পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর ১২৬টি রুটের বাসের গন্তব্য মিরপুর। এগুলোর শুরু বা শেষ মিরপুরের কালসী, মিরপুর ১০, ১২ বা পল্লবী। আবার মতিঝিলে রয়েছে ১১২টি রুটের বাসের গন্তব্য। মতিঝিল, আরামবাগ, দৈনিক বাংলা, পীরজঙ্গি মাজার, কমলাপুর প্রভৃতি স্থানের নামে ভিন্ন ভিন্ন রুটের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। গুলিস্তানের ক্ষেত্রেও চিত্র একই। গোলাপ শাহ মাজার, গুলিস্তান, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ, ফুলবাড়িয়া ইত্যাদি নামে গুলিস্তানে শেষ হয়েছে ৮৬টি রুট। একই স্থানে এভাবে অসংখ্য বাসের রুট শুরু বা শেষ হওয়া বিভিন্ন বাস কোম্পানির মধ্যে তৈরি করছে অসুস্থ প্রতিযোগিতা। এতে করে বাসগুলোর সক্ষমতার পূর্ণ ব্যবহারও হচ্ছে না। যাত্রার সময় বিলম্বের পাশাপাশি যাত্রীদেরকে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। যদিও বিশৃঙ্খল এ বাস ব্যবস্থার ওপরই রাজধানীবাসীর দৈনন্দিন যাতায়াতের (ট্রিপ) প্রায় অর্ধেক নির্ভরশীল।
রাজধানীর পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বাস ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)। আধুনিক ব্যবস্থাপনায় উন্নত মানের বাস পরিচালনার লক্ষ্যে এরই মধ্যে দুটি পাইলট প্রকল্প নিয়েছে সংস্থাটি। যা পরবর্তীতে স¤প্রসারণ হবে রাজধানীজুড়ে। এ উদ্যোগ সফল হলে ভবিষ্যতে ঢাকার বাস ব্যবস্থাপনা বদলে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। জানা গেছে, ঢাকা শহরের বিদ্যমান বাস পরিবহন ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন ও উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ‘ঢাকা বাস নেটওয়ার্ক স্টাডি’ এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এ স্টাডির সুপারিশের ভিত্তিতেই ঢাকার বাস ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। ডিটিসিএ-এর হিসাব অনুযায়ী, ঢাকা শহরে বর্তমানে বিদ্যমান রুটের সংখ্যা ২৮৯। নতুন ব্যবস্থাপনায় রুটের সংখ্যা কমিয়ে ৯০-এ নামিয়ে আনা হবে। এসব রুটে বাসগুলো পরিচালিত হবে ১০টি প্যাকেজের আওতায়। সর্বোচ্চ ১০টি কোম্পানি বা অপারেটরের অধীনে বাসগুলো পরিচালিত হবে। এসব কোম্পানি পর্যবেক্ষণের জন্য আলাদা সরকারি কমিটি গঠনেরও সুপারিশ করেছে ডিটিসিএ। ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) ও ঢাকা বাস র্যাপিড ট্রানজিটের (বিআরটি) আদলে এ কোম্পানি গঠিত হতে পারে। রাজধানীর বাস ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়নে এরই মধ্যে দুটি পাইলট প্রকল্পের বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে ডিটিসিএ পরিচালনা পর্ষদ। পাইলট প্রকল্পের প্রস্তাবিত করিডোরগুলো হলো, বিমানবন্দর থেকে প্রগতি সরণি হয়ে সায়েদাবাদ ও কুড়িল-পূর্বাচল। বিমানবন্দর-সায়েদাবাদ রুটের দৈর্ঘ্য ১৭ কিলোমিটার। এতে ১১টি স্টেশন রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। সম্ভাব্য স্টেশনগুলো হলো, বিমানবন্দর, খিলক্ষেত, কুড়িল, নদ্দা, নতুন বাজার, বাড্ডা, রামপুরা, মালিবাগ, বাসাবো, কমলাপুর ও সায়েদাবাদ।
অন্যদিকে, কুড়িল-পূর্বাচলে ১০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে প্রস্তাবিত রুটে স্টেশন থাকবে পাঁচটি। এগুলো হলো, কুড়িল, বসুন্ধরা, মাস্তুল, ইউসুফগঞ্জ ও পূর্বাচল ২ নম্বর সেক্টর। এ দুই রুটে চলবে ১০৫টি আর্টিকুলেটেড বাস। এসব বাস পরিচালনা করবে দুটি বাস অপারেটর গ্রæপ। আর যেসব অপারেটর এ ব্যবস্থায় আসবে না, তাদের অন্য রুটে বাস পরিচালনার অনুমতি বা পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
জানা গেছে, এ পদ্ধতিতে কোম্পানির সঙ্গে অপারেটরগুলো চুক্তিবদ্ধ থাকবে। চুক্তিতে বাসের সেবার মান, ভাড়া ও কিলোমিটারপ্রতি অপারেটরদের নির্ধারিত পাওনার বিষয় উল্লেখ থাকবে। এতে করে রাস্তায় কোনো অসম প্রতিযোগিতা তৈরি হবে না। ভাড়া আদায় হবে র্যাপিড পাসের মাধ্যমে। ডিটিসিএ-এর কর্মকর্তারা জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাস ব্যবস্থাপনায় এ ধরনের আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। নেটওয়ার্ক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকে আলাদা বাস নেটওয়ার্ক ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি। এক্ষেত্রে ভারতের দিল্লি, দক্ষিণ কোরিয়ার সিউল, সিঙ্গাপুর ও চিলির নাম উল্লেখ করেন তারা।
সূত্র জানায়, বাস নেটওয়ার্ক ও ব্যবস্থাপনা পুনর্গঠনের আওতায় বাসবহর আধুনিকীকরণ ও সরকারি কোম্পানির মাধ্যমে ভাড়া আদায়ের সুপারিশ করেছে ডিটিসিএ। পাশাপাশি আলাদা কোম্পানি গঠনেরও সুপারিশ করা হয়েছে। এ কোম্পানি বাস অপারেটরদের সঙ্গে চুক্তি, বাসসেবার গতিপথ নির্ধারণ, ভাড়া আদায়সহ বিভিন্ন কাজ করবে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) হিসাব মতে, গত ছয় বছরে ঢাকায় বাস-মিনিবাস নেমেছে প্রায় সাড়ে ১১ হাজার। গেল বছরের মে পর্যন্ত এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৩ হাজার। এর মধ্যে ২০১৬ সালে সর্বোচ্চ তিন হাজার ৬৪৩টি বাস-মিনিবাস নেমেছে রাজধানীতে। এছাড়া ২০১৫ সালে দুই হাজার ৩২৪টি, ২০১৪ সালে এক হাজার ৪৭৩টি, ২০১৩ সালে এক হাজার ৫৪টি, ২০১২ সালে এক হাজার ৩৪৩ ও ২০১১ সালে এক হাজার ৬৩৭টি বাস নেমেছে। এতো বাস নামলেও জনগণের ভোগান্তি কমেনি। বরং বাসগুলো রাস্তায় চলতে গিয়ে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি করে চলে চলেছে রাজধানীর প্রতিটি এলাকায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, শৃঙ্খলা ফেরাতে বাসের রুট ব্যবস্থাপনা পরিবর্তনের বিকল্প নেই। রাজনৈতিক বিবেচনায় বাসের রুট অনুমোদনের পাশাপাশি একই রুটে মাত্রাতিরিক্ত বাসের কারনে বিশৃঙ্খলা লেগেই আছে। এতে করে যাত্রীসেবার মান না বেড়ে উল্টো হয়রানি বেড়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।