Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুবিতে বেপরোয়া ছাত্রলীগ

শিক্ষকের পর হামলার শিকার সাংবাদিক

| প্রকাশের সময় : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

মেহেদী হাসান মুরাদ, কুবি থেকে : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ প্রতিনিয়তই বেপরোয়া হয়ে উঠছে। শিক্ষক থেকে শুরু করে, সাংবাদিক লাঞ্ছনাসহ বিভিন্ন সময়ে সাধারণ শিক্ষার্থী ও দলীয় নেতাকর্মীরা তাদের হামলার শিকার হচ্ছেন। এ বিষয়ে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হলেও কোন কিছুতেই যেন তাদের নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। গতকাল ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শেষে তাদের ধারাবাহিক হামলার শিকার হয়েছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্য ও দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সাব্রী সাবেরিন গালিব।
জানা যায়, শনিবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শেষে শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক স্বজন বরণ বিশ্বাসের কক্ষ ভাংচুর করতে কাজী নজরুল ইসলাম হলে যায় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির সমর্থকরা। এসময় ঐ হলে আইন বিভাগের ১০ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সাব্রী সাবেরিন গালিব পেশাগত কাজে তথ্য সংগ্রহে গেলে তাকে শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বায়েজিদ ইসলাম গল্প, সহ-সভাপতি দ্বীন ইসলাম লিখন, উপ সমাজ সেবা বিষয়ক সম্পাদক (বহিস্কৃত) মুনতাসির আহমেদ হৃদয়সহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী বেধড়ক মারধর করে এবং মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে যায়। পরে ঐ সাংবাদিককে ঘটনাস্থল থেকে সাংবাদিক সমিতির নেতৃবৃন্দ উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের পরামর্শে মেডিকেলে ভর্তি করা হয়।
এর আগেও গত বছরের ২৬ জানুয়ারি বায়েজিদ ইসলাম গল্পকে লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক নাহিদুল ইসলামকে স্বস্ত্রীক লাঞ্ছিত করার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিস্কার করে বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্তৃপক্ষ। গত বছরের ১৩ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাংবাদিককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে দ্বীন ইসলাম লিখনকে কারণ দর্শানোর নটিশ দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এরপরেও গত ২২ নভেম্বর ১৬১সদস্য বিশিষ্ট শাখা ছাত্রলীগের কমিটিতে দ্বীন ইসলাম লিখনকে সহ-সভাপতি করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শিক্ষক, সাংবাদিক লাঞ্ছনাসহ বিভিন্ন সময়ে সাধারণ শিক্ষার্থী ও দলীয় নেতাকর্মীদের মারধরের অভিযোগ রয়েছে। অভিযুক্তরা সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজের একনিষ্ট নেতাকর্মী।
এ বিষয়ে কথা বলতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি ও সধারণ সম্পাদকের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, ‘যুগ্ম সম্পাদক স্বজন বরণ বিশ্বাস হলের টাকা নিয়ে চলে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা তার হলে গেলে এ সময় একটা অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে।’
সাংবাদিককে মারধরের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ বলেন, ‘শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির কারনে রবিবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হবে। প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। সাংবাদিক সমিতি এ ঘটনার দ্রæত বিচার দাবি করছে। বিচারের জন্য সমিতি কঠোর অবস্থানে যেতেও প্রস্তুত রয়েছে।’
ঘটনার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড.কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন প্রক্টরিয়াল বডিসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে এঘটনা কোনভাবেই কাম্য নয়। সাংবাদিক সমিতি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অনেক গঠনমূলক কাজ করে থাকে। অভিযোগের পরে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষ দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ছাত্রলীগ

২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ