পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ডি ডব্লিউ : চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরে (সিপিইসি) আফগানিস্তানকে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা চলছে। এর ফলে দেশটির অর্থনীতি জোরদার হবে। চীন ৬০ বিলিয়ন ডলারের এ প্রকল্পে আফগানিস্তানকে আনতে আগ্রহী। কিন্তু আঞ্চলিক ঐকমত্য ও যুক্তরাষ্ট্রের সবুজ সংকেত না পেলে বেইজিংয়ের জন্য আফগানিস্তানকে সিপিইসিতে আনা কঠিন হবে।
গতমাসে বেইজিংয়ে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের সাথে আলোচনার চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়াং য়ি সাংবাদিকদের বলেছিলেন যে, চীন ও পাকিস্তান পারস্পরিক কল্যাণ নীতির আওতায় সিপিইসিকে আফগানিস্তান পর্যন্ত প্রসারিত করার সম্ভাবনা নিয়ে কাবুলের সাথে আলোচনা করতে ই”চ্ছুক। এ প্রকল্পে কাবুলের সম্ভাব্য যোগদান যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির জন্য কল্যাণকর প্রমাণিত হতে পারে। আঞ্চলিক বাণিজ্য ও সংযোগ বাড়ানো আফগান সরকারেরও লক্ষ্য। সিপিইসি আফগানিস্তানকে বিদেশী সাহায্যের উপর নির্ভরতা হ্রাসে সাহায্য করতে পারে, পাশাপাশি কাবুল ও ইসলামাবাদের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। ইসলামাবাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র বেইজিং ইসলামাবাদ ও কাবুলকে নিজেদের মধ্যকার সম্পর্ক উন্নয়নের আহবান জানিয়েছে। ইসলামী জঙ্গিবাদ ও পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয় দানের বিষয়কে কেন্দ্র করে গত কয়েক বছর ধরে তাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। ওয়াশিংটন ভিত্তিক উড্রো উইলসন সেন্টার ফর স্কলারস-এ দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া বিষয়ক উর্ধ্বতন সহযোগী মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, সিপিইসিতে আফগানিস্তানের অন্তুর্ভুক্তি আফগানিস্তান-পাকিস্তান সম্পর্কে এক বিরাট আস্থা তৈরির ব্যবস্থা হতে পারে যা কখনোই উষ্ণ ছিল না। আফগানিস্তান-পাকিস্তান সম্পর্ক
আফগানিস্তানে সিপিইসির সম্ভাব্য সম্প্রসারণ এক কঠিন কাজ হবে এ কারণে ২০১৪ সালে আশরাফ গণি প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর পাকিস্তান-আফগানিস্তান সম্পর্ক বৈরি হয়ে ওঠে। উভয় দেশই পরস্পরের সরকারকে বিপর্যস্ত করতে জিহাদিদের সমর্থন করার অভিযুক্ত করেছে।
দীর্ঘ সীমান্ত থাকা দু’ প্রতিবেশি দেশের মধ্যকার সম্পর্কের আরো অবনতি ঘটে যখন গত বছরের আগস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার আফগানিস্তান ও পাকিস্তান নীতি ঘোষণা করেন। ট্রাম্প প্রশাসন হাক্কানি নেটওয়ার্ক ও আফগান তালিবানদের বিরুদ্ধে চ‚ড়ান্ত ভাবে পদক্ষেপ নিতে পাকিস্তানের উপর চাপ সৃষ্টি করে। পাকিস্তান তাদের সমর্থন করে বলে ওয়াশিংটন ও কাবুল মনে করে।
ব্রাসেলস ভিত্তিক সাউথ এশিয়া ডেমোক্র্যাটিক ফোরাম (এসএডিএফ) -এর গবেষণা পরিচালক সিগফ্রিড ও. উলফ মনে করেন, পাকিস্তান-আফগান সম্পর্কের জটিল প্রকৃতি সিপিইসির সম্বব্য সম্প্রসারণে এক বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে। তিনি ডি ডবিøউকে বলেন, ইসলামাবাদ যদি তার নীতির পরিবর্তন করে তাহলেই শুধু সিপিইসির সম্প্রসারণ সম্ভব। কিন্তু এখন পর্যন্ত সে রকম পরিবর্তনের কোনো আভাস মেলেনি।
আঞ্চলিক আদিপত্য
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে চীনের ক্রমবর্ধমান সংশ্লিষ্টতার প্রতি মার্কিন প্রতিক্রিয়া সিপিইসি প্রকল্পের ববিষ্যতর ব্যাপারে আরেক সিদ্ধান্তমূলক ব্যাপার হবে। কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে আফগান অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার যে কোনো চেষ্টাকে যুক্তরাষ্ট্র স্বাগত জানাতে পারে।
কুগেলম্যান বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি একেবারেই দুর্বল ও সংগ্রামশীল কাবুলের অর্থনীতি শক্তিশালি করার পন্থা হিসেবে একে দেখে তাহলে সিপিইসিতে আফগানিস্তানের ভ‚মিকার আনুষ্ঠানিক বিরোধিতা করবে বলে মনে হয় না।
কিন্তু সিগফ্রিডের মত অন্যরা সিপিইসির ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করতে সতর্ক। উলফ বলেন, আমাদের এটা উপেক্ষা করা উচিত হবে না যে সিপিইসি হচ্ছে চীনের ওয়ান রোড ওয়ান বেল্ট প্রকল্পের ফ্ল্যাগশিপ যার লক্ষ্য এক নয়া বিশ^ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, চীন পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে তার অধিকার এবং এ অঞ্চলে তা প্রভাব বিস্তার করতে চায়। সিপিইসির একটি রাজনৈতিক প্রভাবও আছে।
তালিবানের সমর্থন গুরুত্বপূর্ণ
আফগানিস্তানে আফগান তালিবান একটি শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। তারা যদি সিপিইসি প্রকল্পের বিরোধিতা করে তবে চীন আফগানিস্তানে সে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারবে না। এর অর্থ এই দাঁড়ায় যে আফগানিস্তানে চীনা বিনিয়োগের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে বেইজিং ও ইসলামাবাদকে তালিবানের সাথে একটি চুক্তিতে পৌঁছতে হবে। কিন্তু সম্ভাব্য চীন-তালিবান চুক্তিকে কাবুল ও ওয়াশিংটন স্বাগত জানাবে না বলেই ধারণা। এ প্রকল্পের সাথে তালিবানের সম্ভাব্য সম্পৃক্ততা ইসলামী গ্রæপটির জন্য আরো অর্থ আয় এবং আফগানিস্তানের রাজনীতি ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারের স্বীকৃতি এনে দেবে।
উলফ বলেন, সিপিইসিকে আফগানিস্তানে সম্প্রসারিত করার শর্ত হিসেবে তালিবানের সাথে ক্ষমতা ভাগাভাগির কোনো গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি করতে যুক্তরাষ্ট্র ও আফগানিস্তান রাজি হবে বলে আমি মনে করি না।
আঞ্চলিক সহযোগিতা
সিপিইসি চীনের উচ্চাকক্সক্ষী ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড উদ্যোগের অংশ যার মধ্য দিয়ে মধ্য এশিয়ার সাথে বিশে^র অন্যান্য অংশকে সংযুক্ত করাই চীনের লক্ষ্য। সুতরাং চীন সরকারকে অন্যন্য আঞ্চলিক শক্তি যেমন ভারত, ইরান, রাশিয়াকে বোঝাতে হবে যে সিপিইসিতে আফগানিস্তানের সম্ভাব্য অন্তর্ভুক্তি তাদের স্বার্থের ক্ষতি করবে না।
উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় যে ভারত এ আশ^াস চায় যে সিপিইসি পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে তালিবানের শক্তি বৃদ্ধির কারণ হবে না। ইরান ও ভারত আরো নিশ্চয়তা চায় যে এ প্রকল্প চাবাহা বন্দরে তাদের বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত করবে না। চাবাহারে ইরান, ভারত ও আফগানিস্তানের ত্রিপক্ষীয় বিনিয়োগ রয়েছে।
অন্যদিকে রাশিয়া আফগানিস্তান ও মধ্য এশিয়ায় ইসলামিক স্টেটের সাথে সংযোগ থাকা জঙ্গিদের উপস্থিতির ব্যাপারে সতর্ক। তাই মস্কোও সিপিইসিকে জঙ্গি বিরোধী হিসেবে দেখতে চাইবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।