Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বোয়ালখালীতে ওরশে মঞ্চ বসানোকে কেন্দ্র করে ছুরিকাঘাতে নিহত ১ : আহত ৯

এলাকায় উত্তেজনা

বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২২ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে একটি মাজারের ওরশে মঞ্চ ও টেবিল বসানোকে কেন্দ্র করে মো. শাহ আলম (৫৫) নামের এক ব্যাক্তি ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছে।
এ সময় আরো ৯ জন আহত হয়েছে । গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার মধ্যম চরণদ্বীপ ফকিরাখালী ঈদগাহ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় দু’গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ কছে। নিহত শাহ আলমের ভাই সিরাজুল ইসলাম নবী বাদী হয়ে তৌহিদুল ইসলাম ও আবদুল মন্নানসহ ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ১৫/২০ জনকে অজ্ঞাত রেখে বোয়ালখালী থানায় মামলা দায়ের করেছেন । নিহত মো. শাহ আলম স্থানীয় মধ্যম চরণদ্বীপের ফকিরাখালী এলাকার মৃত নজির আহমদের ছেলে। জানা যায়, উপজেলার মধ্যম চরণদ্বীপ বোর্ড স্কুলের পার্শ্বে অবস্থিত হযরত তুফান আলী শাহ (রহ.)’র বার্ষিক ওরশ পূর্ব নির্ধারিত স্থানে গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। দীর্ঘদিন ধরে এ ওরশ দু’গ্রুপে বিভক্ত হয়ে আয়োজন করে আসছিল। প্রতিবারের ন্যায় দু’গ্রুপের লোকজন স্ব-স্ব স্থানে প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত। কিন্তু হঠাৎ এক গ্রুপের সভাপতি আ. মন্নানসহ তার সমর্থরা মিলে অপর ওরশ কমিটির সমর্থকদেরকে মাজার প্রাঙ্গনে মঞ্চ নির্মাণ ও টেবিল বসাতে নিষেধ করে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে পূর্বপরিকল্পিত মন্নান গ্রুপের একজন তাদের সমর্থকদের মোবাইল করলে মোহরম, মন্নান, ইকবাল, দিদার ও সাদ্দামের নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওরশ কমিটির অপর গ্রুপের সভাপতি আবুল কালাম মিয়াজির সমর্থকদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে। এ সময় তাদের উভয় পক্ষকে শান্ত করার লক্ষ্যে শাহ আলম সহ স্থানীয়রা এগিয়ে গেলে মন্নান গ্রুপের লোকজন তাদের উপর আক্রমণ করে। এ সময় ছুরি দিয়ে আঘাত করলে শাহ আলমের বুকের বাম পাশে ছুরি ঢুকে যায়। এ সময় শাহ আলম মাটিতে লুটিয়ে পড়লে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা আহত শাহ আলমকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে বোয়ালখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত সহকারী সার্জন ডা. আরিফা জামিল বলেন, শাহ আলমকে গত মঙ্গলবার রাত ১০.০৫ মিনিটের সময় হাসপাতালে আনা হয়েছে। তার বুকের বাম পাশে হার্টে ছুরি র আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছ্ েবরে জানান তিনি। তিনি বলেন, আঘাতটা হার্টে লেগেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে তবে ঠিক কি কারণে মৃত্যু হয়েছে এর বিস্তারিত ফরেন্সিক রিপোর্টের পর জানা যাবে।
নিহত শাহ আলমের ভাই মো. সিরাজ বলেন, শাহ আলম এর কিছুতে জড়িত ছিলনা। নামাজ পড়ার পর দু’গ্রুপের মধ্যে কথা কাটাকাটি হচ্ছে দেখে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করতে সেখানে গেলে পরিকল্পিতভাবে মন্নান তার পালিত সন্ত্রাসীদের দিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। ভাই শাহ আলম উপজেলা গাউছিয়া কমিটির সদস্য ও স্থানীয় চরণদ্বীপ ইউনিয়ন গাউছিয়া কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আমি এর বিচার চাই।
বোয়ালখালী উপজেলা ভাইস চেয়াম্যান ও গাউছিয়া কমিটি বোয়ালখালী উপজেলা শাখার সভাপতি কাজী মাওলানা মো. ওবাইদুল হক হক্কানী বলেন, শাহ আলম শান্তসৃষ্ট একজন সুন্নী মতাদর্শে অনুসারী গাউছিয়া কমিটির সক্রিয় কর্মী ছিলেন। একটা ওরশ নিয়ে এ ধরণের নোংরা রাজনীতি ও ধংসাত্তক কর্মকান্ড মেনে নেয়া যায়না। এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া দরকার। আশা করি প্রশাসন তাই করবেন।
এব্যাপারে বোয়ালখালী থানার অফিসার ইনসার্জ হিমাংশু কুমার দাস বলেন, ওরশে মঞ্চ ও টেবিল বসানোকে কেন্দ্র করে এক গ্রুপ অপর গ্রুপের উপর হামলার ঘটনায় ১জনের মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি খুবই দু:খজনক। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ১৫/২০ জনকে অজ্ঞাত রেখে থানায় মামলা দায়ের করেছেন ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: উত্তেজনা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ