চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
\ চার \
আইনের ৬নং ধারায় উক্ত অপরাধের আমলযোগ্যতা, জামিনযোগ্যতা ও আপোষযোগ্যতার বিষয়ে বলা হয়েছে। এ আইনের অধীন অপরাধ আমলযোগ্য (Congnizable), জামিনযোগ্য (bailable) ও আপোষযোগ্য (Compoundable) হবে। এতে লক্ষণীয় যে, পিতা-মাতার ভরণ-পোষণের বিষয়টি নমনীয়ভাবে গ্রহণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে আরো কিছুটা কঠোরতা আরোপ করা প্রয়োজন ছিল।
পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ সংক্রান্ত অপরাধের বিচার কার্য পরিচালনার বিষয়ে ৭নং ধারার ১ উপধারায় বলা হয়েছে Code of Criminal Procedure 1898 (act of 1898) এ যা কিছু থাকুক না কেন এ আইনের অধীনে সংঘটিত অপরাধ প্রথম শ্রেণীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রাপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে বিচারযোগ্য হবে। একই ধারার ২নং উপধারায় বলা হয়েছে যে, এ আইনের অধীনে সংঘটিত অপরাধ সংশ্লিষ্টি সন্তানের পিতা বা মাতার লিখিত অভিযোগ ব্যতীত কোন আদালত তা আমলে গ্রহণ করবে না। “পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ আইন, ২০১৩, ধারা-৭”। আইনের ৭নং ধারার ২নং উপধারায় বলা হয়েছৈ, কোন আদালত এ আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধ সংশ্লিষ্ট সন্তানের পিতা বা মাতার লিখিত অভিযোগ ব্যতীত আমলে গ্রহণ করবেন না। অর্থাৎ আইনী প্রতিকারের হন্য লিখিত অভিযোগের শর্তারোপ করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তাবে পিতা-মাতার প্রতি অসদাচরণের অধিকাংশ পিতা-মাতা তা নীরবে সহ্য করেন বা মনোঃকষ্ট নিয়ে জীবন অতিবিহিত করেন। লিখিত অভিযোগ দায়ের করে আইনী প্রতিকার পাওয়ার মানসিকতা অধিকাংশ পিতা-মাতার থাকে না। সেক্ষেত্রে সরকারের স্বাস্থ্য বিবাগের যেসব কর্মী বাড়ি বাড়ি গিয়ে মাতৃ ও শিশুদের খোঁজ খবর নেন, তাদেরকে প্রতি তিন মাস অন্তর নিজস্ব এলাকার প্রধানদের অবস্থা সস্পর্কে প্রতিবেদন দেয়ার অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া যেতে পারে। তা হলে সরকারের কাছে অতি সহজেই প্রবীণদের সাবিক অবস্থার একটা রির্পোট সংগৃহীত হবে এবং সে মতে পদক্ষেপ ও প্রতিকার বিধান করতে সুবিধা হবে। তা ছাড়া ইউনিয়ন, পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার ও কাউন্সিলরদের এই দায়িত্ব নিয়োজিত করা যেতে পারে। এই রির্পোটের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট বিভাগ প্রতিকারের ব্যবস্থা নিতে পারে। আলোচ্য আইনে বিষয়টি আপোষ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আইনের ৮নং ধারার ১ উপধারায় বলা হয়েছে, এ আইনের অধীন প্রাপ্ত অভিযোগ আপোষ নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা মেম্বার কিংবা ক্ষেত্রমত, সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভার মেয়র বা কাউন্সিলর কিংবা অন্য যে কোন উপযুক্ত ব্যক্তির নিকট আদালত প্রেরণ করতে পারবে। ৮নং ধারার ২ উপধারায় বলা হয়েছে, উক্ত আইনের অধীন কোন অভিযোগ আপোষ নিষ্পত্তির জন্য প্রেরিত হলে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান, মেয়র, মেম্বার বা কাউন্সিলর উভয় পক্ষকে শুনানির সুযোগ প্রদান করবেন এবং বিষয়টি নিষ্পত্তি করবেন এবং এরূপ নিষ্পত্তিকৃত অভিযোগ উপযুক্ত আদালত কর্তৃক নিষ্পত্তি হয়েছে বলে গণ্য হবে। “পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ আইন, ২০১৩, ধারা-৮”। ৯নং ধারায় বলা হয়েছে, সরকারি গেজেটের মাধ্যমে এ আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার বিধি প্রণয়ন করতে পারবে। আইনের ৮নং ধারার ১নং উপধারায় উক্ত বিষয়ে অভিযোগ আপোষ নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা মেম্বার কিংবা ক্ষেত্রমত সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভার মেয়র বা কাউন্সিলর অথবা অন্য যে কোন উপযুক্ত ব্যক্তির নিকট প্রেরণ করার কথা বলা হয়েছে। এখানে চেয়ারম্যান, মেম্বার, মেয়র বা কাউন্সিলর একটি গ্রহণযোগ্য প্রতিষ্টান হলেও ‘অন্য কোন উপযুক্ত ব্যক্তি’র বিষয়টি স্পষ্ট নয়। গ্রামের মোড়ল বা মাতব্বরগণ অনেক সময় গ্রামের সালিশ পরিচালনা করে থাকেন; কিন্তু তাদের যোগ্যতা, জ্ঞান, নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নাতীত নয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।