নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : মাত্র একটা বল, একটা বাউন্ডারি আটকাতে পারলেই হয়ে যেত। একটুর জন্য না পাওয়ার আক্ষেপে এখনো পুড়ছে ক্রিকেটপ্রেমীরা। তবে আগের রাতে মাঠে যারা ছিলেন জ্বলুনিটা তাদেরই বেশি হওয়া স্বাভাবিক। শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে হেরে বাংলাদেশ দল দেশে ফিরেছে গতকাল সকালে। শ্রীলঙ্কায় নিদহাস কাপের শুরু থেকেই দলের সঙ্গে ছিলেন বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন। দারুণ খেলেও শেষটায় এসে আক্ষেপের হার পোড়াচ্ছে তাকেও। তবে হারলেও দলের সবার নিবেদন আর লড়াকু মানিসকতায় খুশি তিনি।
আরেকবার ফাইনালে এমন হৃদয়-ভাঙা হারে কষ্ট পেয়েছেন সমর্থকরা। তবে বিসিবি প্রধান মনে করিয়ে দিলেন মাঠে যারা খেলেছেন কষ্টটা তাদেরই বেশি, ‘আমি যেটা বলবো, আমরা ফাইনাল ম্যাচ হেরে গেছি। এ জন্য অনেক কষ্ট পেয়েছে, হতাশ হয়েছে। আমি শুধু একটা কথাই বলব, আমাদের ছেলেরা আমাদের চেয়ে অনেক বেশি কষ্ট পেয়েছে। আমি ওদের সঙ্গে ছিলাম। আমি জানি ওদের অবস্থা। ওরা অনেক ভেঙ্গে পড়েছিল। আমি ওদেরকে বলেছি, হার-জিত বড় কথা নয়। একদল জিতবে আরেক দল হারবে। তবে আমি ভালো খেলা দেখতে চাই। এবং প্রত্যেকটা খেলা তারা ভালো খেলেছে এবং বীরের মতো খেলেছে।’
ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে আগে ব্যাটিং পায় বাংলাদেশ। ফর্মে থাকা ব্যাটসম্যানরা বড় রান পাননি। কেবল সাব্বির রহমানের ফিফটিতে দল পায় ১৬৬ রানের পুঁজি। ব্যাটিং পিচে এই পুঁজি নিয়েও শেষ বল পর্যন্ত লড়াই করতে পারায় সন্তুষ্ট নাজমুল, ‘আমাদের দলের সেরা চার ব্যাটসম্যান ফাইনালে রান করতে পারেনি, তারপরও এই পুঁজি নিয়ে আমরা যেভাবে লড়েছি এটা প্রশংসার দাবি রাখে। এবং শেষ বল পর্যন্ত আমরা লড়াই করেছি। আমি সেইজন্য বলবো তারা হয়তো কষ্ট দিয়েছে, হতাশ করেছে। কিন্তু তারা বীরের মতো লড়াই করেছে। সেই কারণে আমি তাদের উপর খুশি।’
তবে সান্ত¡না দিলেও বারবার আক্ষেপ গোপন করতে পারেননি বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় কর্তাও, এই ক্ষত সহজে কাটানোর নয় বলে মত তার, ‘এতো কাছে গিয়ে হার, আমি মনে করি সকল বাংলাদেশির মনের অবস্থা একই। নিশ্চিত জিতে যাওয়া অবস্থা থেকে হেরে যাওয়া মেনে নেওয়া যায় না। কষ্ট বলবো নাকি কি আফসোস বলবো..। কিছু ঘটনা থাকে সহজেই মুছে যাওয়ার নয়। এটা সারাজীবন মনে থাকার মতো ঘটনা।’
আগে থেকেই ঠিক ছিল ফাইনাল খেলে বাংলাদেশ দল গতকাল সকালে দেশে ফিরবে। কাপ নিয়ে ফেরার সম্ভাবনাও উজ্জ্বল থাকায় প্রস্তুতি ছিলো ব্যাপক। শেষ পর্যন্ত কাপ জিততে না পারায় উৎসবে ভাটা পড়েছে। তবে রোমাঞ্চকর ম্যাচ খেলায় বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের ভিড়ের কমতি ছিলো না। বিসিবির পক্ষ থেকে ফুল নিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়েছে নিদহাস ট্রফিতে ভালো খেলে বাংলাদেশ দলকে। সাংবাদিকদের সামনে পড়েন মনমরা মুশফিকুর রহিম। এমন হারের পরও সেরা ক্রিকেট খেলতে পারায় নিজেদের কৃতিত্ব পাওয়ার যোগ্য মনে করেন মুশফিক, ‘এই কয়টা দিন আমরা যেভাবে ক্রিকেট খেলেছি, ম্যাচ জিতেছি পুরো বাংলাদেশ দল কৃতিত্ব পাওয়ার যোগ্য। হোম সিরিজে টি-টোয়েন্টিতে আমরা যেভাবে হেরেছিলাম শ্রীলঙ্কার সঙ্গে, এরপর ওদের মাটিতে এভাবে জেতা অনেক বড় প্রাপ্তি। আপনারা যদি খেয়াল করেন, দুটি ম্যাচ আমরা জিতেছি ওই দুটি ম্যাচ খুবই ক্লোজ ছিল। ঘরের মাঠে ক্লোজম্যাচ দুটি আমরা জিততে পারিনি, কিন্তু ওখানে কিন্তু আমরা ওভারকাম করে জিতেছি।’
ম্যাচ হেরে সাকিব আল হাসান কাউকে দোষ দিতে চাননি। একই পথে হেঁটেছেন পুরো টুর্নামেন্টে দারুণ ব্যাট করা মুশফিক, ‘এটাতো খারাপ লাগাই স্বাভাবিক। আমি মনে করি না, এটা শুধু একজনের জন্যই হয়েছে। আমরা বোলাররা মিলে যদি ১ কিংবা ২টা রান কম দিতে পারতাম। কিংবা আমরা ব্যাটসম্যানরা যদি আরও ১০টা রান বেশি করতে পারতাম। এটা দলীয় গেম, একজনের ব্যর্থতা মানে সবারই ব্যর্থতা।’
ভারতের জিততে তিন ওভারে লাগত ৩৫ রান। মোস্তাফিজের করা ১৮তম ওভার থেকে আসে মাত্র একটা লেগ বাই রান। পরের ওভারে রুবেল দিয়ে দেন ২২ রান। শেষ ওভার প্রথম ৫ বল দারুণ করেও ১২ রান আটকাতে পারেননি অনিয়মিত বোলার সৌম্য সরকার। মুশফিকের মতে আশা নিরাশার দোলাচলের সবই হয়েছে ভাবনার বাইরে, ‘মোস্তাফিজ এক ওভার মেডেন উইকেট নিবে, এটা কেউই বিশ্বাস করেনি। ঠিক সেইরকমই রুবেলর ওভারটাতে এতো রান হবে এটা বিশ্বাস হয়নি। ক্রিকেট খেলায় এটা হয়েই যায়। এর থেকে আমাদের শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।