মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : আফগানিস্তানে নিযুক্ত মার্কিন চিফ কমান্ডার জেনারেল জন নিকলসন আফগান তালেবানদের অস্ত্র সরবরাহ করার জন্য রাশিয়াকে দোষারোপ করেছেন। কি পরিমাণ অস্ত্র দেয়া হয়েছে বা কি ধরনের অস্ত্র দেয়া হয়েছে, সেটা উল্লেখ না করলেও তিনি দাবি করেছেন যে এ কাজের জন্য তাজিকিস্তান সীমান্তকে ব্যবহার করা হচ্ছে।
জেনারেল নিকলসন বলেন, “আফগান-তাজিকিস্তান সীমান্ত বরাবর সামরিক মহড়া শুরু করেছে রাশিয়া কিন্তু যে অস্ত্রগুলো সেখানে মোতায়েন করা হয়েছিল, সেগুলো সব ফিরিয়ে নেয়নি তারা। ইচ্ছা করে যে অস্ত্রশস্ত্র সেখানে ছেড়ে যাওয়া হয়েছে, সেগুলো এক পর্যায়ে আফগানিস্তানে পাচার করা হয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত তাদের টার্গেট গ্রæপ আফগান তালেবানদের হাতে গেছে সেগুলো।”
এই অভিযোগ পুরোপুরি নাকচ করে দিয়ে রাশিয়া বলেছে, তাদের বিরুদ্ধে মার্কিন শীর্ষ কর্মকর্তাদের এ ধরনের অভিযোগ দেয়াটা এটাই প্রথম নয়। এর আগেও তারা এ ধরনের অভিযোগ করেছে কিন্তু কোন বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দিতে পারেনি। তবে, আইএস’র তৎপরতা বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে আফগান তালেবানদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করছে বলে স্বীকার করেছে রাশিয়া।
যদিও মার্কিন জেনারেল বলেছেন যে সরবরাহ করা অস্ত্রাদির পরিমাণ এবং ধরন সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল, তবে কিছু আফগান পুলিশ কর্মকর্তা মিডিয়াকে বলেছেন যে রাশিয়ার সরবরাহ করা অস্ত্রাদির মধ্যে নাইট-ভিশন বাইনোকুলার, ভারি মেশিন গান ও কোমরে বহনযোগ্য অস্ত্রাদি রয়েছে।
এ অঞ্চলে আইএস’র আগমনের কারণে আফগান তালেবানদের ব্যাপারে রাশিয়া ও ইরানের নীতিতে পরিবর্তন এসেছে। প্রাথমিক পর্যায়ে দুই দেশই তালেবানদের বিরুদ্ধে মার্কিন অভিযানের সমর্থন করেছিল। ২০০১ সালে ইরান এমনকি যুক্তরাষ্ট্রকে এ জন্য সহযোগিতাও করেছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র তাদের নির্ম‚লে ব্যর্থ হওয়ার পর ধীরে ধিরে এই ধারণা প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে যে আফগান তালেবানরা এ অঞ্চলের গুরুত্বপ‚র্ণ শক্তি। এই বোধোদয়ের সাথে সাথে আইএস’র উত্থান হওয়ায় তালেবানদের ব্যাপারে ভিন্ন চিন্তা করতে বাধ্য হয়েছে রাশিয়া। তালেবানদের সাথে রাশিয়ার যোগাযোগ রক্ষার একটা বড় কারণ হলো এ অঞ্চলের মার্কিন প্রভাবের বিপরীতে ভারসাম্য রক্ষা করা। যুক্তরাষ্ট্র আক্ষরিক অর্থেই রাশিয়ান ফেডারেশানের পেছনের উঠোনে বসে আছে। ২০০১ সালে আগ্রাসনের সময় বিপর্যস্ত অর্থনীতি এবং অভ্যন্তরীণ দ্ব›েদ্বর কারণে রাশিয়া হয়তো বেশি কিছু করেনি, কিন্তু এখন তাদের ভিত্তি অনেক মজবুত হয়েছে। আফগান তালেবানদের সমর্থন দেয়ার বদলে তারা যে বিষয়গুলোর নিশ্চয়তা চাইবে, সেগুলো হলো:
আফগানিস্তানের ইসলামিক স্টেটের হুমকি চিরকালের মতো শেষ করা, বিদেশী যোদ্ধা, বিশেষ করে উজবেক এবং চেচেনদের যেন আফগানিস্তানের ভেতরেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়, সহিংস রাজনৈতিক সংগ্রাম প্রতিবেশী দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়তে দেয়া যাবে না, বিশেষ করে মধ্য এশিয়ার দেশগুলো দিয়ে সেটা যেন রাশিয়ায় প্রবেশ করতে না পারে এবংআফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনীকে সম্পূর্ণভাবে হটিয়ে দেয়া। আমেরিকার অভিযোগের বিপরীতে, রাশিয়া বরং অভিযোগ করেছে যে ওয়াশিংটন আইএস’কে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে অস্ত্র দিচ্ছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো উভয় পক্ষই তাদের দাবির পক্ষে সুস্পষ্ট প্রমাণ দিতে ব্যার্থ হয়েছে। আফগানিস্তান এখন শুধু আর একটা সরকার এবং দেশের ভেতরের একটা জঙ্গি শক্তি এবং একটা বিদেশী সেনাবাহিনী যারা কিভাবে কি করবে না বুঝেই এই যুদ্ধে জড়িয়েছে- এই তিন শক্তির ক্ষমতার দ্ব›দ্ব নয়। এটা বরং একটা ‘গ্রেট গেমে’ রূপ নিয়েছে যেখানে চীন ও ইরানও জড়িত।
যেমনটা আগে বলা হয়েছে যে, আগ্রাসনের শুরুর দিকে তালেবান বিরোধী নীতি নিয়েছিল ইরান। কিন্তু আইএসসের হুমকির কারণে সুন্নী তালেবান শিয়া ইরানের সাথে বোঝাপড়া করেছে এবং সেভাবে কাজ করে চলেছে। একই সাথে, বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ প্রকল্পের পেছনে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে চীন, যেটা এখানে অনেকটাই প্রাসঙ্গিক।
চায়না পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোরের সাফল্য নির্ভর করছে আফগানিস্তানের স্থিতিশীলতার উপর। অবকাঠামোর নিরাপত্তা ছাড়াও চীনের মুসলিম অধ্যুষিত জিনজিয়াং প্রদেশে জঙ্গি তৎপরতার সাথেও আফগানিস্তানের পরিস্থিতির সম্পর্ক রয়েছে। উইঘুর বিচ্ছিন্নতাবাদীরা আফগান তালেবানদের থেকে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে বলে জানা যায়। এদের অনেকেই আবার যুক্তরাষ্ট্র ও আফগান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যোগও দিয়েছে। স‚ত্র : সাউথ এশিয়ান মনিটর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।