বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
উন্নয়নের নামে প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে জিম্মি করে আওয়ামী লীগের যেকোনো কর্মসূচিতে অংশগ্রহণে বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে গণতন্ত্র স্বরবিদ্ধ, সুশাসন আওয়ামী চাকায় পিষ্ট। এই গণতন্ত্রহীণ দেশে লুটপাটের নামে জনগণের টাকা আত্মসাৎকে এরা উন্নয়ন বলছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় খরচে বিভিন্ন সভা-সমাবেশ করছেন, নৌকায় ভোট চাচ্ছেন। সরকারী কর্মচারীদেরকে যেভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, এসব হচ্ছে নির্বাচনী আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ইলেকশন কমিশন এসব দেখেও না দেখার ভান করে বরং সরকারকে সহযোগিতা করছে।
সরকারের কর্মসূচিকে তামাশার কর্মসূচি উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকারের আজকের কর্মসূচি এক বিকৃত তামাশা। গোটা ঢাকা শহরের রাস্তাঘাট অচল হয়ে গেছে, জনজীবন হয়ে গেছে সম্পূর্ণভাবে স্থবির, ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষ রাস্তায় আটকা পড়ে আছে। সরকার বলছে-জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয় এমন কোন কর্মসূচি করতে দেয়া হবে না, অথচ উল্টো সরকারই জনদুর্ভোগ সৃষ্টিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। সত্যি আমরা আজব দেশে বাস করছি যা শামসুর রহমানের একটি কবিতা মনে পড়লো-আজব দেশের ধন্য রাজা, দেশজোড়া তার নাম, বসলে বলে হাটরে তোরা, চললে বলেন-থাম, থাম, থাম, থাম।
বেগম জিয়া ন্যায়বিচার পাননি অভিযোগ করে তিনি বলেন, দেশের নাগরিক হিসেবে বেগম জিয়াকে ন্যায্য-বিচার-প্রক্রিয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। বিচার বিভাগকে অবশ্যই সরকারের প্রভাবমুক্ত হতে হবে। আদালত নিরপেক্ষ না হলে দেশের নাগরিকবৃন্দ নিজেদের ডিফেন্ড করতে পারবে না, তখন বিচারের বাণী সরকারের বাণীতে পরিণত হবে।
রিজভী বলেন, দেশের জনগণের সমর্থন না থাকায় আওয়ামী লীগ দিশেহারা হয়ে বিভিন্ন দেশে দেশে লবিং করতে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং বেশ কয়েকটি দেশে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়েছে। গত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনতো দেশে বিদেশে কোথাও গ্রহনযোগ্যতা পায়নি. তাই বিদেশী বন্ধুরা তাদের প্রশ্ন করছেন আগামী নির্বাচন কি আবারও ভোটারবিহীন হবে, নাকি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও সকল দলের অংশগ্রহনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ? যুক্তরাজ্য ও জেনেভায় আওয়ামী লীগের নেতা ও মন্ত্রীরা কিভাবে অপদস্থ হয়েছেন তা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তাই বলতে চাই-কোন চক্রান্ত ষড়যন্ত্র করে আওয়ামী লীগ সফল হবে না। বরং দেশে-বিদেশে তারা ধিকৃতই হবে। সকল চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে।
শিশু পার্ক থেকে নাম মুছে ফেলার প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা সাবেক প্রেসিডেন্ট শহীদ জিয়ার রহমান এর নাম মুছে ফেলার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার। যে উদ্দেশ্যে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এর নাম পরিবর্তনসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠান থেকে তাঁর নামফলক, ম্যুরাল ভেঙ্গে ফেলা এবং ক্যান্টনমেন্টের বাড়ী থেকে বেগম জিয়াকে উৎখাত করা হয়েছে। আর এখন জিয়া শিশু পার্কের নামও মুছে ফেলার চক্রান্ত হচ্ছে বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। অন্যের অর্জনকে যারা আত্মসাৎ করে তারাই হচ্ছে ডাকাত, তারাই হচ্ছে দখলদার। আর আওয়ামী লীগের স্বভাবধর্মই তো সন্ত্রাসের বাতাবরণে অন্যের সম্পদ আত্মসাৎ করা।
তিনি বলেন, অন্যায় আর পাপের সাগরে ডুবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনি কি ভেবেছেন চিরদিন রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখবেন ? আপনার অবৈধ ক্ষমতার মখমলের চেয়ারের চারপায়ে যে উইপোকা ধরেছে সেটি আপনি টের পাচ্ছেন না। পতন কিন্তু বলে কয়ে আসে না। উত্তরের কালবৈশাখী ঝড়ের মতো কখন যে সেই গদি উল্টে যাবে তা অনুধাবন করতে পারছেন না। সরকার শহীদ জিয়ার নাম মুছে ফেলার ঘৃণ্য উদ্যোগ নিলেও জাতির হৃদয় থেকে মহান স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলা যাবে না। তিনি আছেন থাকবেন যুগযুগ ধরে কোটি কোটি মানুষের অন্তরে। তিনি দলের পক্ষ থেকে সরকারের এধরণের উদ্যোগকে ধিক্কার, নিন্দা এবং তীব্র প্রতিবাদ জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।