Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লাল মাংসের বিপদ

| প্রকাশের সময় : ১৯ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

লাল মাংস সারা পৃথিবীতেই খুব জনপ্রিয়। আমাদের দেশেও লাল মাংস পছন্দ করেনা এমন মানুষ খুব কমই আছে। কোরবানির পর চলে লাল মাংস খাওয়ার ধুম। কিন্তু ঈদ-পরবর্তী সময়ে এবং অন্য সময়ে ভালো থাকতে হলে চাই অবশ্যই একটু বাড়তি সচেতনতা। লাল মাংস বা রেড মিট অর্থাৎ গরু বা ছাগলের মাংসে আছে প্রচুর স্যাচুরেটেড ফ্যাট বা সম্পৃক্ত চর্বি। সম্পৃক্ত চর্বি স্বাস্থ্যের জন্য বেশ ক্ষতিকর । সম্পৃক্ত চর্বি বেশী খেলে ওজন বেড়ে যায় । স্যাচুরেটেড ফ্যাট রক্তনালিতে চর্বি জমায় এবং হৃদযন্ত্রের স্বাভাবিক রক্তপ্রবাহকে ব্যহত করে। এটি রক্তচাপ বাড়ায় এবং ডায়াবেটিসকে অনেক জটিল করে তোলে। ফলে বেড়ে যায় স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি।
এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার, যেমন কোলন ও স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি হিসেবেও চিহ্নিত হয়েছে এই লাল মাংস। প্রতিবছর স্তন এবং কোলন ক্যান্সারে অনেক মানুষ মৃত্যুবরণ করে এবং অনেকেই আক্রান্ত হয়। লাল মাংস তাই বেশি কখনই খাওয়া যাবেনা। বিশেষ করে যাঁরা স্থূলতা, ডায়াবেটিস, রক্তচাপ বা হূদেরাগে ভুগছেন, তাদের বিশেষভাবে সাবধান হতে হবে। মনে রাখতে হবে কোনো অবস্থাতেই দৈনিক খাদ্যতালিকায় চর্বিজাতীয় খাদ্য যেন ৩০ শতাংশের বেশি না হয়। আর এর মধ্যে স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকবে মাত্র ৭ শতাংশ। যে চর্বি ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় শক্ত বা জমাট থাকে, সেটিই স্যাচুরেটেড ফ্যাট বা সম্পৃক্ত চর্বি। লাল মাংস ছাড়াও ঘি, মাখন, মার্জারিন, ক্রিম প্রভৃতিতে আছে এই সম্পৃক্ত চর্বি।
অনেকেই তেল চর্বি খেতে বেশি পছন্দ করেন। এই ধরনের অভ্যাস খুব ক্ষতিকর। রান্নার সময় খেয়াল করতে হবে কয়েকটি জিনিস। মাংসের গায়ে যে সাদা চর্বি লেগে থাকে, তার পুরোটাই ফেলে দিতে হবে। রান্নায় ঘি বা ডালডার ব্যবহার মাংসকে আরও বেশি ক্ষতিকর করে তুলবে। রান্নায় তেল যথাসম্ভব কম ব্যবহার করতে হবে। রান্নার পদ্ধতিগুলো পরিবর্তন ক্ষতি কিছুটা এড়ানো যায়।
ইউরিক এসিড যাঁদের বেশি এবং যেসব রোগীর কিডনিতে সমস্যা আছে, তাঁদের জন্যও লাল মাংস ক্ষতিকর। তাঁরা অবশ্যই চিকিৎসক কর্তৃক বরাদ্দকৃত আমিষের চেয়ে বেশি পরিমাণে আমিষ খাবেন না। তাতে বিপদ হতে পারে।বাতের ব্যাথা বেড়ে যেতে পারে এবং কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। লাল মাংস অনেক সময় কোষ্ঠকাঠিন্য করে। কোষ্ঠ পরিষ্কারের জন্য প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে। খেতে হবে বেশি বেশি ফলমূল এবং শাকসবজি ।
লাল মাংস খেলেই যে অকাল মৃত্যু ঘটবে এমন কিন্তু নয়। তবে বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে এতে কোন সন্দেহ নেই। মাঝে মাঝে লাল মাংস খাওয়া যেতে পারে। তবে বেশি পরিমাণ বা নিয়মিত কখনই খাওয়া যাবেনা। যারা সম্পূর্ণ সুস্থ মানুষ সপ্তাহে একদিন তারা পরিমাণ মত লাল মাংস খেতে পারেন। এতে বড় ধরণের বিপদের কিছু নেই।
ডা. ফজলুল কবীর পাভেল



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন