পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
গড় আয়ূ বাড়লেও সে হিসেবে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়েনি। ফলে লক্ষ লক্ষ চাকরিপ্রত্যাশী হতাশায় ভুগছেন। বর্তমানে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ১৮-৩০ বছর। গড় আয়ূ যখন ৪৫ ছিল তখন চাকরিতে প্রবেশের বয়স ছিল ২৭ বছর। গড় আয়ূ যখন ৫০ পার হলো তখন প্রবেশের বয়স হলো ৩০। বর্তমানে গড় আয়ূ ৭১.৬ বছর হলেও চাকরিতে প্রবেশের বয়স কেন ৩০ এ থমকে থাকবে?
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সেশনজট, রাজনৈতিক ক্ষমতার দ্ব›দ্ব প্রভৃতি কারণে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করতে প্রায় ২৫ - ২৭ বছর লেগে যায়। অথচ সরকারি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরির প্রজ্ঞাপনে আবেদন করার বয়স ২১ বছর রাখা হয়েছে যা হাস্যকর। সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে ভর্তুকি দিয়ে কলেজ ও বিশ^বিদ্যালয়গুলোতে লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীর দেশ গড়ার উপযোগী সুসন্তান হিসেবে তৈরি করছে। কিন্তু সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ এ বেঁধে রাখার ফলে সরকার এসব শিক্ষার্থীর মেধা কি আদৌ কাজে লাগাতে পারছে? গড় আয়ূর কারণ দেখিয়ে ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে চাকরিতে অবসরের বয়সসীমা ৫৭ থেকে বাড়িয়ে ৫৯ করা হয়েছে। আরো বাড়ানোর পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। ‘যুবনীতি-২০১৭’তে যুবাদের বয়স ১৮-৩৫ রাখা হয়েছে। তাহলে কেন চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩০ রাখা হবে? দেশে বেকারের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। সরকারি হিসেবে দেশে এখন ২৬ লাখ বেকার। চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানো হলে বেকারত্ব কমে যাওয়ার পাশাপাশি দেশের উন্নয়ন তরান্বিত হবে।
পৃথিবীর প্রায় সকল উন্নত রাষ্ট্রসমূহে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩০ এর উপরে। উদাহরণস্বরূপ, পার্শ^বর্তী দেশ ভারতে ৩৫ বছর (রাজ্যভেদে এর বেশিও আছে), যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় ৫৯ বছর, ফ্রান্সে ও দক্ষিণ আফ্রিকায় ৪০ বছর ইত্যাদি। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন, ২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘ প্রণীত ১৭টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও সর্বোপরি উন্নত বাংলাদেশ গড়তে সকল শিক্ষিত তরুণ জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগানো অবশ্যকর্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সকল তরুণ জনগোষ্ঠীর মেধা কাজে লাগাতে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ থেকে বাড়িয়ে কমপক্ষে ৩৫ করা হোক। এটা যুক্তিসংগত, যুগোপযোগী ও সময়ের দাবি। এতে করে শিক্ষিত তরুণ-তরুণীরা হয়তো নিজেকে তৈরির এবং মেধা কাজে লাগানোর আরো বেশি সুযোগ পাবে।
সাধন সরকার
ছাত্র, ১ম ব্যাচ, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।