পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় মুক্তবাণিজ্য চুক্তি করতে আগ্রহী চীন ও শ্রীলংকা। তাদের আগ্রহ বিবেচনায় নিয়ে মুক্তবাণিজ্য (এফটিএ) আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশ এ বছরই বা নির্বাচনের আগে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির করতে চায়। এ লক্ষ্যে আগামী ৪ এপ্রিল শ্রীলংকার সঙ্গে এফটিএ সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে। আর চীনের আগ্রহে এফটিএ সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা শুরু হলেও শিগগিরই চুক্তিটি করতে আগ্রহী নয় বাংলাদেশ। চুক্তির বিষয় নিয়ে আরও গভীর পর্যালোচনা করতে চায় সংশ্লিষ্টরা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এদিকে শ্রীলংকা ও চীনের সঙ্গে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) হলে বাংলাদেশ লাভবান হবে কি-না তা নিয়ে বিশ্লেষকদের কাছ থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। কেউ বলেছেন, এ ধরনের চুক্তি হলে শ্রীলংকা ও চীনা পণ্য শুল্কমুক্তভাবে ঢুকে স্থানীয় শিল্পকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। কারও কারও মতে, এখনও ৪০ শতাংশ পণ্যে উচ্চ শুল্ক দিয়ে চীনের বাজারে প্রবেশ করতে হয়। অন্যথায় চীনের বাজারে সব পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পেলে রপ্তানি বাড়বে বর্তমানের কয়েকগুণ। মুক্তবাণিজ্য চুক্তির ফলে ফরেন ইনভেস্টমেন্ট বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শ্রীলংকার সঙ্গে আমাদের আঞ্চলিকভাবে দক্ষিণ এশিয়া মুক্তবাণিজ্য এলাকা চুক্তি (সাফটা), এশিয়া প্যাসিফিক ট্রেড এগ্রিমেন্ট (আপটা)সহ বেশকিছু বাণিজ্যিক চুক্তি রয়েছে। নতুনভাবে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি হলে স্বল্প কিছু সুবিধা বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে এই চুক্তির ফলে কোন ধরনের পণ্যের আমদানি-রফতানি বৃদ্ধি পাবে তা সরকারি কর্মকর্তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন রয়েছে। একই সঙ্গে মুক্তবাণিজ্য চুক্তির সঙ্গে আমদানি-রফতানি ও রাজস্বের কথা বিবেচনা করে এগোতে হবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, অর্থনৈতিক দিক থেকে সমৃদ্ধ দেশ শ্রীলংকা, চীন, তুরস্ক, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া বাংলাদেশের সঙ্গে ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট (এফটিএ) বা মুক্তবাণিজ্য চুক্তির জন্য আগ্রহী। এসব দেশের সঙ্গে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি হলে সুযোগ-সুবিধা এখনকার চেয়ে অনেক বৃদ্ধি পাবে। শ্রীলংকার সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হলে বাংলাদেশ অন্যান্য যেসব দেশের সঙ্গে একই চুক্তি করতে চাইছে সেগুলো করতেও সুবিধা হবে। গত ২১ মার্চ শ্রীলংকার প্রতিনিধিদের নিয়ে সভা করে একটি জয়েন্ট স্টাডি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে বাংলাদেশের সাত জন ও শ্রীলংকার সাত জন রয়েছে। বাংলাদেশের সাতজনকে শীঘ্রই একটি পর্যালোচনা প্রতিবেদন তৈরি করে দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। একই সঙ্গে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে এফটিএ করার বিষয়টি বিবেচনায় নেয়াসহ আরও কিছু পদক্ষেপের কথা ভাবা হচ্ছে। তবে চীনের দেয়া এ চুক্তি প্রস্তাবের প্রভাব সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়ে বাংলাদেশ কোন সিদ্ধান্ত নেবে না। বর্তমানে প্রচুর চীনা পণ্য বাংলাদেশে ঢুকলেও মুক্তবাণিজ্য চুক্তি হলে এর পরিমাণ বাড়বে কি না, কী ধরনের পণ্য বাংলাদেশে আসবে এবং এর ফলে স্থানীয় উৎপাদনকারীদের ওপর কী প্রভাব পড়তে পারে তা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।