Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

ঘাটতি পূরণে ২ হাজার কোটি টাকা ৭ ব্যাংক

হাসান সোহেল | প্রকাশের সময় : ১২ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংকসহ সাতটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে মূলধন ঘাটতি পূরণে ২ হাজার কোটি টাকা ছাড় করা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলÑ সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক এবং গ্রামীণ ব্যাংক। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গত ৭ মার্চ অর্থ ছাড়ের বিষয়টি অনুমোদন দিয়েছেন বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। শিগগির অর্থবিভাগ সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে এ অর্থ দেবে। যা আগামী এপ্রিল-মে মাসের মধ্যে ব্যাংকগুলো পাবে। ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতির গুরুত্ব এবং বরাদ্দ বিবেচনা করে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ মূলধন বরাদ্দের সুপারিশ করেছে। 

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক ব্যাংক সোনালী ৪০০ কোটি, জনতা ব্যাংক ৪০০ কোটি, রূপালী ৩০০ কোটি, বেসিক ব্যাংক ৩০০ কোটি, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ৪০০ কোটি, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ১শ’ ৯৯ কোটি ৭০ লাখ ও গ্রামীণ ব্যাংক ২শ’ ১০ কোটি টাকা পাচ্ছে। চলতি অর্থবছরের বাজেটে সরকারি ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি মেটাতে মোট ২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। আর বরাদ্দকৃত সেই টাকাই দিচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
সরকারি মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মধ্যে বিডিবিএল ছাড়া বাকি সব ব্যাংকে বিশাল অঙ্কের মূলধন ঘাটতি রয়েছে। গত ২৮ জানুয়ারি রূপালী ব্যাংকের ব্যবসায়িক সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল মুহিতকে রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. আতাউর রহমান প্রধান ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন বৃদ্ধির আবেদন জানান। মূলধন পেলে রূপালী ব্যাংক আর পেছনে থাকবে না বলেও অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। ওই অনুষ্ঠানেই অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত রূপালী ব্যাংকের জন্য সুখবরের আশ্বাস দেন। তিনি জানান, দেশের ব্যাংক খাত আস্তে আস্তে প্রসার পাচ্ছে। এ খাতের অবস্থা এখন মোটামুটি ভালো। যদিও বেসিক, সোনালী ও রূপালীসহ অন্যান্য ব্যাংকগুলো ঘাটতি পূরণে যে পরিমানে মূলধন চেয়েছে সেই পরিমানে পাচ্ছে না। তারপরও এটা অনেকটা কাজে আসবে বলে উল্লেখ করেন ব্যাংকগুলোর উর্ধ্বতনরা।
সূত্র মতে, গত ২০১৩-১৪ অর্থবছর থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছর এ চার বছরে সরকার সর্বমোট ৯ হাজার ৬৪০ কোটি জোগান দিয়েছে।
ব্যাংকগুলোর সম্পদ (ঋণ) বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এর ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদ বাড়ে। ঋণের মান অনুযায়ী বিভিন্ন সময়ে বৈঠকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো সরকারি সেবায় নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা তুলে ধরে। সেখানে বলা হয়, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীতে ২৪ হাজার কোটি টাকা জনগণের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। ব্যাংকগুলো জনগণের সেবায় যুক্ত থাকলেও কোন আর্থিক সুবিধা পায়না। এ অবস্থায় সামাজিক নিরাপত্ত কর্মসূচীর মতো সরকারি অর্থ বিতরণে ব্যাংকগুলো যে সেবা দিয়ে আসছে তার জন্য সার্ভিস চার্জ চায় তারা।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, সরকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে সরকারি সেবা ছড়িয়ে দিচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে। এ মাধ্যমে কৃষি উন্নয়ন, দারিদ্র বিমোচনসহ অর্থনৈতিক উন্নয়নে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলো ভূমিকা রাখতে গিয়েও ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি বেড়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় বিষয়টি গুরুত্বেও সঙ্গে বিবেচনা করেছে।
জানতে চাইলে রূপালি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, আমরা আমাদের আর্থিক পরিস্থিতি তুলে ধরেছি। আমাদের ব্যাংক আগের থেকে ভালো অবস্থানে উঠে এসেছে। আর কিছু সহায়তা সরকার করলে ব্যাংকটি আরো ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে পারব আমরা।
উল্লেখ্য, সরকারের কাছে ২০ হাজার কোটি টাকা মূলধন চায় রাষ্ট্রায়ত্ত ৬ ব্যাংক। গত ১৪ ফেব্রæয়ারি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি পরিস্থিতি নিয়ে সচিবালয়ে বৈঠক করে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. ইউনুসুর রহমানের সভাপতিত্বে ওই বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরসহ সোনালী, রূপালি, জনতা, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ও বেসিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা (এমডি) তাদের চাহিদার কথা জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্যাংক

৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ