রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড় সিরাজগঞ্জ ও পূর্বপাড় টাঙ্গাইল জেলার উভয় পাশে অবৈধ প্রক্রিয়ায় বিপজ্জনকভাবে গড়ে উঠেছে ‘বালু মহল’। বিশেষ করে সিরাজগঞ্জ অঞ্চলের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের দক্ষিণের বেড়াকোলা থেকে উত্তরের কাউনিয়া পর্যন্ত এক‘শ’ পয়ত্রিশ মাইলের বি¯তৃর্ণ এলাকাজুড়ে যমুনা নদী থেকে অপরিকল্পিত ও অবৈধভাবে বালুদসু্যুরা বালু উত্তোলন করছে। ফলে যমুনা নদী পাড়ের ভাঙন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। ফি বছর অব্যাহত গতিতে যমুনা যেন ভেঙেই চলছে। বালু উত্তোলনের ঘটনা নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটলেও তার রক্ষা সম্ভব হচ্ছে না। গত বন্যায় সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাহুকায় দুই দুইবার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভাঙন সৃষ্টি হয়। সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় একই স্থানে ১১ বার ভাঙন দেখা দেয়। জেলার কাজীপুর, শাহজাদপুর, চৌহালী, বেলকুচি, একই অবস্থা বিদ্যামান। প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে ভাঙন মেরামত করা হচ্ছে অথচ এসব দেখভালের জন্য সংশ্লিষ্টরা একে অপরের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। ফলে দিন দিন বালু দশ্যুদের বালু উত্তোলনের ব্যাপক প্রসার ঘটছে। বারবার নিষেধাজ্ঞা, অভিযোগ ও মানববন্ধন করেও তাদের রোধ করা যাচ্ছে না। তাই সচেতন অভিঙ্গমহল এ ব্যাপারে উচ্চ পর্যায়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
বালু দস্যুরা বালু উত্তোলন করে নানাবিধ সমস্যার জন্ম দিচ্ছে। শহর রক্ষার বাঁধ ও নদী তীর সংরক্ষণবাধসহ আবদি জমি হুমকির মুখে পড়েছে। এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে যমুনার উভয় পাড়ের মানুষের মধ্যে। এলাকাবাসির মতে, পানি উনড়বয়ন বোর্ডের মধ্যে দিয়ে ক্রসবার -০২ এর ভেতর দিয়ে টানা হয়েছে বালু তোলার পাইপ। এ কারণে কোথাও কোথাও ফাটল দেখা তৈরী হয়েছে। আর ফাটলের কারণে আশংখা রয়েছে নদী তীরবর্তী ফসলি জমি ও বসতবাড়ি বিলিনেরও।
অপর দিকে বঙ্গবন্ধুর যমুনা সেতুর পূর্বাংশের উত্তর দিকের সেতুর নিরাপত্তা বেষ্টুনীর পাশেই গড়ে উঠেছে বিশালাকারের বালু মহল। ড্রেজার দিয়ে এ স্থলে বালু উত্তোলন করায় নদীর তলদেশ থেকে সরে যাচ্ছে মাটি। ফলে হুমকির মুখ পড়ছে বঙ্গবন্ধু সেতুর গাইডবাঁধও। সেই সাথে শহররক্ষবাঁধের মতিন সাহেবের ঘাট এলাকায় গড়ে উঠেছে বি¯তৃর্ন এলাকা জুড়ে বালু মহল। এখানে শুধু বালু দস্যুরা বালু তুলেই ক্ষান্ত হচ্ছে না। এরা মেশিন দিয়ে পাড়ের এটেল মাটিও কেটে নিয়ে বিক্রি করছে। সিরাজগঞ্জের দক্ষিন দিকের সেই বেড়াখোলা থেকে শুরু করে উত্তর দিকের কাউলিয়া পর্যন্ত সর্বত্র চলছে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। সেই সাথে জেলার নদী তীরবর্তী পাঁচটি উপজেলা শাহজাদপুর, চৌহালী, বেলকুচি, সিরাজগঞ্জ সদর, কাজীপুর বিভিন্ন পয়েন্টেও চলছে বালু উত্তোলনের অবিরাম।
পূর্বপাড়ের ভূঞাপুর, নলীন, জগৎকুড়া, অর্জুনা, গাবসাড়া, গোবিন্দদাসি, নিকরাইল, চরবাসাইল, চরঅর্জুনা, চরশ্বশুয়া, জগনাথগঞ্জ ঘাটে একইভাবে বালু দস্যুরা বালু উত্তোলন করে চলেছে। ফলে যমুনার উভয় পাড়ের নদী ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।
খাস কাউলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদ হোসেন জানান, ২০১৫ সালে যমুনা নদীর ভাঙন থেকে টাঙ্গাইলের নাগরপুর ও সিরাজগঞ্জের চৌহালী রক্ষায় ১০৯ কোটি টাকা ব্যায়ে ৭ কিলোমিটার নদী তীর সংরক্ষন কাজ শুরু হয়। বাঁধটির প্রায় ৯৫ ভাগ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। এ অবস্থায় গত বন্যায় ২ মে থেকে ২৩ জুলাই পুর্যন্ত ১১ দফায় ধ্বস নামে।
টাঙ্গাইল পানি উনড়বয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শাজাহান সিরাজ জানান, বাঁধের এই অংশে গভীরতার সৃষ্টি হওয়ায় ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। তবে স্থানীয়রা বলেন অন্যকথা। তাদের মতে বালু দস্যুরা ড্রেজার দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনে বাঁধ এলাকা থেকে মাটি সরে গিয়ে গভীরতার সৃষ্টি হচ্ছে।
পাউবোর সিরাজগঞ্জ জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, আমার পক্ষ থেকে ডিসি মহলের উপস্থাপন করা হয়েছে এবং বালু উত্তোলন নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। যার কারণে সিরাজগঞ্জ শহরের বাঁধ ও অন্যন্যা অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। ইতিমধ্যে আমি শহর রক্ষাবাঁধের মেইন গেইট বন্ধ করে রেখেছি। যাতে বালু মহলের বালুর ভারী ট্রাক ভেতরে ঢুকতে না পারে।
সিরাজগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বলেন, যারা অবৈধ বালু উত্তোলন করছে তাদেরকে বালু উত্তোলন করতে নিষেধ করা হয়েছে। যেসব জায়গায় থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে সেসব জায়গা থেকে আর কোনভাবে বালু উত্তোলন করা যাবে না এমন নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।