পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলা একাডেমি এখনো সম্মাননা দেয়নি : গফরগাঁওয়ে জব্বার স্মৃতি জাদুঘরে পত্রিকা নেই
মো. আতিকুল্লাহ, গফরগাঁও থেকে : যে বীর বাঙালিদের রক্তের বিনিময়ে রাষ্ট্রভাষা বাংলার অধিকার আদায় হয়েছে, একুশে ফেব্রæয়ারি পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে, তাদের অন্যতম একজন ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের আবদুল জব্বার। এই ভাষাশহীদের সন্তানরা ক্ষোভের সঙ্গে জানালেন, ফেব্রæয়ারি মাসে জাতীয়ভাবে ঢাকায় আয়োজিত কোনো অনুষ্ঠানে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয় না।
আবদুল জব্বারের ছেলে মুক্তিযোদ্ধা মো. নুরুল ইসলাম বাদল বলেন, ‘বাংলা ভাষার অধিকার রক্ষার আন্দোলনে জীবন দিয়েছেন আমার বাবা। অথচ ভাষার মাস ফেব্রæয়ারিতে জাতীয়ভাবে ঢাকায় আয়োজিত কোনো অনুষ্ঠানে আমাদের দাওয়াত দেওয়া হয় না। ভাষাশহীদদের কারণেই যে বাংলা একাডেমির সৃষ্টি হয়েছে, সেই একাডেমি এখন পর্যন্ত আমাদের কোনো সম্মাননা দেয়নি। এমনকি ফেব্রæয়ারি মাসজুড়ে চলা একাডেমির অনুষ্ঠানে দাওয়াত পর্যন্ত আমরা পাই না।’
তিনি আরো বলেন, ‘রাষ্ট্রের কাছে আমরা তো তেমন কিছুই চাই না; প্রাপ্য সম্মানটুকু কি আমরা পেতে পারি না? জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠানে ডাক পেলে, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হলে, ভাষাশহীদের সন্তান হিসেবে আমাদের মনে শান্তি লাগত।’
ভাষাশহীদ আবদুল জব্বারের গ্রামের বাড়ি গফরগাঁওয়ের ৬ নং রাওনা ইউনিয়নের জব্বার নগরে (সাবেক পাঁচুয়া গ্রামে)। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে তাঁর বাড়িটি। ২০০৭-২০০৮ সালে তত্ত¡াবধায়ক সরকারের আমলে গ্রামের নাম বদলে জব্বার নগর করা হয়। সেই গ্রামে সরকারিভাবে প্রায় ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে তৈরি করা হয়েছে ভাষা শহীদ আবদুল জব্বার গ্রন্থাগার কাম স্মৃতিজাদুঘর। সরকারিভাবে একজন কেয়ারটেকার নিয়োগের পর তিন-চার বছর আগে একজন লাইব্রেরিয়ানও নিয়োগ দেওয়া হয়।
পাঠাগারটি অত্যন্ত মনোরম পরিবেশের হলেও প্রচারের অভাবে প্রতিদিন পাঠক সংখ্যা থাকে খুবই কম। পাঠাগারটি চালুর পর নিয়মিত বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা রাখা হতো। কিন্তু প্রায় সাড়ে চার বছর ধরে পাঠাগারে কোনো দৈনিক পত্রিকা আসছে না। ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ পত্রিকার বিল পরিশোধ না করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে পত্রিকাপাঠ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পাঠকরা।
স্থানীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহŸায়ক ফাহ্মী গোলন্দাজ বাবেল বলেন, ‘শহীদ ভাষাসৈনিক আবদুল জব্বার আমাদের গফরগাঁওবাসীর গর্বের ধন। জš§স্থান গফরগাঁওয়ে তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সরকারিভাবে বড় কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা ইনস্টিটিউট গড়ে তোলা যায় কিনা, সে বিষয়ে আমি সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করব।’
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) রেজাউল করিম জানান, ‘ময়মনসিংহ জেলার মধ্যে এত উন্নতমানের পাঠাগার আমি দেখিনি। তবে এখানে বিভিন্ন ধরনের আরো উন্নত মানের বই থাকায় প্রয়োজন।’
গফরগাঁও বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এমদাদুল হক (ইন্তু) বলেন, ‘বহুদিন পরে হলেও জব্বারের বাড়িতে সরকার রাষ্ট্রীয়ভাবে পাঠাগার করেছে, এর জন্য আমরা গর্বিত। তবে তাঁর জš§স্থান গফরগাঁও উপজেলাকে অবিলম্বে জেলা হিসেবে বাস্তবায়ন করা দরকার।’
আবদুল জব্বারের নামে একটি বেসরকারি রেজি. প্রাথমিক বিদ্যালয় ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে সরকারিকরণ করা হয়েছে।
ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনের সংসদ সদস্য ফাহ্মী গোলন্দাজ বাবেলের একান্ত সচিব মাসুদ হোসেন সোহেল বলেন, ভাষাসৈনিক শহীদ আবদুল জব্বারের নিজ ইউনিয়নে সরকারিভাবে বিভিন্ন উন্নয়নমুখী কাজ করা দরকার। কাজী নজরুল ইসলামের নামে ময়মনসিংহের ত্রিশালে সরকারীভাবে স্থাপন করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়সহ নানা প্রতিষ্ঠান। অথচ জব্বারের জš§স্থান গফরগাঁওয়ে সরকারিভাবে পাঠাগার ছাড়া তেমন কিছু করা হয়নি।
গফরগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. শামীম রহমান জানান, মহান একুশে ফেব্রæয়ারির মূল অনুষ্ঠান হবে শহীদ আবদুল জব্বারের গ্রামের বাড়িতে। এখানে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছেÑসকালে প্রভাত ফেরী, শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা ও সাংস্কতিক অনুষ্ঠান। আবদুল জব্বারের গ্রামের বাড়িতে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ফাহ্মী গোলন্দাজ বাবেল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।