার্চিং নামের উদ্ভব পোকা দমনের এই পদ্ধতি দেশের বিভিন্ন জায়গায় অনেক আগে থেকে ব্যবহৃত হলেও আদমদীঘির সান্তাহারে এর পরীক্ষামূলক ব্যবহার শুরু করা হয় গত কয়েক বছর যাবৎ। চলতি ইরিবোরো মৌসুমি এবার এই উপজেলায় ১২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে। এরমধ্যে ৯ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে এই পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহৃত হচ্ছে। অর্থাৎ শতকরা ৭৫ ভাগেরও বেশি কৃষি জমিতে পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহৃত হচ্ছে। উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের দাবি, পোকা দমনে এই পদ্ধতি শতকরা ৭৫ থেকে ৮০ ভাগ কার্যকর। এ কারণে প্রতি একরে কীটনাশক খাতে চাষিদের খরচ কমেছে ৮০০ টাকারও বেশি। আমনের জমিতে পুঁতে দেওয়া গাছের ডাল ও বাঁশের কঞ্চিতে ফিছকে, শালিক, বক, বুলবুলিসহ নানা জাতের পাঁখি এসে বসছে। একটু পরপর ডাল থেকে জমির মধ্যে ঢুকে পাখিগুলো পোকা ধরে ধরে খেযে ফেলে। যে জমিতে পোকা বেশি সেই জমিতে পাখির আনাগোনাও বেশি। সান্তাহার ইউনিয়ন এলাকার কৃষক রুবেল, শফির উদ্দীন, ছাহের আলীর সাথে কথা বললে তারা বলেন, এই পদ্ধতি পরিবেশবান্ধব বলে পাখির সংখ্যা আগের থেকে বাড়ছে। এতে একদিকে ধানক্ষেত হচ্ছে পোকামুক্ত। অন্যদিকে পরিবেশের ও উপকার হচ্ছে। এ বিষয়ে সান্তাহার এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. খাদেমুল মাসুদ বলেন এই পদ্ধতিতে স্থানীয় কৃষকরা ভালো’ ফল পাচ্ছে। নামমাত্র কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে। উপজেলা কৃষি অফিসের উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, পার্চিং পদ্ধতির মাধ্যমে শতকরা ৭৫ থেকে ৮০ ভাগ পোকাদমন হয়। তিনি বলেন, জমিতে ধানের চারা রোপণের পর মাজরা পোকা, পাতা মোড়ানো পোকা, চুঙ্গি পোকা, শিষ কাটা লেদা পোকাসহ নানান পোকা আক্রমণ করে। এসব পোকা আবার পাখিদের প্রিয় খাবার। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.কামরুজ্জামান বলেন, এ পদ্ধতি অবলম্বন করলে কিটনাশক খরচ কমবে পরিবেশও রক্ষা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ