পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম ব্যুরো : শেখ হাসিনার উন্নয়ন আর অর্জনের বিরুদ্ধে চক্রান্ত চলছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাতাসে চক্রান্ত-ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি। সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে আগামী নির্বাচনে নৌকাকে বিজয়ী করতে হবে, আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় আনতে হবে। তিনি গতকাল (রোববার) বিকেলে চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে এমন কোন শক্তি নেই আওয়ামী লীগকে পরাজিত করে।
চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে শোকসভা জনসমুদ্রে রূপ নেয়। বন্দরনগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মী ছাড়াও অসংখ্য মানুষ শোকসভায় যোগ দেন। নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা ব্যানার নিয়ে শোকসভায় সমবেত হন। লালদীঘির আশপাশে মহিউদ্দিন চৌধুরী ছবি সম্বলিত অগণিত ব্যানার, ফেস্টুন দেখা যায়। সুবিশাল মঞ্চে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতা ছাড়াও মহিউদ্দিন চৌধুরীর পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
তবে বিবদমান মহানগর ছাত্রলীগের বিভিন্ন গ্রæপের শোডাউন আর পাল্টাপাল্টি শ্লোগানে শোকসভার ভাবগম্ভীর পরিবেশ ক্ষণে ক্ষণে বিঘিœত হয়। বিভিন্ন নেতা ও কলেজের নামে শ্লোগান থামাতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা এমনকি অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ওবায়দুল কাদেরকেও হস্তক্ষেপ করতে হয়। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক চট্টগ্রামের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহŸান জানান। তিনি বলেন, মহিউদ্দিন চৌধুরী ছিলেন ঐক্যের প্রতীক। তার আদর্শ মেনে আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ হলে এমন কোন শক্তি নেই যারা আওয়ামী লীগকে পরাজিত করতে পারে।
আওয়ামী লীগ নেতাদের দুর্নীতির প্রতি ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, যেসব নেতা পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে গরীব মানুষের কাছ থেকে টাকা নেন এমন নেতা আওয়ামী লীগের দরকার নেই। সামান্য একজন নৈশপ্রহরী এবং সুইপারের নিয়োগের জন্য যেসব নেতাদের টাকা দিতে হয় সেসব নেতা শেখ হাসিনার দরকার নেই। এরা সুবিধাবাদী উল্লেখ করে তিনি বলেন, ক্ষমতার দাপট যখন থাকবে না তখন পাঁচ হাজার ভোল্টের বাতি দিয়েও তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না। দলের ভেতরে অতিথি পাখিদের ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহŸান জানান তিনি। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের পুঁজি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সততা। বিশ্বের ১৭৩ জন রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে সততার দিক থেকে শেখ হাসিনা পঞ্চম। তার এ সততাকে পুঁজি করে আগামী নির্বাচনে অবশ্যই আমরা বিজয়ী হব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে বিএনপির ভোট কমে গেছে দাবি করে তিনি বলেন, আর এ কারণে বিএনপি অন্তর্জালায় ভুগছে। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে গোটা জাতি খুশি হলেও তারা খুশি হতে পারেনি।
প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যতই উন্নয়ন হোক না কেন আমাদের আচরণ যদি ভাল না হয় এর সুফল মিলবে না। যাদের জনতা মানে না তারা কখনো জননেতা হতে পারে না। আগামী নির্বাচনে এসব নেতাদের মনোনয়ন দেয়া হবে না। ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশ পরিচালনা করতে গিয়ে আমাদের ভুল হতে পারে। চাঁদেরও কলঙ্ক থাকে, তবে তাতে চাঁদের আলো মলিন হয় না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে বলেছেন, ভুল হলে আমরা তা সংশোধন করব। ভুল সংশোধনের মত সৎ সাহস আওয়ামী লীগেরই আছে। আমাদের একজন এমপি জেলে আছেন, মন্ত্রী পুত্রকেও জেলে পাঠানো হয়েছে। আমাদের অনেক মন্ত্রী আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন। আওয়ামী লীগের আমলে অন্যায় করে কেউ পার পাচ্ছেন না। আগামী নির্বাচনে দলকে বিজয়ী করতে ঐক্যবদ্ধভাবে নেতাকর্মীদের মাঠে নামার আহŸান জানান তিনি। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে নারী ও নতুন প্রজন্মের ভোটাররাই হবে আওয়ামী লীগের বিজয়ের মূলশক্তি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, মহিউদ্দিন চৌধুরী ছিলেন গণমানুষের নেতা। তিনি চট্টগ্রামের মাটি ও মানুষের জন্য আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। দলের জন্য তিনি ছিলেন আপোসহীন। তার এ আদর্শকে ধারণ করে এগিয়ে গেলে আগামী নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত। মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, মহিউদ্দিন চৌধুরী আজীবন বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য সংগ্রাম করে গেছেন। তার সংগ্রামী চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে আগামী দিনে শেখ হাসিনাকে আবারও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসাতে হবে। বিবেদ নয় ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে যেতে হবে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, যারা মানুষ হত্যা করে তাদের সাথে কোন সংলাপ নয়। সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিগত নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিএনপি যে ভুল করেছে আশা করি তারা ভবিষ্যতে আর সে ভুল করবে না। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম বলেন, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে হলে মহিউদ্দিন চৌধুরীর আদর্শ বুকে ধারণ করতে হবে। বিপ্লবী এ নেতা আজীবন গণমানুষের সেবা করেছেন। আওয়ামী লীগ নেতাদেরও গণমানুষের কাছে যেতে হবে।
মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শোকসভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মহিউদ্দিন চৌধুরী পুত্র ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক রাষ্ট্রদূত নুরুল আলম চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা সভাপতি মোসলেম উদ্দিন আহমদ, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া, ডা. আফছারুল আমীন এমপি, এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি, দিদারুল আলম এমপি, ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি ও খোরশেদ আলম সুজন। শোকসভা সঞ্চালনা করেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী।
যখন ক্ষমতা থাকবে না, তখন তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না
সুইপার নিয়োগে টাকা খাওয়া নেতা চাই না। পুলিশ কনস্টেবল, নৈশপ্রহরী ও সুইপারের চাকরির জন্য যে নেতা টাকা নেন তার দরকার নেই। এমন নেতা শেখ হাসিনার কোন প্রয়োজন নেই। গতকাল (রোববার) চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর শোকসভায় দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে এমন কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, যে নেতাকে জনতা পাবে না সেই নেতার দরকার আওয়ামী লীগে নেই। তিনি দুর্নীতিবাজ নেতাদের উদ্দেশে বলেন, অপকর্ম থেকে বিরত হোন। অনেক হয়েছে। এনাফ ইজ এনাফ। অনেককে খারাপ খবরের শিরোনাম হতে দেখি। এটা যেন আর না হয়।
দলের ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করার আহŸান জানিয়ে তিনি বলেন, এ মঞ্চে ত্যাগী নেতাদের অনেকে নেই। তারা কোণঠাসা। নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কমিটি করতে গিয়ে পকেট কমিটি করবেন না। নিজের পকেট ভারী করবেন না। এখনও সুযোগ আছে, ত্যাগীদের কমিটিতে স্থান দিন। দলে সুবিধাবাদীদের জয় জয়কার উল্লেখ করে তিনি বলেন, এদের অনেকে এখনও আছে, পরে থাকবে না। অন্ধকার আর দুর্দিন যখন আসবে তখন সাইবেরিয়ার অতিথি পাখিরা থাকবে না। যখন ক্ষমতা থাকবে না, ক্ষমতার দাপট থাকবে না, তখন তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।