Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রতিবাদ করায় ভুক্তভোগীদের পিটিয়ে জখম

শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ

| প্রকাশের সময় : ২০ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

নাটোর জেলা সংবাদদাতা : বার বছরের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগ ওঠেছে মাদরাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ওই ছাত্রী ঘটনার বর্ণনা তার নানীর কাছে বলায় নানী ওই মাদ্রসা শিক্ষক সালাউদ্দিনকে চপেটাঘাত করে। মাদ্রাসা শিক্ষককে মারার ঘটনায় গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমেই ওই ছাত্রীর নানা সাবেক ইউপি সদস্য আশকান মোল্লাকে ২৫ বার কান ধরে উঠবস করার রায় দেন গ্রাম্য প্রধানরা। ওই রায় না মানায় আশকান মেম্বর ও তার স্বজনদের পিটিয়ে জখম করে মাদরাসা কর্তৃপক্ষের লোকজন। এতে আব্দুল জব্বার, মুক্তার হোসেন, আব্দুর রহিম, শহিদুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হন। এদের মধ্যে আব্দুল জব্বারকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। রোববার রাতে গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের মোল্লাবাজার উত্তরপাড়া গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে। এঘটনায় আহত আব্দুল জব্বারের ভাই আমজাদ হোসেন বাদী হয়ে গুরুদাসপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। ভুক্তভোগী পরিবার ও থানার সূত্রে জানা গেছে, নানীর বাড়ি থেকে মামদপুর মাদরাসায় কারিয়ানা পড়তো ওই ছাত্রী। সেখানকার শিক্ষক সালাউদ্দিন (৩২) পড়ানোর ছলে প্রায়ই ওই ছাত্রীর স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিতেন। সর্বশেষ প্রায় ১৫ দিন আগেও ওই ছাত্রীর সাথে একই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগি ছাত্রী বিষয়টি তার পরিবারের কাছে জানায়। এঘটনায় ছাত্রীর নানী বাদী হয়ে মাদরাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে গুরুদাসপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ডায়েরি করায় ওই শিক্ষকের সাথে বাদীর বাকবিতন্ড হয়। এক পর্যায়ে ওই শিক্ষককে চপেটাঘাত করেন তিনি। এ ঘটনায় মাদরাসা পরিচালনা কমিটির কাছে বিচার দাবি করেন ওই শিক্ষক। অভিযোগের প্রেক্ষিতে সম্প্রতি মাদরাসা পরিচালনা কমিটির পক্ষে গ্রাম্য মাতব্বর আব্দুল কুদ্দুস, রুবেল, রতন,মাজেম আলী, ডালু ও আফছার গ্রাম্য সালিশ ডাকেন। এতে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানীর বিষয়টি এড়িয়ে যান মাতব্বরগণ। উপরন্ত শিক্ষককে চপেটাঘাত করার অপরাধে আশকান মোল্লাকে ২৫বার কান ধরে উঠবস করার রায় দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী আশকান মোল্লা অভিযোগ করেন, তার নাতনিকে যৌন হয়রানী করায় তার স্ত্রী ক্ষিপ্ত হয়ে ওই শিক্ষককে চপেটাঘাত করেন। এ ঘটনায় সালিশে যৌন হয়রানীর ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত দেয়নি। উপরন্ত তার স্ত্রীর চপেটাঘাতের কারনে তাকে ২৫বার কান ধরে উঠবসের রায় দেওয়া হয়। এরপর থেকে ওই শিক্ষক মাদরাসায় আসেননি। রোববার রাতে ওই রায় ব্যস্তবায়নের জন্যই পুণরায় সালিশ ডাকে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। তারা রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় তাকে এবং তার স্বজনদের পিটিয়ে জখম করেছে গ্রাম্য প্রধানদের লোকজন।
মাদরাসা শিক্ষক সালাউদ্দিন মাদরাসায় না থাকায় এবং তার মোবাইল ফোন যোগাযোগ করার জন্য বারবার তার ফোনে ফোন দিলে ফোন বন্ধ থাকায় তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. রতন জানান, সিংড়া উপজেলায় ওই শিক্ষকের বাড়ি । প্রায় দুই বছর ধরে শিক্ষক সালাউদ্দিন ওই মাদরাসায় চাকরি করছেন। শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে ওই ছাত্রীর নানী তাকে চপেটাঘাত করেছেন। একারনেই গ্রাম্য সালিশে প্রধানগণ স্ত্রীর অপরাধে স্বামী আশকান মোল্লাকে ২৫বার কান ধরে উঠবসের রায় দেন।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দিলিপ কুমার দাস জানান, খবর পেয়ে রোববার রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। অভিযোগ পাওয়া গেছে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রতিবাদ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ