রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
বাঙালির প্রধান সবজি লম্বা বেগুনের কেজি মাত্র ৫ টাকা। অবিশ্বাস্য হলেও এটিই সত্য। যে লম্বা বেগুন মাসাধিককাল পূর্বে বাজারে ছিলই না, পক্ষকাল পূর্বেও বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা কেজি দরে, সেই বেগুন এখন মাত্র ৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে মানভেদে ১০ টাকা কেজি দরেও কিছু কিছু জাতের বেগুন বিক্রি হচ্ছে। বেগুনের যেমন বিভিন্ন জাত রয়েছে, তেমনি ক্রেতাও রয়েছে বিভিন্ন ধরনের। উচ্চ ফলনশীল বা হাইব্রিড জাতের বেগুনের ক্রেতা হচ্ছে সমাজের উচ্চবিত্ত শ্রেণীর লোকজন। পক্ষান্তরে দেশীয় জাতের লম্বা বেগুনের ক্রেতা হচ্ছে কৃষক বা পরিবারের লোকজন। তবে খেতে সুস্বাদু হচ্ছে দেশীয় জাতের বেগুন। দেখতে সুন্দর ও তেল চুকচুকে চেহারার হলেও হাইব্রিড বা উচ্চ ফলনশীল জাতের বেগুন স্বাদে ভালো নয়। এখন বাজারে দেশীয়, উচ্চ ফলনশীল ও হাইব্রিড জাতের বেগুনে ভরপুর। সচেতন ক্রেতারা পোকড়া বেগুন দেখে বেগুন কিনে। কারণ পোকড়া বেগুনে বিষ দেয়া হয় না। পক্ষান্তরে তেল চুকচুকে চেহারার লম্বা বেগুনে বিষ থাকে। আগের দিন বিষ দিয়ে পরের দিনই বাজারে পাঠানো হয় এসব বিষাক্ত বেগুন। আর এসব বিষাক্ত বেগুন খেয়ে মানুষ ধীর বিষক্রিয়ার শিকার হচ্ছে। বেগুন বিক্রেতা খোরশেদ আলম জানিয়েছেন, তিনি বছরে বার মাসই বেগুন বিক্রি করেন। যখন বাজারে বেগুনের সংকট সৃষ্টি হয়, তখনও তিনি নরসিংদীর বিভিন্ন এলাকা থেকে বেগুন সংগ্রহ করে এনে বিক্রি করেন। খোরশেদ আলম নিজে খুচরা বেগুন বিক্রি করেন। আবার বাজারে চাটাইগুলোতে পাইকারী সরবরাহ করেন। তার কাছ থেকে কিনে নিয়ে চাটাইওয়ালারা বাড়তি দরে বিক্রি করে। পক্ষান্তরে খোরশেদ আলম বিক্রি করেন অপেক্ষাকৃত কম দামে। কম দামে বেগুন বিক্রি করেন বিধায় ধনী-গরিব সব শ্রেণীর ক্রেতারাই তার কাছ থেকে বেগুন কিনে থাকে। অনেক ক্রেতা বাজারে গিয়ে অপেক্ষা করেন খোরশেদ আলম কখন বেগুন নিয়ে আসবে। অথচ লম্বা বেগুন নিয়ে প্রতিবছরই পাইকারী বিক্রেতারা লংকাকান্ড ঘটিয়ে থাকেন। জনপ্রিয় সবজি হিসেবে লম্বা বেগুনের অতি চাহিদার সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন সাধারণ মানুষের পকেট থেকে। নরসিংদী একটি সবজি প্রধান এলাকা। নরসিংদী জেলার ৬ টি উপজেলাই ব্যাপকভাবে মৌসুমী শাক-সবজি চাষাবাদ হয়ে থাকে। বর্ষা মৌসুমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় যখন লম্বা বেগুন থাকে না, তখনও নরসিংদীতে লম্বা বেগুন পাওয়া যায়। রাজধানী ঢাকার ফড়িয়ারা নরসিংদী থেকে লম্বা বেগুন কিনে নিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় চড়া দামে বিক্রি করে। নরসিংদীতে যখন এক কেজি লম্বা বেগুন বিক্রি হয় ১০ টাকা, তখনও ঢাকার বাজারে ফড়িয়ারা বেগুন বিক্রি করে ৩০/৪০ টাকা কেজি দরে। নরসিংদীতে যখন ২০/২৫ টাকা কেজি দরে লম্বা বেগুন বিক্রি হয়, তখনও ঢাকার বাজারে ফড়িয়ারা বেগুন বিক্রি করে একশ টাকা কেজি দরে। খবর নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে নরসিংদীতে এক কেজি বেগুন ৫ থেকে ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও ঢাকার বাজারে এখনও ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে করছে ফড়িয়ারা। বছরের পর বছর ধরে মধ্যস্বত্বভোগী ফড়িয়ারা বেগুন নিয়ে এসব কেলেঙ্কারী করে থাকে। অথচ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণকারীরা এ ব্যাপারে ফড়িয়াদের বিরুদ্ধে কোনই কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে না। বেগুন যখন ব্যাপকভাবে উৎপাদিত হয়, তখন স্থানীয় পাইকারী বাজারগুলোতে দাম কমে যায়। কিন্তু জেলা শহরের বাজারগুলোতে দাম কমে না। নানা অজুহাতে ফড়িয়ারা দাম বৃদ্ধি করে থাকে। তারা পরিবহন ব্যয় ও রাস্তার চাঁদাবাজী দেখিয়ে চড়া দামে বেগুন বিক্রি করে। দাম কমে গেলে বেগুন চাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। লাভবান হয় মধ্যস্বত্বভোগী ফড়িয়ারা। কৃষিবিদদের মতে, বেগুন খুব দ্রুত পচনশীল সবজি। সংরক্ষণের কোন প্রযুক্তি না থাকায় চাষীরা গাছ থেকে উত্তোলন করে সাথে সাথেই বিক্রি করে দিতে হয়। ক্ষেত থেকে বেগুন উত্তোলনের সময় সামান্য আঘাত পেলেই বেগুনের পচন শুরু হয়। আর সুযোগটিই গ্রহণ করে মধ্যস্বত্বভোগী ফড়িয়ারা। তারা জানিয়েছেন, বেগুন সংরক্ষণের উন্নত প্রযুক্তি পাওয়া গেলে এবং সংরক্ষণের সুযোগ সৃষ্টি হলে বেগুন চাষীরা লাভবান হবে। ফড়িয়ারা জনগণের পকেট থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার সুযোগ পাবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।