পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : ভারতের প্রধান বিচারপতি বিরুদ্ধে অস্বচ্ছ কর্মকান্ডের অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ চার বিচারপতির সংবাদ সম্মেলনের ফল সুদূরপ্রসারী বলে আইনজীবীদের অভিমত। এই ঘটনাকে ভারতের বিচার বিভাগের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সঙ্কট হিসেবে দেখা হচ্ছে। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের বিরুদ্ধে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে আসেন বিচারপতি জাস্টি চেলামেশ্বর, বিচারপতি কুরিয়েন জোসেফ, বিচারপতি রঞ্জন গগৈ ও বিচারপতি মদন বি লোকুর। তারা প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলোর বিচারের ভার জ্যেষ্ঠ বিচারকদের এড়িয়ে কনিষ্ঠ বিচারকদের বেঞ্চে দেওয়ার অভিযোগ তোলেন বলে টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়। গণমাধ্যম এড়িয়ে চলে আসা বিচারপতিদের সংবাদ সম্মেলনটি হয় নয়া দিল্লিতে বিচারপতি চেলামেশ্বরের বাসভবনে, যার ২০০ মিটারের মধ্যে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের বাড়ি। ‘বিদ্রোহী’ চার বিচারপতি বলেন, ভুল শুধরানোর জন্য প্রধান বিচারপতিকে দুই মাস আগে চিঠি দিয়েছিলেন তারা, কিন্তু কোনো ফল না পেয়ে তারা ‘বাধ্য হয়ে’ সংবাদ সম্মেলনে এসেছেন। “আমরা মনে করছি, যদি ত্বরিত পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তবে বিচার বিভার বিভাগ তার শক্তিশালী ও স্বাধীন মর্যাদা হারাবে, যা দেশের গণতন্ত্রের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ,” বলেন বিচারপতি চেলামেশ্বর। এই বিচারক বলেন, তারা সরাসরি প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করেও বিষয়টি তুলেছিলেন, কিন্তু প্রধান বিচারপতি তাতে কান দেননি। বিচারপতিদের এই সংবাদ সম্মেলনে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংও ছিলেন। বিচার বিভাগের ভেতরে আসলে কী হচ্ছে, তা জানতে চান তিনি। খবরে বলা হয়, ভারতের সুপ্রিম কোর্টের চার জন বিচারক প্রকাশ্যে সংবাদ সম্মেলন করে প্রধান বিচারপতির কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করে বলেছেন, যেভাবে তিনি আদালত চালাচ্ছেন তা ভারতের গণতন্ত্রকেই হুমকির মুখে ফেলে দেবে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারকরা এভাবে প্রকাশ্যে সংবাদ সম্মেলন করে প্রধান বিচারপতির কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করা ভারতীয় বিচার বিভাগের ইতিহাসে এক নজিরবিহীন ঘটনা। এ ব্যাপারে ভারতের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর কাছ থেকে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি বলে সংবাদ মাধ্যম জানায়। সংবাদ সম্মেলনে এই বিচারকরা বলেছেন, ভারতের প্রধান বিচারপতি এখন তার ব্যক্তিগত মর্জিমাফিক বিভিন্ন বেঞ্চে মামলা পাঠাচ্ছেন। এটি আদালতের নিয়মকানুনের লংঘন। তারা আরও বলেছেন, আদালতের নিয়ম-কানুন যদি মানা না হয় তাহলে ভারতে গণতন্ত্র টিকবে না। যেভাবে সুপ্রিম কোর্টের মতো একটি প্রতিষ্ঠান চলা উচিত, তা হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন ওই চারজন বিচারপতি। তারা বলেন, আজ থেকে ২০ বছর পরে যেন কেউ না বলতে পারে যে আমরা আমাদের আত্মা বিক্রি করে দিয়েছিলাম। বিচারপতি জে চেলামেশ্বর, বিচারপতি রঞ্জন গগই, বিচারপতি মদন বি লকুর এবং বিচারপতি কুরিয়ান যোশেফ সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলি যেভাবে বিভিন্ন বিচারপতিদের বেঞ্চে শুনানীর জন্য পাঠানো হচ্ছে, তা প্রতিষ্ঠিত ব্যবস্থা বা কনভেনশনের বিরোধী। হাইকোর্ট বা সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতিরা কখনই সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খোলেন না নিজেদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার জন্য। কিন্তু এই চারজন বিচারপতির মতে, গত কয়েকমাস ধরে যা হচ্ছে, তাতে একটা অভূতপূর্ব পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে। যেভাবে সুপ্রীম কোর্ট চলা উচিত, তা হচ্ছে না। আমরা প্রধান বিচারপতির কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলাম, এমন কি আজ সকালেও তাঁর সঙ্গে দেখা করে তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। সেজন্যই জাতির কাছে গোটা বিষয়টি তুলে ধরতে বাধ্য হচ্ছি আমরা। প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে কি তাহলে এবার ‘ইম্পিচমেন্টের’ প্রক্রিয়া শুরু হবে - এই প্রশ্নের জবাবে ভারতের দ্বিতীয় সব থেকে সিনিয়র বিচারক চেলামেশ্বর বলেন, সেটা জাতিকেই ঠিক করতে হবে। আমরা কিছু বলছি না সে ব্যাপারে। ওই সংবাদ সম্মেলনেই একটি সাত পাতার চিঠিও বিতরণ করেন বিচারপতিরা, যেটা মাস দুয়েক আগে এই চার বিচারপতি প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর কাছে পাঠিয়েছিলেন। সেখানে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেছেন ওই চার বিচারপতি, যে কীভাবে অতি গুরুত্বপূর্ণ কতগুলি মামলা - যেগুলি দেশের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, সেগুলিকে কোনও সঙ্গত কারণ ছাড়াই নির্দিষ্ট কয়েকটি বেঞ্চের কাছে পাঠানো হচ্ছে। ওই চার বিচারপতি লিখেছেন, এটা শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠিত ব্যবস্থা, যে প্রধান বিচারপতি কোনও মামলা কোন বিচারপতির কাছে বা কোন বেঞ্চে পাঠাবেন। এই ব্যবস্থা সুষ্ঠু বিচার ব্যবস্থার জন্য গড়ে উঠেছে। কিন্তু এর মাধ্যমে এটা প্রতিষ্ঠিত হয় না যে প্রধান বিচারপতি অন্য বিচারকদের থেকে উচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত। প্রধান বিচারপতি হলেন ফার্স্ট এমং ইকুয়ালস। ওই চিঠিতে যদিও লেখা হয়েছে যে কোন কোন মামলার ক্ষেত্রে এরকম হয়েছে, সেটা তারা উল্লেখ করতে চান না, যাতে সুপ্রীম কোর্টের মতো একটা প্রতিষ্ঠান আরও বিড়ম্বনায় পড়ে। বিবিসি, টাইমস অব ইন্ডিয়া।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।