গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
মেলার মেয়াদ বৃদ্ধির দাবি পাঠকের
এহসান আব্দুল্লাহ : বছরের সবচেয়ে ছোট মাস ফেব্রæয়ারি; তাই দেখতে দেখতে যেন হাওয়াই মিঠাইর মতোই মিলিয়ে যায় এই মাস। এ মাসেই বসে বাঙ্গালীর প্রাণের অন্যতম উৎসব বইমেলা। আর তাই এই মাসের শেষ দিনে কিছু প্রাপ্তি, আনন্দ আর হৃদয় ভাঙ্গা সুর জাগে লেখক, প্রকাশক ও বইপ্রেমী পাঠকদের মনে। দেখতে দেখতে শেষ হয়ে গেল এই প্রাণের মেলা। আবার আসছে বছরের ফেব্রæয়ারিতে বসবে বইয়ের আসর। সেই চিরচেনা স্থানে। রাত পেরুনোর পরই আর কোন কোলাহল নেই সোহরওয়ার্দী উদ্যান আর বাংলা একাডেমিতে। আজ থেকে আবার শুনশান নিরব হয়ে যাবে এই জায়গাগুলো। কোন কাজ ছাড়া বাংলা একাডেমি চত্বরে পা রাখার সময় হয়তোবা হয়ে উঠবেনা অনেকেরই। গতকাল ছিল অমর একুশে গ্রন্থমেলার শেষ দিন। এসময় এসে মেলা প্রাঙ্গনে জমেছে শেষ মুহুর্তের কেনাকাটার ভীড়। নিজের জন্য কেনার পাশাপাশি প্রিয়জনের জন্যও বই কিনছেন অধিকাংশ পাঠক। ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন বই নির্ধারণ ও বাছাই করতে। খুজে খুজে দেখছেন তালিকাভুক্ত লেখকের বইয়ের স্টল ও বইগুলো।
অনেকে পাঠকের মতে ২৮ দিনের এই সময়টি মেলার জন্য খুবই সংক্ষিপ্ত। তারা মনে করেন যেহেতু ফেব্রুয়ারী মাস এমনিতেই বছরের ছোট মাস সেহেতু মেলা কর্তৃপক্ষ চাইলে আরো কয়েকদিন সময়বৃদ্ধি করতে পারে মেলার। তাতে পাঠক প্রকাশকদের জন্যও ভালো হয়।
মেলার শেষ দিনের অনুভূতি ব্যক্ত করতে যেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবির রায়হান বলেন, মেলার দিনগুলিতে একটা ভালোলাগা কাজ করতো। কাল থেকে সেখানে একটা শূন্যতা তৈরী হবে। বিশেষ করে বিকেল বেলাটা মেলার জন্য বরাদ্দ ছিল। এখানে আসলে নিজেকে অনেক পরিপূর্ণ মনে হতো।
ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী সুমাইয়া বিনতে আশরাফ বলেন, মেলার শেষ দিন হিসেবে আসলে একটু খারাপ লাগা কাজ করছে। আমার মনে হয় মেলা কর্তৃপক্ষ চাইলে মেলাকে আরো কয়েকদিন বৃদ্ধি করতে পারে।
মেলায় শেষ দিনে ২৫৫টি বইসহ এই পর্যন্ত নতুন বই এসেছে ৪৫৯১টি। মাসব্যাপী এ বই মেলার সমাপণী অনুষ্ঠানে সন্ধ্যায় গ্রন্থমেলার মূল মঞ্চে স্বাগত ভাষণ প্রদান করেন একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৮’-এর সদস্য-সচিব ড. জালাল আহমেদ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ ইব্রাহীম হোসেন খান। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।
স্বাগত ভাষণ প্রদান করে অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান বলেন, এবারের মেলা সার্বিক অর্থেই সর্বাঙ্গসুন্দর একটি মেলা হয়েছে। এর মাধ্যমে আমাদের সাংস্কৃতিক জাগরণ যে বেগবান হচ্ছে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
প্রতিবেদন উপস্থাপন করে ড. জালাল আহমেদ বলেন, বাংলা একাডেমি মোট ১ কোটি ৫১ লাখ ২৪ হাজার টাকার বই বিক্রি করেছে। স্টল মালিকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বলা যায় যে, এবার বইমেলায় মোট ৭০ কোটি ৫০ লাখ টাকার বই বিক্রি হয়েছে।
প্রধান অতিথির আসাদুজ্জামান নূর এমপি বলেন, বইমেলা সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে সম্প্রসারণের সিদ্ধান্তটি যে সঠিক ছিল তা এবারের মেলাতেও প্রমাণিত হয়েছে। এ বছরেরর ভুলত্রæটিগুলো হয়তো আগামী মেলায় কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মোঃ ইব্রাহীম হোসেন খান বলেন, অমর একুশে গ্রন্থমেলা পৃথিবীর অন্যতম বইমেলা। প্রযুক্তির এই যুগে পাঠক যে বই থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়নি এটা অত্যন্ত আশাব্যাঞ্জক।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, আমাদের দেশে উচ্চশিক্ষাস্তরে বাংলায় পাঠ্যপুস্তক কম প্রকাশিত হয়। এ ধরনের বই আরও প্রকাশিত হওয়া জরুরি। তিনি বলেন, এবারের গ্রন্থমেলায় শিশু ও অভিভাবকসহ প্রচুর দর্শনার্থীর আগমন ছিল বিশেষভাবে লক্ষণীয়।
এদিকে, অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৮ উপলক্ষে বাংলা একাডেমি পরিচালিত চারটি গুণীজন স্মৃতি পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। পুরস্কারপ্রাপ্ত সকল প্রকাশককে ২৫,০০০.০০ টাকার চেক, সনদ ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পর্দা নাদলো প্রাণের বই মেলা ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।