Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বাধীনতা সংগ্রামের বাস্তব ইতিহাস

মোহাম্মদ আবদুল গফুর | প্রকাশের সময় : ১৫ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

কী বিচিত্র মানুষের জীবন! এক দিকে এই সেদিন চীনের নেতা সি জিনপিংএর আজীবন ক্ষমতাসীন থাকার ব্যবস্থা। অন্যদিকে নেপালে ইউএস বাংলার ফ্লাইট দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন একাধিক দেশের শতাধিক বিমান যাত্রী। দুর্ঘটনার জন্য কে বা কারা দায়ী তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। আরও উঠবে। কিন্তু আপাতত এটাই সত্য যে, বেশ অনেকগুলো মানুষের জীবন চিরতরে হারিয়ে গেছে, যা তারা চায়নি।
আমাদের সমাজে একটা বহুল প্রচলিত কথা এই যে, হায়াত মউত রিজিক দৌলত নিয়ে কেউ কোন কিছু নিশ্চিত করে বলতে পারে না। এসব একমাত্র সর্বশক্তিমান আল্লাহ তায়ালার উপর নির্ভর করে। তাই কোন মানুষ জোর করে বলতে পারে না। সে কতদিন বেঁচে থাকবে, কী ভাবে তার জীবন সমাপ্ত হবে, অথবা কীভাবে সে জীবন যাপন করতে পারবে। অথচ যে জীবন নিয়ে এক মুহূর্তের জন্য নিশ্চয় করে কিছু বলতে পারা যায় না, তাই নিয়ে আমাদের কত স্বপ্ন, কত আকাংখা, কত পরিকল্পনা। এসব স্বপ্ন বা পরিকল্পনা কার্যকর করতে গিয়ে আমরা কত মানুষের সর্বনাশ করে বসি কত জনের অনুরূপ স্বপ্নের মহা সর্বনাশ করে বসি পৃথিবীর কত দেশের কত জাতির ধ্বংস সাধনও দ্বিধা করিনা অনেক ক্ষেত্রে।
এক মানব গোষ্ঠির ধ্বংস-সাধনের মাধ্যমে অন্য মানব গোষ্ঠির উন্নতি সাধনের এসব ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার মধ্য দিয়েই জাতির উত্থান পতনের ইতিহাস এগিয়ে চলে। আমাদের দেশে যে একদা সাত সমুদ্র তের নদীর ওপার থেকে আসা ইংরেজদের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয় তারও মূলে ছিল এই প্রক্রিয়া। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যাদের বুদ্ধি তথা কুবুদ্ধিতে এবং যাদের পরামর্শ ও সহযোগিতায় এদেশে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়েছিল তাদের হাজারো বুুদ্ধি পরামর্শ ও চেষ্টায়ও সে ইংরেজ শাসন এদেশে স্থায়ী হতে পারেনি।
ইংরেজ শাসন যে স্থায়ী হতে পারেনি তার মূল কারণ মানুষ প্রকৃতিগতভাবেই স্বাধীনচেতা। শুধু মানুষই নয়, সকল প্রাণীই মূলত স্বাধীনচেতা। মানুষতো দূরের কথা, কোন পাখীকেও যদি ভাল ভাল খাবার দিয়ে একটা খাঁচার মধ্যে আটকিয়ে রাখা যায়, তা তার পছন্দ হবে না। সুযোগ পেলেই সে উড়াল দিয়ে খাঁচা থেকে বেরিয়ে যাবে।
এদেশে বিদেশী ইংরেজদের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে তাই ইংরেজরা শুরু থেকেই সাম্প্রদায়িক চাতুর্যের পথে অগ্রসর হয়। বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজুদ্দৌলার দরবারে জগৎশেঠ, রাজবল্লভ, রায়দুর্লভ, উমিচাঁদ প্রমুখ যেসব হিন্দু অমাত্য ছিলেন ইংরেজ নেতা ক্লাইভ প্রথমে সেই সব হিন্দু অমাত্যদের সঙ্গে গোপন যোগাযোগ স্থাপন করে তাদের ইউরোপের ক্রুসেডীয় চক্রান্তের ধারাবাহিকতায় এদেশ থেকে মুসলিম শাসনের অবসান ঘটানোর সুবর্ণ সুযোগ কাজে লাগাতে পরামর্শ দেন। জগৎশেঠ প্রমুখ হিন্দু অমাত্যদের ইংরেজরা বোঝাতে সক্ষম হন যে তারা নবাব সিরাজের ক্ষমতালোভী সেনাপতি মীর জাফর আলী খাঁকে সিরাজদৌল্লার স্থানে নবাব করার প্রস্তাব দিলে তিনি খুশী মনে তাদের পাতা এ ফাঁদে পা দিয়ে এ লক্ষ্যে তাদের সবরকম সহযোগিতা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হবে।
এভাবেই ইংরেজরা সিরাজদৌল্লার সেনাপতিকে হাত করার মাধ্যমে মীর জাফরকে হাত করতে সক্ষম হলেও এবং মীর জাফরের নবাবীর স্বপ্ন শেষ পর্যন্ত সফল না হলেও বাংলার শেষ স্বাধীন নবাবের রাজত্বের অবসান ঘটাতে সক্ষম হয়। সিরাজের পতনের পর মীর জাফর ক্লাইভের হাত ধরে সিংহাসনে বসতে চেষ্টা করলেও অল্পদিনের মধ্যেই তিনি বুঝতে পারেন তার নবাব হবার স্বপ্ন পূরণ হওয়া সম্ভব নয়। তিনি এটাও বুঝতে পারেন নবাবীর আসল ক্ষমতা এখন ইংরেজদের হাতে এবং আংশিকভাবে ইংরেজদের অনুগত হিন্দুদের হাতে চলে গেছে।
এভাবেই এদেশে শুরু হয় ইংরেজ শাসন। নব্য শাসক ইংরেজদের দীর্ঘ দিন পর্যন্ত একটা নীতিই হয়ে দাঁড়ায় প্রশাসন, প্রতিরক্ষা, জমিদারী, আয়মাদারী, শিক্ষাসংস্কৃতি প্রভৃতি সকল গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হতে বেছে বেছে মুসলমানদের উৎখাত করে সেসব স্থানে ইংরেজ অনুগত হিন্দুদের বসানো। ফলে অল্প দিনের মধ্যে এককালের মুসলমান সমাজ স্বচ্ছলতা হারিয়ে ক্রমে অসহায় এক জনগোষ্ঠীতে পরিণত হয়। পলাশী যুদ্ধের মাত্র কয়েক বছর পর ১৭৯৩ সালে ইংরেজরা পূর্বতন ভূমি-নীতি বদলিয়ে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত নামে এক নতুন ভূমি-নীতি প্রবর্তন করে, যার বদৌলতে ইংরেজ ভক্ত এমন এক নব্য জমিদারগোষ্ঠী গড়ে ওঠে যার সিংহভাগই ছিল হিন্দু।
মুসলমানরাও কিছুতেই নব্য শাসকদের এই শাসন মেনে নিতে পারছিলেন না। তারা পলাশীর পর প্রায় একশত বছর ধরে য্দ্ধু চালিয়ে যাচ্ছিলেন স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনতে। এসব যুদ্ধের নেতৃত্বে ছিলেন ফকির নেতা মজনু শাহ, বাঁশের কেল্লা-খ্যাত তিতুমীর, ফরায়েজি আন্দোলনের নেতা, হাজী শরীয়তুল্লাহ-ও দুদু মিয়া এবং রংপুর, নোয়াখালী, ত্রিপুরা, স›দ্বীপ প্রভৃতি অঞ্চলের মুসলিম কৃষক নেতৃবৃন্দ, মহিশূর হায়দার আলী টিপু সুলতান এবং জিহাদ আন্দোলনের নেতা সৈয়দ আহমদ ব্রেলভি এবং সর্বশেষ ১৮৫৮ সালের সিপাহী বিদ্রোহের নেতৃবৃন্দ। কিন্তু প্রতিবেশী হিন্দুদের অসহযোগিতার কারণে তাদের এই সকল সংগ্রামই ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। সর্বশেষ সিপাহী বিদ্রোহেও তাদের পরাজয় বরণের ফলে বংকিম চন্দ্র প্রমুখ হিন্দু বুদ্ধিজীবিরী আনন্দে মেতে ওঠেন। তারা মুসলমানদের ধ্বংস কামনায় তাদের পত্রপত্রিকায় ইংরেজদের জয় কামনা করে লেখালেখি করতে থাকেন। এই অবস্থায় চারদিক থেকে মুসলমানরা ধ্বংস হয়ে যাওয়ার উপক্রম হলে মুসলমানদের সম্পূর্ণ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার লক্ষ্যে উত্তর ভারতের স্যার সৈয়দ আহমদ খান, বাংলার নবাব আবদুল লতিফ প্রমুখ তৎকালীন মুসলিম নেতৃবৃন্দ সাময়িকভাবে হলেও ইংরেজদের সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্ক স্থাপন করে মুসলমানদের আধুনিক শিক্ষায় অগ্রসর করে তোলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
মুসলমানদের এই সহযোগিতা যুগের অন্যতম নেতা নবাব সলিমুল্লার আমলে প্রধানত প্রশাসনিক কাজের সুবিধার্থে ইংরেজ রাজতের প্রথম থেকে চলে আসা বঙ্গ বিহার উড়িষ্যা নিয়ে গঠিত বিশাল বেঙ্গল প্রেসিডেন্সীকে বিভক্ত করে ঢাকা রাজধানীসহ ‘পূর্ববঙ্গ ও আসাম’ নামে একটি নতুন প্রদেশ গঠিত হয়। এতে দীর্ঘ অবহেলিত পূর্ববঙ্গের উন্নতির কিছু সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় নবাব সলিমুল্লাহ এই বঙ্গভঙ্গের প্রতি সমর্থন দান করেন।
বঙ্গভঙ্গের ফলে পূর্ববঙ্গ অবস্থিত কলিকাতা প্রবাসী হিন্দু জমিদারদের জমিদারীতে তাদের প্রভাব হ্রাস পেয়ে যাবার আশংকায় কলিকাতা প্রবাসী জমিদাররা বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে প্রবল আন্দোলন সৃষ্টি করে বসেন। যে হিন্দু নেতৃবৃন্দ পলাশী থেকে এ পর্যন্ত সব সময় ইংরেজদের প্রতি একটানা সমর্থন দিয়ে এসেছেন, তাদের এ ইংরেজ বিরোধী আন্দোলনে ইংরেজ শাসকরা ভয় পেয়ে যান। তারা ১৯১১ সালের মধ্যেই বঙ্গভঙ্গ রদ ঘোষণা করে তাদের পুরাতন মিত্রদের মন খুশী করার চেষ্টা করেন।
বঙ্গভঙ্গ রদ হওয়ায় সহযোগিতা যুগের অন্যতম নেতা নবাব সলিমুল্লাহ খুব ব্যথিত হন। তাঁকে খুশী করতে ইংরেজ সরকার তাঁর অন্যতম দাবী ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি ঘোষণা দেয়। এতেও হিন্দু নেতৃবৃন্দও ভীষণ ক্ষুদ্ধ হন। বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে তাদের যুক্তি ছিল বঙ্গভঙ্গ হবে বঙ্গমাতাকে দ্বিখন্ডিত করার মত অপরাধ। এবার তাদের যুক্তি হলো : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হলে বাংলার সংস্কৃতি দ্বিখন্ডিত হয়ে পড়বে। কিন্তু তাদের আরেকটি আপত্তিতে তাদের মনের আসল কথা বেরিয়ে পড়ল। তাদের এ ‘যুক্তি’ ছিল : পূর্ববঙ্গের অধিকাংশ মানুষ অশিক্ষিত মুসলমান চাষাভুষা। তাই তাদের উচ্চ শিক্ষার জন্য ঢাকায় কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজন নেই। এসব আপত্তির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিশ্রুতির ঘোষণার ১০ বছর পর ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার যাত্রা শুরু করে। তাও আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে। পূর্ববঙ্গের অন্যান্য স্কুল কলেজ আগের মতোই কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকে। সেই সীমাবদ্ধতা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তি পায় ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর।
এরকম বাধাবিপত্তির মধ্যদিয়ে দেশে ইংরেজ-বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন এগিয়ে যেতে থাকে। অবশেষে ১৯৪০ সালে নিখিল ভারত মুসলিম লীগের লাহোর অধিবেশনে উপমহাদেশের মুসলিম অধ্যুষিত পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলে একাধিক স্বতন্ত্র, স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের যে প্রস্তাব গৃহীত হয় সেটাই উপমহাদেশের নিখিল ভারত মুসলিম লীগের দাবী হিসাবে গৃহীত হয়। এই প্রস্তাবের কোথাও পাকিস্তান শব্দ ছিল না। কিন্তু পর দিন সকল হিন্দু সংবাদপত্রে এই সংবাদটি প্রকাশিত হয় “পাকিস্তান দাবী গৃহীত” এই শিরোনামে। পরবর্তীতে এই দাবীতে পরিচালিত আন্দোলন পাকিস্তান আন্দোলন নামেই পরিচালিত হয়। ১৯৪৬ সালে সাধারণ নির্বাচনে সমগ্র ভারতবর্ষের মুসলিম জনগণ এই দাবীর প্রতি তাদের অকুণ্ঠ সমর্থন ঘোষণা করে।
১৯৪৬ সালের সাধারণ নির্বাচনে জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থন ঘোষণার পর এনিয়ে আর কোন দ্বিধা থাকার কথা ছিল না। তবুও ইংরেজ শাসক ও কংগ্রেসের গড়িমসির কারণে সমস্যা দেখা দিল। অনেক টানা পরেনের পর ইংরেজরা ১৯৪৭ সালের জনগণের দাবী মোতাবেক তাদের শাসনের অবসান ঘটিয়ে দেশ ত্যাগে রাজী হলে ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট ইংরেজশাসনাধীন ভারতবর্ষে সাবেক ভারত ও পাকিস্তান নামের দুটি স্বতন্ত্র স্বাধীন রাষ্ট্রের উদ্ভব হয় এবং আমরা পাকিস্তান রাষ্ট্রের পূর্ববঙ্গ প্রদেশ হিসাবে স্বাধীনতা লাভ করি।
দেড় হাজার মাইল ব্যবধানে অবস্থিত দুটি ভৌগোলিকভাবে বিচ্ছিন্ন জনপদ নিয়ে একটি রাষ্ট্র গঠনের দৃষ্টান্ত ইতিহাসে প্রায় নেই বললেই চলে। ফলে সমস্যা দেখা দেয় প্রথম থেকেই। প্রথমেই শুরু হয় রাষ্ট্রভাষা নিয়ে সমস্যা। পরে স্বাধিকার নিয়ে। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে স্বাধিকারপন্থিদের বিপুল জিয়কে ধ্বংস করে দিতে পাকিস্তান বাহিনী উদ্যত হলে জনগণ জান কবুল করে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে ৯ মাসের মধ্যে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে ফেলতে সক্ষম হয়। এরপর জাতিসংঘের স্বীকৃতি প্রাপ্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম পূর্ণতা প্রাপ্ত হয়।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত আমাদের মুক্তিযুদ্ধে কিছুটা সহযোগিতা দান করেছিল। কিন্তুু এ সহযোগিতায় পেছনে তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে তাদের আশ্রিত রাষ্ট্র হিসাবে ব্যবহার করা। আমাদের রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্বের প্রতি কারণে অকারণে হস্তক্ষেপের যেসব দৃষ্টান্ত দেখতে পাই, তাতে প্রমাণিত হয়, তাদের এই সহযোগিতার পেছনে বাংলাদেশকে প্রকৃত স্বাধীন হিসাবে নয়, ভারতের একটি আশ্রিত দেশ হিসাবে পাওয়া। এর সামর্থনে একটি মাত্র দৃষ্টান্ত দেব এখানে। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকতে লাহোরে যে ইসলামিক সামিট অনুষ্ঠিত হয় তাতে একটি মুসলিম রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশ আমন্ত্রিত হয়। কিন্তু ভারতের ইচ্ছা ছিল বাংলাদেশ যেন কিছুতেই ঐ সামিটে না যায়। এই পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু মওলানা ভাসানীর পরামর্শ চেয়ে পাঠান। মওলানা ভাসানী বঙ্গবন্ধুকে বলেন, তুমি যদি একটি স্বাধীন দেশের নেতা হয়ে থাক তাহলে তোমার মনের ইচ্ছা মত কাজ করো। আর তা না হয়ে যদি ভারতের আশ্রিত রাষ্ট্রের নেতা হয়ে থাকো, তবে ভারত যা বলে, তাই করো। বঙ্গবন্ধু মওলানার ইঙ্গিত বুঝতে পেরে লাহোর ইসলামিক সামিটের যোগদানের সিদ্ধান্ত নেন। বঙ্গবন্ধু যেদিন লাহোর ইসলামিক সামিটের যোগ দেন, সেদিন দিল্লীতে তাঁর কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। এতে প্রমাণিত হয়, ভারত বাংলাদেশের মিত্র রাষ্ট্র হলেও ভেতরে ভেতরে বাংলাদেশকে ভারতের আশ্রিত রাষ্ট্র হিসাবে দেখাই তার প্রকৃত ইচ্ছা, যা কাম্য নয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্বাধীনতা


আরও
আরও পড়ুন