Inqilab Logo

রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪, ১৬ আষাঢ় ১৪৩১, ২৩ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ইতিহাসের বাঁকে দাঁড়ানো চীনকে সমাজতন্ত্রই রক্ষা করতে পারে : শি

সমৃদ্ধি নিয়ে আত্মতুষ্টিতে ভোগার সুযোগ নেই, রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ে প্রস্তুত রয়েছে চীন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

নিজেদের সমৃদ্ধি নিয়ে আত্মতুষ্টিতে ভোগার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। গতকাল মঙ্গলবার ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের (এনপিসি) বার্ষিক অধিবেশনের সমাপ্তিতে তিনি বলেছেন, চীন ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ বাঁকে দাঁড়িয়ে আছে, কেবল সমাজতন্ত্রই একে রক্ষা করতে পারবে। পার্লামেন্টে দেওয়া বক্তৃতায় শি তাইওয়ানের চীন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার প্রচেষ্টার ব্যাপারেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এনপিসির এবারের অধিবেশনেই ‘কোনো ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে চীনের প্রেসিডেন্ট থাকতে পারবে’- বিধানটি তুলে দেওয়ায় শি-র আজীবন ক্ষমতায় থাকার পথ খুলে গেছে। অধিবেশন শুরুর দিনই প্রায় তিন হাজারের মতো প্রতিনিধির সম্মতিতে সংবিধানের এ ধারাটি বিলুপ্ত হয়। চীনের এ ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেস বছরে একবার বসে; সাধারণত চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) শীর্ষ নেতৃত্বের নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোই এখানে অনুমোদিত হয়। গ্রেট হল অব দ্য পিপলে দেওয়া ভাষণে শি চীনকে নিয়ে তার মহাপরিকল্পনার কথা জানান। বলেন চীনের পুনর্যৌবন ও সভ্যতার অগ্রগতিতে অবদান রাখার আকাক্সক্ষার কথা। চীনকে বিভাজনের প্রচেষ্টাকারীদের পরিণাম ভালো হবে না বলে সতর্ক করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। বিশ্বে নিজেদের পরাক্রমশালী স্থান পাকাপোক্ত করতে চীন শত্রæদের সঙ্গে ‘রক্তক্ষয়ী লড়াই’ চালাতেও প্রস্তুত রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কর্মকর্তাদের তাইওয়ানে যাওয়ার অনুমতি দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন বিধি জারি করার কয়েক দিনের মাথায় বিভক্তিকরণ নিয়ে এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করলেন শি জিনপিং। স¤প্রতি সংবিধান সংশোধনীর মধ্য দিয়ে চীনে নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী হন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। চীনের পিপলস পার্টির বার্ষিক সম্মেলনে প্রেসিডেন্টের জন্য নির্ধারিত দুই মেয়াদের অবসান ঘটানোর মধ্য দিয়ে তার আজীবন ক্ষমতায় থাকার সুযোগ তৈরি হয়েছে। এই সংশোধনীর কারণে তিনি একইসঙ্গে আজীবন পার্টি ও সামরিক বাহিনীর প্রধান থাকবেন। গতকাল মঙ্গলবার ছিল ন্যাশনাল পিপল’স কংগ্রেসের বার্ষিক অধিবেশনের সমাপনী দিন। ‘চীন রাষ্ট্রের পরাক্রমশালী অবস্থান পাকাপোক্ত করার প্রশ্নটি এখন চীনা নাগরিকদের সবচেয়ে বড় স্বপ্নে পরিণত হয়েছে। বিশ্বে স্থান ফিরে পেতে আমরা আমাদের শত্রæর বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী লড়াই চালাতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’ তিনি আরও বলেন, থেকে চীনা জনগণ জেনে আসছেন, কোনও কিছু এমনি এমনি পাওয়া যায় না। সুখে থাকতে চাইলে এর জন্য অবশ্যই লড়াই করতে হয়। স¤প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কর্মকর্তাদের তাইওয়ানে যাওয়ার অনুমতি দিয়ে নতুন বিধিতে স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার ন্যাশনাল পিপল’স কংগ্রেসের ভাষণে শি হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘এক চীন নীতি’র সুরক্ষা নিশ্চিত করবে বেইজিং। প্রসঙ্গত, এই ‘এক চীন নীতি’র আওতায় স্ব-শাসিত তাইওয়ানকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করে চীন। গ্রেট হলে ৩০০০ প্রতিনিধির সামনে দেওয়া ভাষণে শি জিন পিং বলেন, ‘দেশকে বিভক্ত করতে চালানো সব ধরনের কর্মকাÐ ও কৌশল ব্যর্থ করা হবে। এ ধরনের প্রচেষ্টা নিয়ে লোকজন নিন্দা করবে। ইতিহাসই এর বিচার করবে।’ চীনের অগ্রগতিতে ‘জনগণই সত্যিকারের নায়ক’ মন্তব্য করে প্রেসিডেন্ট সাধারণ জনগণের স্বার্থে রাজনীতিবিদদের কঠোর পরিশ্রম করারও আহŸান জানান। সমাপনী অধিবেশনে শি-র বক্তব্যের আগে বার্ষিক সংবাদ সম্মেলনে চীনের স্টেট কাউন্সিলের প্রিমিয়ার লি কেকিয়াং বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সহযোগিতা আরও বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এনপিসির এ অধিবেশনে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ এবং প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পদে নতুন নিয়োগের পাশাপাশি দুর্নীতি দমনে একটি শক্তিশালী সংস্থা করার আইনও অনুমোদিত হয়। সমালোচকদের ধারণা, এ সংস্থার মাধ্যমে শি দলে তার বিরোধীদের সাইডলাইনে সরিয়ে দেওয়ার সুযোগ পেলেন। বিবিসি, রয়টার্স, সিনহুয়া, এএফপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চীন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ