পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে আশ্বাসের চেয়ে কম ঋণ দিচ্ছে চীন সরকার। এতে করে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সরকারের ব্যয় আগের চেয়ে অনেক বাড়াতে হবে। প্রকল্পের সংশোধিত উন্নয়ন প্রস্তাবনা (আরডিপিপি) ইতোমধ্যে চূড়ান্ত করেছে রেলওয়ে। ওই প্রস্তাবনায় ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৪০ হাজার ৮০ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। আগে এই ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৪ হাজার ৯৮৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। এতে করে নির্মাণ শুরুর আগেই এ প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে ৫ হাজার ৯১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা বা ১৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ। যদিও সম্ভাব্যতা যাচাইকালে প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা। এ হিসাবে পদ্মা সেতুতে হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল রেলপথ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে চীনের ঋণ দেওয়ার কথা ছিল ২৪ হাজার ৭৪৯ কোটি ৫ লাখ টাকা। সেক্ষেত্রে সরকারের তহবিল থেকে সরবরাহ করার কথা ছিল ১০ হাজার ২৩৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এরই মধ্যে প্রকল্প ব্যয় বাড়লেও সংশোধিত প্রস্তাবে ঋণ ৩ হাজার ৭১২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা কমিয়ে দিয়েছে চীন। এতে ২১ হাজার ৩৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ঋণের প্রস্তাব দিয়েছে চীনের এক্সিম ব্যাংক। তাতে সরকারের তহবিল থেকে সরবরাহ করতে হবে ১৯ হাজার ৪৩ লাখ ৭৫ লাখ টাকা।
সূত্র জানায়, পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ স্থাপনে ঢাকা থেকে মাওয়া হয়ে যশোর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ করবে সরকার। ২০১৬ সালের মে মাসে প্রকল্পটি অনুমোদন করা হলেও এখনও নির্মাণকাজ শুরু হয়নি। আবার জিটুজি ভিত্তিতে এতে চীনের অর্থায়নের কথা থাকলেও এখনও ঋণচুক্তি সই হয়নি।
প্রকল্পটির ব্যয় বিশ্লেষণে দেখা গেছে, প্রকল্পটির জন্য জমি অধিগ্রহণ ব্যয় বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। প্রাথমিকভাবে এ খাতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২ হাজার ৮৫৩ কোটি ২৭ লাখ টাকা। প্রস্তাবিত আরডিপিপিতে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ১৬৯ কোটি ৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ খাতটির ব্যয় বেড়েছে ৩ হাজার ৩১৫ কোটি ৮১ লাখ টাকা। আর ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে ব্যয় বেড়েছে ১৬২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এ খাতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫৬৬ কোটি ২২ লাখ টাকা, এখন যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২৯ কোটি ২ লাখ টাকা। এছাড়া পরামর্শক খাতের ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা, যা প্রাথমিকভাবে ধরা হয়েছিল ৯৪০ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ এ খাতে ব্যয় বেড়েছে ৯০ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
এর বাইরে নির্মাণ খাতে ব্যয় বেড়েছে ৯৫৯ কোটি। এর মধ্যে দর সমন্বয় খাতে ২৫১ কোটি ৫৪ লাখ ও অনিশ্চিত খাতে ১৬৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। এ তিন খাতে ব্যয় ধরা হয়েছিল যথাক্রমে ২৭ হাজার ৬৫২ কোটি ৫৭ লাখ, ২৯২ কোটি ৫৭ লাখ ও ১৯৫ কোটি টাকা। বর্তমানে নির্মাণ ব্যয় দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৬১১ কোটি ৬২ লাখ টাকা। এর মধ্যে দর সমন্বয় ৫৪৪ কোটি ও অনিশ্চিত খাতে ৩৬২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। এছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তাকারী বিভিন্ন সরঞ্জাম সংগ্রহে ব্যয় বেড়েছে ১৩৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।
সূত্র জানায়, ঢাকা-মাওয়া-যশোর রেলপথ হবে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল। এজন্য ১৬৯ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় পড়ছে ২৩২ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। এ ব্যয় দেশের চলমান যে কোনো রেলপথ নির্মাণ খরচের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি। এমনকি চীন বা ভারতের হাইস্পিড ট্রেনের জন্য রেলপথ নির্মাণের চেয়েও এ ব্যয় তুলনামূলক অনেক বেশি। রেলওয়ের চলমান বা পাইপ লাইনে থাকা প্রকল্পের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যয় ধরা হয়েছে দোহাজারি-কক্সবাজার-ঘুনধুম রেলপথ নির্মাণে। ১২৯ কিলোমিটার এ রেলপথ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। এতে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় পড়ছে ১৩৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আর বর্তমানে চলমান আখাউড়া-লাকসাম ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন প্রকল্পের আওতায় ১৪৪ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৫০৪ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ কিলোমিটাপ্রতি ব্যয় হবে ৪৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা। জানা গেছে, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে প্রচলিত রেলপথ নির্মাণে ব্যয় হয়েছে কিলোমিটারপ্রতি ১২-১৭ কোটি টাকা। ২০১৫ সালে ফেব্রæয়ারিতে ভারতের রেলপথ মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত এক শ্বেতপত্রে এ তথ্য উঠে এসেছে। এছাড়া দেশটির মুম্বাই শহর থেকে আহমেদাবাদ পর্যন্ত ৫৩৪ কিলোমিটার দীর্ঘ হাইস্পিড রেলপথ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৩ হাজার ১৮০ কোটি টাকা। এতে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় হবে ১১৮ কোটি টাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।